Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাবির আবাসিক হলে শিবিরের মাংস বিতরণ, প্রশাসনের জরুরি বৈঠক

রাবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১২ জুলাই, ২০২২, ৯:৪৯ পিএম

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলগুলোতে মাংস বিতরণ করেছে ইসলামী ছাত্র শিবির। বিষয়টি জানাজানি পর নড়েচড়ে বসেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গার্ডদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১২ জুলাই) সকালে ১১ হলের ছেলেদের নিকট এই মাংস দেওয়া হয়। এসময় মাংসের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের সভাপতির পক্ষ থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। এ ঘটনা জানা জানি হলে জরুরি বৈঠক করে মাংসগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় রাখার সিদ্ধান্ত নেন প্রাধ্যক্ষ পরিষদ।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর ঈদে আবাসিক হলগুলো বন্ধ থাকলেও এবার খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এবার ক্যাম্পাসে ইদ পালন করে ২২৬ শিক্ষার্থী। তারা আবাসিক হলগুলোতে অবস্থান করছেন। মঙ্গলবার সকালে কয়েকজন শিবির কর্মী এসে ছেলেদের ১১টি হলের গার্ডদের নিকট ৩-৪ থলে করে মাংস দিয়ে যায়। মাংসের থলির সাথে একটি চিঠি ছিল। পরবর্তীতে চিঠি খুলে শিবিরের বিষয়টি জানার পর অনেক হলের গার্ড মাংস নিতে আপত্তি জানান। কেউবা আবার মাংস শিক্ষার্থীদের না দিয়ে বাইরের মানুষদের দিয়ে দেন।

এদিকে আবাসিক হলে শিবিরের মাংস বিতরণের বিষয়টি জানাজানি হলে জরুরি বৈঠকে বসেন প্রাধ্যক্ষ পরিষদ। বেলা সাড়ে এগারটায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে হলের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও যেসব গার্ড মাংস রিসিভ করেছেন তাদের বিষয়ে আলোচনা হয়। সভার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি জানার পর জরুরি বৈঠকে বসি। এতে হলের নিরাপত্তা জোরদারসহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে সিদ্ধান্তের বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে বৈঠকে উপস্থিত এক প্রাধ্যক্ষ বলেন, শুধু ছেলেদের হলগুলোতে শিবির মাংস বিতরণ করেছে। তারা হলের গার্ডের কাছে মাংস দিয়েছিল। এর মধ্যে একটি হলের গার্ড মাংস নেয়নি। আবার একটি হলের গার্ড প্রাধ্যক্ষকে না জানিয়ে মাংস ভাগ করে দিয়েছিল। এসব বিষয় আলোচনা হয়। পরবর্তীতে মাংস সংগ্রহ করে ক্যাফেটেরিয়ার ফ্রীজে সংরক্ষণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, মিটিংয়ে হলগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ফেরদৌসী মহলকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল প্রশানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি আছে, হল কর্তৃপক্ষ রয়েছে। তারা থাকা সত্ত্বেও কিভাবে শিবির মাংস বিতরণ করে বোধগম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত ছিল মনিটরিং আরও জোরদার করা।

এই প্রতিবেদককে ইমেইলের মাধ্যমে পাঠানো চিঠিতে শিবির সভাপতি রাবিগ শাহরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে মাংস পাঠানোর বিষয়ে বলেন, এবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঈদুল আযহার ছুটিতে আবাসিক হলগুলো খোলা রেখেছে। আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি হল প্রশাসন এসব শিক্ষার্থীদের জন্য কুরবানির গোশত ও খাবার পরিবেশন করবে। কিন্তু রাবি প্রশাসন তাদের কোনও ধরণের খাবার পরিবেশন না করে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। এরপর ছাত্র শিবির হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিটি হলে ৬০ কেজি করে মাংস পরিবেশন করেছে। আশাকরি এসব শিক্ষার্থীরা এ উপহার আনন্দের সহিত গ্রহণ করবে।

এবিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, আমি সকাল নয়টার দিকে বিষয়টি শুনেছি। তারা চুরি করে এসে মাংস দিয়ে যাওয়ায় আমাদের সন্দেহ হয়েছে। কারা এর সাথে জড়িত সেটি বের করতে আমরা ক্যাম্পাসে কর্মরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ