পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এবার ঈদ যাত্রায় নৌ পথে ভীড় নেই। পদ্মা সেতু হওয়ার পর রাজধানী থেকে বের হওয়ার ধকল কাটিয়ে বুড়িগঙ্গার চীন মৈত্রি সেতু পার হলেই এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে দ্রুত গ্রামে যাবেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। ট্রেনের চিত্র আগের মতোই। সড়ক পথ তথা ঢাকা-রংপুর ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ঈদ যাত্রার জন্য প্রস্তুত। ঢাকা-মানিকগঞ্জ ও ঢাকা ময়মনসিংহ সড়কও ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের আনা নেয়ার জন্য প্রস্তুত। ঢাকা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত সড়কের অবস্থা ভালো। গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলের পথও প্রস্তুত। তবে এই পথের যাত্রীদের ভোগান্তির বড় কারণ হয়ে উঠতে পারে টঙ্গী থেকে চান্দনা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার মহাসড়ক। মহাসড়কের কোথাও একমুখী যানবাহন চলাচল করছে, কোথাও সড়ক বন্ধ করে রাস্তার কাজ চলছে। বর্তমানে এই মহাসড়কের টঙ্গী বাজার, স্টেশন রোড ও মিলগেট এলাকায় বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলায় প্রায়ই থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। কখনো কখনো অবস্থা অসহনীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে কড্ডার মোড় পেরিয়ে নকলা সেতু হয়ে হাটিকুমরুল পর্যন্ত যানজট হতে পারে। অন্যদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ির পর শনিরআখড়ায় মহাসড়কের উপর দুই কিলোমিটার ব্যপী পশুর হাট বসেছে। এই পথে যানবাহন ঢাকায় প্রবেশ ও বের হওয়ায় দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়াও ঢাকা টু চট্টগ্রাম মহাসড়কের ১৫টি স্পটে হাটবাজারের কারণে যানজটের শঙ্কা করা হচ্ছে।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদ যাত্রা শুরু হয়নি। অথচ চার লেন সম্প্রসারণকাজের কারণে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের চান্দাইকোনা থেকে চাপড়িগঞ্জ পর্যন্ত বগুড়ার ৬৫ কিলোমিটার অংশের কয়েকটি স্থানে ধীরগতিতে গাড়ি চলছে। এ ছাড়া বগুড়া শহরের তিন মাথা থেকে মাটিডালি পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার অংশে রেলওয়ে উড়ালসেতুর নির্মাণকাজ চলছে। আবার চারমাথা ও বারপুরে উড়ালসেতুর নির্মাণকাজ হচ্ছে। এসব জায়গায় একমুখী যানবাহন চলছে। অনেক স্থানে খানাখন্দও তৈরি হয়েছে। যানবাহনের চাপ বাড়লেই তৈরি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট। বগুড়ার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় উড়ালসেতুর নির্মাণকাজ চলায় সেখানেও থেমে থেমে যানজট হচ্ছে। ঈদযাত্রায় সড়কে ভোগান্তির শঙ্কা বাড়াচ্ছে মাটিডালি মোড়ও। মোকামতলা বাজারে উড়ালসেতু নির্মাণকাজ চলার কারণে যানজট হচ্ছে। এখানে জয়পুরহাটগামী বাস চলাচল করছে এক লেন হয়ে। সরেজমিন দেখা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ১০ কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন ঘরমুখী যাত্রীরা। তবে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। অনেক কর্মজীবী মানুষকে হেঁটে নিকটবর্তী গন্তব্যে যেতে দেখা যায়। মহাসড়কের মদনপুর থেকে সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া পর্যন্ত এ যানজটের সৃষ্টি হয়। মোগরাপাড়া থেকে মেঘনাঘাট পর্যন্ত গাড়িগুলো ধীরগতিতে চলতে দেখা গেছে। তীব্র গরমে দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থাকায় ঘরমুখী যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এদিকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে পরিবহনমালিকদের বিরুদ্ধে। ভুক্তোভোগীদের অভিযোগ প্রতিটি টিকেটে একশ থেকে ৫শ টাকা পর্যন্ত বেশি নেয়া হচ্ছে।
ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক : বগুড়া ব্যুরো থেকে মহসিন রাজু জানান, কোরবানি ঈদের দিন যতই এগিয়ে আসছে ঢাকা-বগুড়া-রংপুর মহাসড়কে যানজট ততই বাড়ছে। গত মঙ্গলবার ও বুধবার এই মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ মোড়, হাটিকুমরিল, শেরপুর, বনানী, মোকামতলা পয়েন্টে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকালের দিকে কিছুটা যানজট মুক্ত পরিবেশ থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথেই বাড়তে থাকে যানজট। বগুড়া রোডস এ্যান্ড হাইওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, রাতের বেলায় শুধু মাত্র দূরপাল্লার নৈশকোচ, গরু ও পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করে থাকে। অন্যদিকে বেলা বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন রুটের আন্তঃজেলা বাস ট্রাক সহ অন্যান্য যানবাহন সড়কে নেমে এলে স্বাভাবিকভাবেই মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যাধিক্য দেখা দেয়। একারণেই সৃষ্টি হয় যানজট।
এছাড়া ঈদ উপলক্ষে ফিটনেস বিহীন অনেক যানবাহন সড়কে নামানো হয়। এই ধরনের যানবাহন রাস্তায় ২/১ টা যান অকেজো হয়ে গেলে সেটা সরাতে সরাতেই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। কয়েকজন বাস চালক অবশ্য বলেন, এই মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ ও বগুড়া অংশে ফোরলেন রোড প্রজেক্টের ধীরগতির কারনে ১৫/১৬টি স্থানের নির্মাণ সামগ্রীর স্তুপের কারনেও চলমান যানবাহনকে থেমে যেতে হয়। আর তখনই রাস্তায় থেমে যায় শতশত যানবাহন। সৃষ্টি হয় যানজট। তবে হাইওয়ে পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাদের তৎপরতার কারনে এবার এখন পর্যন্ত উত্তরবঙ্গ মহাসড়কে যানজট যানজট অসহনীয় পর্যায়ে যায়নি।
সিরাজগঞ্জ থেকে সৈয়দ শামীম শিরাজী জানান, আসন্ন ঈদ-উল-আযহার ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে প্রশাসন। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয় এবারের ঈদ যাত্রায় ভোগান্তির দৃশ্যপট বদলে যাবে। ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের যাত্রা সুন্দর নিরাপদ ও ঝামেলা মুক্ত।
পবিত্র ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন স্টেক হোলডারদের সঙ্গে যানযট নিয়ন্ত্রন ও সড়ক নিরাপত্তা যোগদান করন বিষয়ক মতবিনিময় সভায় সড়ক পরিবহন ও মাহসড়ক বিভাগের সচিব এফ বি এম আমিনুল্লাহ নূরি বলেন, উত্তরাঞ্চলের প্রবেশ দ্বার সিরাজগঞ্জ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক জেলা। এই জেলা দিয়ে উত্তরবঙ্গেও ২২টি জেলার যানবাহন যাতায়াত করে থাকে। তাই এই গেটওয়েতে সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা থাকলে আর কোথাও যানজটে সমস্যা হবে না।
গত বুধবার সকাল থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ অঞ্চলের কোথাও যানযট দেখা যায়নি। ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জ আসা এক যাত্রী জানান, তিনি সকাল ১০ টা ৩০ মিনিটে ঢাকা গাবতলি থেকে সিরাজগঞ্জে আসেন মাত্র ৩ ঘন্টায়। রাস্তায় কোথাও বাসের কো ধীরগতি ছিল না।
অপরদিকে উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকাগামী যাত্রীরাও স্বস্থিতে রাজধানীতে পৌঁছায়। সিরাজগঞ্জ কড্ডার মোড় এলাকায় ট্রাক ড্রাইভার ও বাস ড্রাইভারের সঙ্গে সাক্ষাত করে জানা গেছে রাস্তায় কোন যানজট কিংবা যানবাহনের ধীরগতি ছিল না। তারা নির্বিঘ্নে নিশ্চিন্তে চলাচল করতে পারছেন। সিরাজগঞ্জের ট্রাফিক পরিদর্শক খালিকুজ্জামান খান বলেন, যাত্রা নিরাপদ করতে এরই মধ্যে জেলা ট্রাফিক বিভাগ ও জেলা পুলিশের ৫শ ৫৭জন সদস্য মোতায়োন করা হয়েছে। তারা সিরাজগঞ্জ হাটিকুমরুল মহাসড়কে গুরত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া ভ্রাম্যমান মোবাইল টিমও রয়েছে। এবারের ঈদযাত্রা তাই নিরাপদ, স্বস্থিও হবে। কথার সাথে কাজের মিলের বাস্তবরূপ লাভ করবে বলে আশাবাদি।
টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা আতাউর রহমান আজাদ জানান, এবারের ঈদ যাত্রায় ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধুসেতু মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপাড় পর্যন্ত যতো শঙ্কা ১৪ কিলোমিটারে যানজটের শঙ্কা করা হচ্ছে।
ঈদ যাত্রায় ভোগান্তির আরেক নাম ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক। তবে গেলো ঈদে কোন প্রকার ভোগান্তি ছাড়াই স্বস্তিতেই ঘরমুখো হয়েছিলেন লোকজন। কিন্তু ঈদুল আযহায় ঢাকামুখী গরুবাহী যানবাহনের চাপ বাড়লে যানজটের আশঙ্কা করছেন যাত্রী ও চালকরা। এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার সড়কের দুইলেনকেই পথের কাটা হিসেবে দেখছেন তারা। গেলো ঈদের মতো এ ঈদেও যাতে মানুষজন নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারে এজন্য সকল প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গোড়াই থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্র্যন্ত রাস্তায় যানবাহনের চাপ বাড়লেও স্বাভাবিক ভাবেই চলাচল করছে যানবাহন। কোথাও কোন যানজট নেই। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেনের কাজ শেষ হওয়ায় ভোগান্তি কিছুটা লাগব হয়েছে। তবে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার সড়কে এখনো দুই লেনে যানবাহন চলাচল করছে। পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতায় গেলো ঈদে এ অংশে একমুখী যানচলাচলের কারনে লোকজন স্বস্তিতে বাড়ি গিয়েছিলেন। এবার ঈদে উত্তরাঞ্চলমুখী যাত্রীবাহী বাস ও ঢাকামুখী গরুবাহী যানবাহন দুই লেনেই চলাচল করবে। আর ঢাকামুখী যাত্রীবাহী বাস চলাচল করবে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পাড় থেকে ভূঞাপুর হয়ে এলেঙ্গা লিংক রোড দিয়ে ২৬ কিলোমিটার ঘুরে। এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত দুইলেনের এ অংশে গরুবাহী যানবাহন ও উত্তরাঞ্চলগামী যাত্রীবাহী যানবাহনের চাপ বাড়লে বা হঠাৎ কোন যানবাহন বিকল হলে যানজটের শঙ্কা করা হচ্ছে।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গেলো ঈদের মতো মহাসড়কটিতে যানজট যাতে না হয় সে জন্য ৬২০ জন পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এছাড়াও ১০০ জন এপিবিএন সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন যাতে দ্রুত সরিয়ে ফেলা যায় এ জন্য চারটি রেকার থাকবে। সড়ক পর্যবেক্ষণের জন্য স্থাপন করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, গত ঈদের মতো এবারও যানজটমুক্ত ঈদ উপহার দেয়ার লক্ষ্যে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে। উত্তরাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাস সেতু পূর্ব পাড় গোলচক্কর থেকে ভূঞাপুর হয়ে এলেঙ্গা দিয়ে যাতায়াত করবে। আর গরুবাহী যানবাহন ও উত্তরাঞ্চলগামী যাত্রীবাহী বাস মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করবে। তিনি আরও বলেন, মহাসড়কে ৬২০ জন পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এছাড়াও ১০০ জন এপিবিএন সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন যাতে দ্রুত সরিয়ে ফেলা যায় এ জন্য হাইওয়ে পুলিশ ও সেতু কর্তৃপক্ষের চারটি রেকার সবসময় প্রস্তুত থাকবে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক : ঈদে ঘরে ফিরতে এই রুটের ১৫ স্থানে যানজট নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুক্তোভোগীরা।
এ মহাসড়কে খানাখন্দ তেমন নেই। তবু স্বস্তির ঈদযাত্রার আশার বদলে চালক ও যাত্রীরা অন্তত ১৫টি স্থানে যানজটের আশঙ্কা করছেন। সীতাকুণ্ডে ওজন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে জট এবং সড়কের ওপর বাজার ও পশুর হাটের কারণে এসব অংশে যানজট সৃষ্টি হতে পারে। ২৬৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও ফেনীর বিভিন্ন উপজেলার মধ্য দিয়ে গেছে। এর মধ্যে কুমিল্লার ১১টি অংশে এবং চট্টগ্রামের ৪টি অংশে যানজট হয়।
চট্টগ্রাম আন্তজেলা বাস মালিক সমিতি জানায়, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ৬০০ বাস ছেড়ে যায়। প্রতিটি বাসে ৩৬ থেকে ৪০টি আসন রয়েছে। ঈদের দু–তিন দিন আগে বাসে যাত্রীদের চাপ থাকে। তখন মাইক্রোবাস, কারসহ কমপক্ষে দুই হাজার ছোট যানবাহন যুক্ত হয়। সমিতির হিসাবে, মহাসড়ক হয়ে ঈদের আগের তিন দিনে আড়াই থেকে তিন লাখ যাত্রী চট্টগ্রাম ছেড়ে যায়। সড়ক ভালো থাকলেও যাত্রা স্বস্তির হয় না। সড়কের পাশের বাজারগুলোর কারণে তীব্র যানজট হয়। তছাড়া সড়কে কোরবানির গরুর গাড়ি ও পুলিশের চাঁদাবাজির কারণেও যানজট হয়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাতায়াত করেন এমন একজন জানান, কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার মেঘনা- গোমতী সেতুর টোল প্লাজা থেকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মোহাম্মদ আলী এলাকা পর্যন্ত ৯৮ কিলোমিটার এলাকায় মহাসড়কের পাশে ১১টি স্থানেই বাজার ও পশুর হাট বসে। এই ১১টি স্থান হচ্ছে চান্দিনা উপজেলার মাধাইয়া বাজার, চান্দিনা বাসস্ট্যান্ড, বুড়িচং উপজেলার নিমসার পাইকারি সবজিবাজার, আদর্শ সদর উপজেলার ময়নামতী সেনানিবাস এলাকা, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের পদুয়ার বাজার, সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজী বাজার, চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজার, মিরসানি বাজার, চৌদ্দগ্রাম বাজার, দাউদকান্দির ইলিয়টগঞ্জ বাজার ও গৌরীপুর। এ সব এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
জানতে চাইলে সওজ বিভাগ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, মহাসড়কে যানজট নিরসনে হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি সওজের ৪০ স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। ঈদের আগের ও পরের দিন মহাসড়কের ৯৮ কিলোমিটার এলাকায় একটি গাড়ি টহলে থাকবে।
রাজবাড়ী প্রতিনিধি সোহেল রানা জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট ব্যবহারকারী যাত্রী ও যানবাহন চালকদের স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এবারের ঈদযাত্রায় কোন প্রকার ভোগান্তি থাকবে না। কোন রকম সিরিয়ালে না থেকে সরাসরি এসে ফেরিতে উঠছে যানবাহন। এতেকরে এবারই প্রথম কোন রকম দূর্ভোগ ও অপেক্ষা ছাড়াই ঈদযাত্রা সম্পন্ন করতে পারবে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ।
আসন্ন ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে গত মঙ্গলবার গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ঘাট ব্যবস্থাপনা প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেরা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোস্তফা মুন্সি, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদারসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তা, বাস মালিক সমিতির প্রতিনিধি এবং সং্িশ্লষ্ট বিভিন্ন ব্যাক্তিবর্গ।
জানা যায়, পবিত্র ঈদ উল আযহা উপলক্ষে অতিরিক্ত যাত্রী ও যানবাহনের চাপ সামাল দিতে এবার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে চলাচল করবে ২১টি ফেরি। প্রয়োজন হলে আরও ১টি ফেরি বাড়ানো হবে। যাতে ঈদে কোন সমস্যা না হয়।
এদিকে পদ্মার তীব্র স্রোতে ব্যহত হচ্ছে ফেরি চলাচল। সেই সাথে ঢাকামুখি কোরবানির পশুবাহি ট্রাকের চাপ বেড়েছে দৌলতদিয়ায়। তবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহি বাস ও পশুবাহি ট্রাক পারাপার করছে কর্তৃপক্ষ। এতেকরে দৌলতদিয়ায় মহাসড়কে শতাধিক সাধারণ পন্যবাহি ট্রকের সারি সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচলও স্বাভাবিক থাকবে। যানবাহন কমে যাওয়ায় লঞ্চে আগের মত যাত্রীদের চাপ নাই।
আলাদিপুর হাইওয়ে থানার ওসি মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর ঈদে সড়ক দুঘর্টনা বৃদ্ধি পায়। সড়ক দুঘর্টনা রোধে হাইওয়ে পুলিশের টহল জোড়দার করাসহ নিষিদ্ধ যানবাহন গুলো যাতে চলাচল করতে না পারে তার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত সভার সভাপতি গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন জানান, আসন্ন ঈদে দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে যাতায়াতকারীরা যাতে কোন ভোগান্তির শিকার না হয়, সে লক্ষ্যে সকল ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। নৌরুটে পর্যাপ্ত ফেরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।