Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৮ বছরের শিশু ধর্ষণ, ৫ হাজারে ঘটনা ধামাচাপা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ জুলাই, ২০২২, ১০:০১ পিএম

কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় সাদিয়া আক্তার নামে ৮ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর মাত্র ৫ হাজার টাকায় সেই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১১ জুলাই) উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের গজারিয়া ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, গত ৬ জুলাই লালমাই উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের গজারিয়া ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে দিনমজুর মোস্তফার ৮ বছরের মেয়ে সাদিয়াকে বাড়ির পাশের আখ ক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ করে একই বাড়ির ফজর আলীর ছেলে আব্দুল মতিন (৩৫)।

পরে ভুক্তভোগী শিশুটি তার পরিবারে ধর্ষণের বিষয়টি জানালে স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মজুমদারের কাছে বিচার চান সাদিয়ার বাবা মোস্তফা। ঈদের পরদিন সোমবার (১১ জুলাই) সকালে ওই গ্রামে সালিস বসে। গ্রামের সর্দার ফিরোজ আহমেদ ভূঁইয়া, ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মজুমদার এবং আরেক সর্দার বাবুল মজুমদার ওই সালিসের রায় দেন। সালিসে ভুক্তভোগী সাদিয়ার সাক্ষী এবং ধর্ষক মতিনের স্বীকারোক্তিতে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ধর্ষক আব্দুল মতিনের ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন সালিসদাররা। এ ঘটনায় সালিসদারেরা মামলা কিংবা কোনো অভিযোগ দিতে নিষেধ করেন ভুক্তভোগীর পরিবারকে। পরে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

বুধবার (১৩ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। সালিসদার ফিরোজ আহমেদ ভূঁইয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গ্রামের মান-সম্মানের কথা ভেবে বিষয়টি আমরা সামাজিকভাবে মীমাংসা করেছি। অভিযুক্ত মতিনের ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সে আর কখনো এমনটা করবে না বলে সালিসে জানায়। তবে সাংবাদিক আসার খবরে অভিযুক্ত মতিন গা ঢাকা দিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন। এ সময় ওই গ্রামের কয়েকজন লোক এ বিষয়ে সংবাদ পরিবেশনে ইউপি সদস্যের অনুমতির জন্য বলেন ঢাকা পোস্টকে।

পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মজুমদারের বাড়িতে গেলে তাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে তিনি এ বিষয়ে কথা বলবেন না বলে জানান। পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুল রুবাই বলেন, এ বিষয়টি আমাকে কেউই জানায়নি। আপনাদের (সাংবাদিকদের) কাছ থেকে প্রথম শুনলাম। যদি এমনটা ঘটে থাকে, তবে সালিসদার এবং ইউপি সদস্য মারাত্মক অন্যায় করেছেন। আমি খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে জড়িতদের আইনের হাতে সোপর্দ করব।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আইয়ুব বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফোরকান এলাহী অনুপম আজ সন্ধ্যায় বলেন, কথাটি শুনে খুবই মর্মাহত হলাম।অফিসিয়ালি অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ