বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
প্রতি বছর ঈদুল ফিতর এবং ঈদু আজহাসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসের ছুটিতে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত নগরী কক্সবাজারে বেড়াতে আসতে হোটেল মোটেলে অগ্রিম বুকিংয়ের হিড়িক পড়ত। অনেক সময় অগ্রিম বুকিংয়েও মিলতনা হোটেল কক্ষ। কিন্তু এবারের ঈদুল আজহার ছুটিতে সেই চিত্র একেবারে উল্টো বলে জানা গেছে। এবার অগ্রিম হোটেলে-মোটেল বুকিংয়ে দেখা দিয়েছে মারাত্মক বিপর্যয়। ঈদুল আজহার মাত্র একদিন বাকি। এখনো সর্বসাকুল্যে ২০ শতাংশ হোটেল-মোটেল কক্ষ বুকিং হয়নি বলে জানা গেছে। হোটেল-মোটেল সংশ্লিষ্টরা এই তথ্য জানিয়েছেন।
ঈদুল আজহার ছুটিতে হোটেল মোটেল বুকিংয়ে এ বিপর্যয় হোটেল-মোটেল ও গেস্টহাউস মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ভাবিয়ে তুলেছে। এমন বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধান করতে কাজ করেছেন হোটেল মোটেল ও গেস্টহাউস মালিক সমিতি। বৃহস্পতিবার সকালে এক জরুরী বৈঠক করেন সমিতির নেতারা। বৈঠকে সম্প্রতি দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সংঘটিত বন্যা এবং পদ্মা সেতু খুলে দেয়ায় পর্যটকদের কুয়াকাটামুখী হওয়া এবং কক্সবাজার শহরের অসমাপ্ত সড়ক মেরামত কার্যক্রমকে চিহ্নিত করেছেন তারা। তবে এসব কারণে এতটা বিপর্যয় হতে পারে না বলেও মনে করছেন নেতৃবৃন্দ। আরো গভীরতর কারণ অনুসন্ধানে দ্বিতীয় বৈঠকে বসবে বলে জানিয়েছেন হোটেল মোটেল নেতারা।
হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানিয়েছেন, বিগত বছরগুলোতে ঈদুল আজহার এক সপ্তাহ আগে কক্সাবাজারের চার শতাধিক হোটেল-মোটেল ও গেস্টহাউসের প্রায় শতভাগ কক্ষ বুকড হয়ে যেত। এমনকি কটেজগুলোতেও বুকিংয়ের হিড়িক পড়ত। কিন্তু এবারের চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো।
তিনি জানান, ঈদের আর মাত্র এক দুদিন বাকী। কিন্তু বহু হোটেলে কোনো কক্ষ বুকিং হয়নি। যেগুলোতে হয়েছে সেখানে ৩০ শতাংশের নিচে। সর্বসাকুল্যে ২০ শতাংশও হবে না। স্মরণকালে এমন বিপর্যয়ের চিত্র দেখেনি কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসায়ীরা। সরেজমিন অনুসন্ধানে বিভিন্ন হোটেল ঘুরেও এই তথ্যের সত্যা দেখা গেছে।
কলাতলীর প্রধান সড়ক লাগোয়া 'স্বপ্নালয় স্টুডিও এ্যাপার্টমেন্টে'র ইনচার্জ কুতুব উদ্দীন জানান, তাদের হোটেলে ৬০ টি কক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১৫টি অগ্রিম বুকিং হয়েছে। সুপরিচিত হোটেলগুলোতে ১০ থেকে ২০ পর্যন্ত কক্ষ বুকিং হয়েছে। কিন্তু অনেক হোটেল শূন্য বুকিংয়ে রয়েছে। হোটেল 'আইল্যান্ডিয়া'র ম্যানেজিং ডিরেক্টর নূরুল পাশা জানিয়েছেন, তাদের হোটেলে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত বুকিং ছিল শুন্য। একই কথা জানিয়েছে 'গ্র্যান্ড সেন্ডির ম্যানেজিং ডিরেক্টর আব্দুর রহমান।
অগ্রিম হোটেল বুকিংয়ের বিপর্যয়ের বিষয়টি এখন কক্সবাজারের পর্যটন অঙ্গনে বেশ আলোচনা শুধু নয়, এই নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকলেই।
অগ্রিম হোটেল বুকিংয়ে এমন বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানে পর্যটন সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনের সাথে কথা জানা গেছে, অগ্রিম হোটেল বুকি কম হওয়ার কয়েকটি কারণ তারা চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দাকে প্রধান কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া সিলেটসহ দেশের বহু স্থানে সম্প্রতি সংঘটিত বন্যাও অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তারা।
অনেকের মতে মহল বিশেষের কক্সবাজার বিরোধী এক ধরণের অপপ্রচার পর্যটকদের কক্সবাজার বিমুখ হওয়ার অন্যতম কারণ।
এদিকে সরকার পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করার লক্ষ্যে বিশেষ করে কক্সবাজারের পর্যটনকে প্রমোট করার জন্য কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করার আপ্রাণ প্রচেষ্টায় এগিয়ে যাচ্ছে। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত দীর্ঘদিনের রেল সংযোগের দাবি পূরণ হতে চলেছে। কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত পুরানো আরাকান সড়ক চার লাইনে করার সরকার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এছাড়াও মীরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ সড়ক সংযুক্ত করে বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণের জন্য সরকার ইতিমধ্যে অনেক দূরে গিয়েছে। কিন্তু এত কিছু করার পরও কক্সবাজারে পর্যটক না আসলে বা পর্যটকেরা কক্সবাজার বিমুখ হলে তখন কী হবে? বিষয়টি এখন ঘুরপাক খাচ্ছে পর্যটন খাতে কক্সবাজারে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগকারীদের মাথায়।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।