Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে খুলনায় কোরবানীর হাট, ছোট গরুতেই তুষ্টি ক্রেতাদের

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৮ জুলাই, ২০২২, ৫:২৪ পিএম

শেষ মুহুর্তে খুলনায় কোরবানির পশুর হাট জমে উঠেছে। বেড়েছে পশু আমদানি সংখ্যা ও হাসিল আদায়ের পরিমাণ। তবে দাম বেশী থাকায় অনেক ক্রেতাকেই খালি হাতে ফিরতে দেখা যাচ্ছে। বড় আকারে গরু ক্রেতারা দরদাম করছেন ঠিকই কিন্তু সেভাবে বিক্রি হচ্ছে না। চাহিদা রয়েছে মাঝারী ও ছোট আকার গরুর। নগরীর জোড়াগেটে সিটি করপোরেশনের হাট, ফুলবাড়িগেট যোগিপোল এলাকার হাট ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
খুলনা মহানগরীর জোড়াগেটে গত ৩ জুলাই জোড়াগেটে সিটি করপোরেশনের পশুর হাট উদ্বোধন করা হয়। প্রথম তিনদিন বিক্রি তেমন না হলেও শুক্রবার বেড়েছে বিক্রির পরিমাণ। বুধবার রাত ১২ টার পর থেকে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০ টা পর্যন্ত ৩৩৩ টি পশু বিক্রি হয়। এরমধ্যে ২১৮ টি গরু ও ১১৫ টি ছাগল বিক্রি হয়েছে। পশুর হাট থেকে হাসিল আদায় হয়েছে ৯ লাখ ৭২ হাজার ৮৪৫ টাকা। হাটে খুলনা মহানগরী ও জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে গরু এসেছে। পাশাপাশি বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ ও সাতক্ষীরা থেকেও গরু এসেছে। ক্রেতা সমাগমও প্রচুর। ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তাদের আগ্রহ ৮০ হাজার থেকে সোয়া লাখ টাকা দামের গরুতে। হাটে যে ২৫/৩০ মনের বিশালাকার ১৪ থেকে ১৫ টি গরু উঠেছে, ক্রেতারা সেগুলোর দাম করলেও বিক্রি হচ্ছে না। মহানগরীর নিরালা এলাকার সাব্বির হোসেনের আনা ২৫ মন ওজনের গরু ক্রেতারা ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত বলেছেন। বিক্রেতা ১১ লাখ টাকা হলে বিক্রি করবেন। একই ভাবে আরেকটি ২৮ মন ওজনের গরু ৭ লাখ টাকা দাম উঠেছে। বিক্রেতা আমিরুল খন্দকার আশা করছেন ঈদের আগের দিন এটি ১০ লাখ টাকায় বিক্রি হবে।
নগরীর চানমারী বাজার আহমদীয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ফারুখ আহমদ বলেন, আছরের নামাজ পড়ে গরু কিনতে হাটে এসেছি। দর দাম না হওয়ায় অনেক্ষণ ঘুরেছি। অবশেষে একটি গরুর দেখা মিললেও মালিক ৬৫ হাজার টাকা চেয়েছেন। কিন্তু অনেক কষাকষির পর ৫২ হাজার টাকায় গরুটি আমাকে দিয়েছেন। সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার দু’বন্ধু মো: হাফিজুর রহমান ও মো: জাহাঙ্গীর গরু কিনতে হাটে এসেছেন । তিন ঘন্টা ঘুরেও নিজের বাজেটের মধ্যে গরু কিনতে পারেননি। দাম বেশী চাচ্ছেন খামারীরা।
বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা আফজাল হোসেন জানান, সকাল থেকে গরু কিনবেন বলে হাটে ঘুরছেন। কিন্তু ব্যাটে বলে মেলাতে পারেননি। পরদিন আবার হাটে এসে ভাব বুঝে গরু কিনবেন। গরুর প্রকৃত মালিকদের কাছ থেকে কম দামে কিনে দালালরা এখানে বেশী দরে বিক্রি করছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। দালালদের হাতে ব্যবসা চলে যাওয়ায় পশুর দাম আকাশচুম্বী হয়েছে।
কথা হয় গরুর ব্যবসায়ী রাজা মিয়ার সাথে। তিনি আজ শুক্রবার সকালে ট্রলারে ২৪ টি গরু খুলনার জোড়াগেট পশুর হাটে এনেছেন। দুপুর পর্যন্ত তার ৫ টি গরু বিক্রি হয়েছে। পশুর দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষসহ সবকিছুর দাম বেড়েছে। বেড়েছে গো খাদ্যের দাম। পরিবহন খরচও তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। তাই বাড়তি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে তাকে।
জোড়াগেট পশুর হাটের আহবায়ক ও ২১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: শামসুজ্জামান মিয়া স্বপন বলেন, গত দু’দিনের তুলনায় এখানে পশুর আমদানি বেশী হয়েছে। হাট আরও জমে উঠবে। দাম গেল বারের তুলনায় বেশী। কারণ হিসেবে তিনি জানান, সব জিনিষের দাম বেড়েছে। তারপরও পশু বিক্রির সংখ্যা কম নয়। গত দু’দিনের তুলনায় আজ বিক্রি বেড়েছে। বেড়েছে হাসিল আদায়ের পরিমাণও। হাট ঈদের দিন সকাল ৮ টা পর্যন্ত চলবে।
এদিকে, নগরীর ফুলবাড়িগেট যোগিপোল এলাকায় গরুর হাটে প্রচুর ক্রেতা সমাগম দেখা গেছে। এ হাটে মাঝারী আকারে গরুর সংখ্যা বেশি তাই বিক্রিও বেশি। হাটের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ বাবু জানান, ৮০ হাজার থেকে সোয়া লাখ টাকার গরুর চাহিদা এবার খুব বেশি। দু লাখ তিন লাখ টাকা দামের গরুও বিক্রি হচ্ছে। একক ভাবে যারা কোরবানি করছেন, তারা ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে এই হাটে গরু কিনছেন। হাটের পরিবেশ খুব ভাল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবার দূর দূরান্ত থেকে নির্বিঘ্নে হাটে গরু আসছে। কোথাও চাঁদাবাজি বা এ ধরণের ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ