পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইবতেদায়ীসহ সকল বেসরকারি শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণের জোরালো দাবি
দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক ও বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেছেন, সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়রোধে, সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং সমাজ গঠন ও জনমত সৃষ্টিতে এ দেশের আলেম- ওলামারা হচ্ছেন সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। আলেম সমাজ এ দেশে বিরাট অংশ নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বব্যাপী আলেম-ওলামাদের গুরুত্ব বাড়ছে। ওয়াশিংটন ও দিল্লিতেও আজ তাদের ডাকাডাকি হচ্ছে। ইনকিলাব সম্পাদক আগামীদিনের বাংলাদেশে সামাজিক সংগঠনের আরো প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষক ও আলেম-ওলামাদের সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণের দাবি পূরণ হবে ইনশাআল্লাহ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই দাবি পূরণ করবেন। ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের ব্যাপারে সরকার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর অবদান ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তার জন্য দোয়া করছি। তিনি বলেন, জমিয়াতুল মোদার্রেছীন সারাদেশে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে সভা সমাবেশ করেছে। গতকাল তিনি যশোরে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের উদ্যোগে ‘মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অবদান’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা এবং শ্রেষ্ঠ শৃঙ্খলা কর্মীদের কৃতিত্বের সনদ ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন। যশোর জেলা জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর এ কে এম ছায়েফ উল্লাহ ও জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শাব্বীর আহম্মদ মোমতাজী। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সাংগঠনিক সম্পাদক ডক্টর মাওলানা ইদ্রিস খান, মাওলানা আমানত উল্লাহ, মাওলানা আব্দুল অদুদ। কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। যশোর মনিহার কমিউনিটি সেন্টারে জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের অনুষ্ঠানে জেলার মাদ্রাসা প্রধানরা ছাড়াও বিভিন্ন স্তরের শিক্ষকবৃন্দ স্বতঃস্ফূর্তভাবে হাজির হন। সেন্টারটি কানায় কানায় পূর্ণ হওয়া ছাড়াও আশপাশের স্পেস ও মূল সড়কে ছিল মাদ্রাসা শিক্ষকদের উপচেপড়া ভিড়। দূর-দূরান্ত থেকে তারা ছুটে এসেছিলেন সম্মানিত অতিথিদের বক্তব্য শোনার জন্য। মাদ্রাসা শিক্ষকদের মিলনমেলায় পরিণত হয় অনুষ্ঠানস্থল। প্রত্যেকের চোখেমুখে ছিল প্রত্যাশা পূরণের উজ্জ্বল চিহ্ন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানে মাদ্রাসা শিক্ষার মানোন্নয়ন, একে একে সমস্যা সমাধান ও ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনসহ বহুমুখী পদক্ষেপ ও বাস্তবায়নে শিক্ষকগণ যারপরনাই খুশি আনন্দিত। উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন তারা সরকার, প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী এবং জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি ও মহাসচিবের। অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মাধ্যমে মাদ্রাসা শিক্ষকরা নতুন যুগের ভোরে পা দেয়ার সুযোগ পাওয়ায় খুশি অনুষ্ঠানে উপস্থিতরা। তারা জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আলহাজ মাওলানা এম এ মান্নান (রহ:) সাহেবের কথা স্মরণ করেন। তিনি সংগঠন প্রতিষ্ঠা না করলে মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ও প্রত্যাশা পূরণের বিষয়টি থাকত শত যোজন দূরে।
অনুষ্ঠানে এ এম এম বাহাউদ্দীন আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দূরদর্শী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। মাদ্রাসা শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া পূরণ, বিশেষ করে শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণ ও বৈষম্য দূর করার বিষয় অবশ্যই করবেন। তাকে দেশীয় আন্তর্জাতিক রাজনীতিসহ অনেক ভেবেচিন্তে কাজ করতে হয়। তাই সময় দিতে হয়। ইতোমধ্যে আমরা লিখিত দাবি পেশ করার প্রস্তুতি নিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাদ্রাসা শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবন করেন বলেই সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি নীতি-নৈতিকতা বৃদ্ধিতে ধর্মীয় শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, দক্ষ জনবল গড়ে তোলার ব্যাপারে আপনারা যতœবান হোন। সঙ্কট থাকবে না। যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারলে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের কেউ অবজ্ঞা করতে পারবে না। আর অবজ্ঞা করলে সহ্য করা হবে না। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী, মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কোনো ঘটনার সাথে কোনো আলেম-ওলামা জড়িত এর প্রমাণ নেই। তিনি সাম্প্রতিক সময়ে নাসিরনগর, রংপুর ও গাইবান্ধার দুঃখজনক ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, একই অন্যায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের ক্ষেত্রে ঘটলেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা অনুপস্থিত।
মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর এ কে এম ছায়েফ উল্লাহ বলেন, সরকার মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা নিয়েছে। সৃষ্টি করেছে গতিশীলতা। ১১৩০টি মাদ্রাসার ভবন নির্মাণ করেছে। আরো ২ হাজার নির্মাণ হবে। ইবতেদায়ী পর্যায়ে বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা হয়েছে। মাদ্রাসার উন্নয়নে কারিকুলাম প্রণয়নসহ যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদার ও মাদ্রাসা শিক্ষাবান্ধব। ’৭২ সালে বঙ্গবন্ধু এর সূচনা করেছিলেন।
জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শাব্বীর আহম্মদ মোমতাজী বলেন, জমিয়াতুল মোদার্রেছীন একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। একে একে মাদ্রাসা শিক্ষকদের দাবি পূরণ হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী অত্যন্ত আন্তরিক। ইবতেদায়ীসহ সকল বেসরকারি শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণের দাবি পূরণে সর্বতো চেষ্টা চলছে। সব দাবি পূরণ হবে ইনশাআল্লাহ। জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি এ এম এম বাহাউদ্দীন ব্যক্তিগত তহবিল থেকে কোটি টাকা দিয়েছেন মাদ্রাসা শিক্ষকদের কল্যাণের জন্য। তিনি মাদ্রাসা শিক্ষকদের মাদ্রাসায় ছাত্র-ছাত্রী বৃদ্ধির ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখার ব্যাপারে বিশেষ আহ্বান রাখেন। সরকার বেতন ডাবল করেছে। আপনাদের দায়িত্বও বাড়াতে হবে। আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে মাদ্রাসা শিক্ষা ও শিক্ষকদের ব্যাপারে সরকারের সাথে সবসময় দেন-দরবার করছি। সব দাবির ব্যাপারে আমরা যতœবান। তিনি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যশোরের বিরাট মানববন্ধনের প্রশংসা করেন। ওই দিন মানববন্ধনের শৃঙ্খলা রক্ষাকারীদের পুরস্কৃত করায় যশোর জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি মাওলানা নূরুল ইসলামকে ধন্যবাদ জানান সংগঠনের মহাসচিব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।