Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুমিল্লায় খুনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ক্যান্সাররোগী আসামি আর হামলাকারী হলেন স্বাক্ষী

কুমিল্লা থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ জুলাই, ২০২২, ৫:৫৮ পিএম

কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মেহেদী হাসান শান্ত (২৫) নামের এক যুবক খুনের ঘটনা ভিন্ন খাতে মোড় নিয়েছে। ঈদুল আজহার আগের দিন প্রকাশ্যে সংঘটিত এ খুনের ঘটনায় ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষীকে করা হয়েছে মামলার আসামি। আর যার ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছে সেই হামলাকারীকে করা হয়েছে মামলার সাক্ষী। খুনের মামলার বর্ণিত এজাহার ঘিরে গোটা দেবিদ্বারে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।

শনিবার বিকেল ৪টায় দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের এম, আলী এন্ড এ.বারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নুরপুর গ্রামের সরকার বাড়ির আমেরিকান প্রবাসী সাজিব ও হবির বাড়ির আল আমিনের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সাজিব এলোপাথাড়ি ছুরি দিয়ে আঘাত করতে থাকে। এ সময় মেহেদী হাসান শান্তসহ ৫ জন আহত হয়। শান্তকে হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

সাজিব ও নিহত শান্ত একই বাড়ির। ঘটনার সময় সাজিবকে শান্ত থামানোর চেষ্টা করলে তার ছুরিকাঘাতে শান্ত নিহত হয়। নিহত মেহেদী হাসান শান্ত ফতেহাবাদ ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের সরকার বাড়ির জাকির হোসেনের ছেলে। আহতরা হলেন, নুরপুর গ্রামের মো: আশরাফুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম, রাসেল মিয়া ও ছিকাব আলম। তারা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এদিকে এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাদ্দাম হোসেন নামে এক যুবক ঘটনার বিষয়ে স্বাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করলে তাকে ঈদের দিন ঈদের দিন থানায় ডেকে নিয়ে হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামি করা হয়। ঈদের দিনে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।

অপরদিকে প্রকাশ্যে ছোরা নিয়ে যে হামলা করেছে, আমেরিকান প্রবাসী সেই সাজিবকে শান্ত হত্যা মামলার স্বাক্ষী করা হয়েছে। এ নিয়ে গোটা দেবিদ্বারে তোলপাড় চলছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাদ্দাম হোসেনের সাদ্দাম হোসেনের ভাই জহিরুল ইসলাম ও জাহিদ হাসান জানান, আমার ছোট ভাই সাদ্দাম হোসেন ২ বছর ধরে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। তাকে ১১ বার কেমোথেরাপি দেয়া হয়েছে। আগামী ১৩ জুলাই ঢাকা স্কয়ার হাসপাতালে আবার কেমোথেরাপি দেয়ার তারিখ নির্ধারিত রয়েছে। সে হামলার সময় দাঁড়িয়ে ঘটনাটি দেখেছে এবং এ ব্যাপারে স্বাক্ষী দিতে চেয়েছিল। পুলিশ তাকে স্বাক্ষী হিসেবে ডেকে নিয়ে ২ নম্বর আসামি করে ঈদের দিন জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। পুলিশ যাচাই-বাছাই করলোনা ঘটনাটির। হামলাকারী আর নিহতের পরিবার এক বাড়ির। তারা নিজেদের মধ্যে রফাদফা করে মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করেছে। এই মামলার সুষ্ঠু তদন্ত চাই।পুলিশের নিরপেক্ষ ভূমিকা প্রত্যাশা করছি।

দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর জানান, বাদিপক্ষ যদি সাজিবকে আসামি না করে, তাহলে আমাদের কিছু করার নেই। তারা ক্যান্সার রোগি সাদ্দামকে আসামি করেছে। আমরা তদন্ত করছি। আর মোটা অংকের টাকা রফাদফার বিষয়ে আমরা কিছু জানি না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ