Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ধোনী’র হত্যাকান্ড’

দাফন সম্পন্ন মামলা হয়নি

যশোর ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৩ জুলাই, ২০২২, ৬:৪৪ পিএম

যশোরে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যাকা-ের শিকার জেলা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি বদিউজ্জামান ধোনী’র দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার (১৩ জুলাই) দুপুরে শহরের বেজপাড়া কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এদিকে, হত্যাকা-ের ঘটনায় এখনও কোনো মামলা দায়ের হয়নি। পুলিশও জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি। তবে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে। পরিচিত লোকজনই তাকে কুপিয়ে খুন করেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে শহরের শংকরপুর চোপদারপাড়া আকবরের মোড়ের কাছে নিজ বাড়ির সামনে জেলা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি বদিউজ্জামান ধোনীকে (৫২) কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্ত্বরা।

নিহতের শ্যালক তপু রহমান জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে সামনের একটি ফার্মেসিতে বসেছিলেন বদিউজ্জামান ধোনী। এ সময় স্থানীয় সন্ত্রাসী রায়হান, রহিম, আকাশসহ ৪/৫ জন সন্ত্রাসী তার ওপরে অতর্কিত হামলা চালায়। দুর্বৃত্ত্বরা তাকে উপর্যুপরি কুপিয়ে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান।
তার দাবি, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শামীম আহমেদ মানুয়া নামে এক ব্যক্তি তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে এই হত্যাকা- ঘটিয়েছে। মানুয়াকে ধরতে পারলেই এই হত্যার রহস্য উদ্বঘাটন হবে বলে তিনি মনে করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এলাকায় সজ্জন হিসেবে পরিচিত থাকলেও যুবদল নেতা বদিউজ্জামান ধোনীর বিরুদ্ধে হত্যাসহ সন্ত্রাসী বিরোধী ও বিস্ফোরক আইনে ১২টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে যুবলীগ কর্মী ইয়াসিন আরাফাত হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন ধোনী। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বেজপাড়া ব্রাদার্স ক্লাবের সামনে হত্যাকা-ের শিকার হন ইয়াসিন আরাফাত। এই মামলায় মাসখানেক আগে ধোনী জেল থেকে বের হয়েছেন। স্থানীয়ভাবে যে মানুয়ার সাথে ধোনীর বিরোধ ছিল, তিনি এই ইয়াসিন আরাফাতের শ্বশুর। ধোনী হত্যাকা-ের প্রাথমিক তদন্তে রায়হান নামে এক হামলাকারীকে সনাক্ত করেছে পুলিশ। তাকে আটক করতে পারলে হত্যাকা-ের জট খুলবে বলে ধারণা পুলিশের।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে রায়হান নামে এক হামলাকারীকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাকে আটক করতে পারলেই হত্যাকা-ের জট খুলবে।
হত্যাকা-ের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিহতের স্বজনদের সাথে কথা বলেছেন র‌্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের সদস্যরা। এ বিষয়ে র‌্যাব-৬ যশোরের কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার নাজিউর রহমান জানান, তিনি নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। র‌্যাবের পক্ষ থেকে ছায়া তদন্ত চলছে।
যশোর পুলিশের মুখপাত্র গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিদর্শক রূপন কুমার সরকার জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত হত্যাকা-ের ঘটনায় কোনো মামলা দায়ের হয়নি। তবে জড়িতদের আটকের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার বিকেলে যুবদল নেতা ধোনীর মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে স্বজনেরা আসার পর বুধবার বেলা ১১টার দিকে শংকরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বেজপাড়া কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।
জানাজায় অংশগ্রহণ করেন যুবদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন হাসান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের আহবায়ক শফিকুল ইসলা মিল্টন, সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার, বিএনপি’র খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
বদিউজ্জামান ধোনী হত্যাকা- প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, বদিউজ্জামান ধোনী একজন নির্ভেজাল রাজনৈতিক নেতা ছিলেন। তার সঙ্গে কারোর কোনো বিরোধ ছিল না। এভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে তাকে হত্যার বিষয়টি আমরা মেনে নিতে পারছি না। এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক তাদের পুলিশ শনাক্ত করে বিচারের মুখোমুখি করবে এটাই প্রত্যাশা করি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ