Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারাদেশে বিদ্যুতের ভেল্কিবাজি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ জুলাই, ২০২২, ১২:০৩ এএম

বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে। ভোগান্তি পোহাচ্ছেন হাসাপাতালের রোগীরা। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। রাজধানী ঢাকার সাভার, কেরানিগঞ্জ ছাড়াও পাশের জেলা নারায়ণগঞ্চ, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জে গড়ে উঠেছে অসংখ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে লাখ লাখ শ্রমিক কাজ করছেন। করোনার দুই বছর উৎপাদন ব্যহত হওয়ায় আর্থিক লোকসানে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলো ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। এতে সফলতার মুখও দেখছে। কিন্তু হঠাৎ করে লোডশেডিংয়ের মার্তা বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন কয়েক ঘন্টা করে উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। এতে একদিনে উৎপাদন বন্ধ রেখেও শ্রমিকদের বেতন দিতে হচ্ছে; অন্যদিকে বিদেশী ক্রেতাদের চাহিদা মতো যথা সময়ে পণ্য ডেলিভেরি দেয়ার যাচ্ছে না। ফলে বিপাকে পড়ে গেছে শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা। এছাড়াও সাধারণ ভোক্তারা বিদ্যুৎ না পাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। বিশেষ করে হাসপাতালগুলোতে রোগীদের নিদারুণ কষ্ট করতে হচ্ছে লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে। সারাদেশে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে বেহাল দশা।

নরসিংদী থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, নরসিংদী শহরসহ ৬টি উপজেলার গ্রামগুলোতে গত সোমবার রাতে ঘন ঘন লোডশেডিং এ রফলে মানুষ ঘুমাতে পারিনি। ছাত্র-ছাত্রীরা মোমবাতি জ্বালিয়ে লেখাপড়া করছে। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা ব্যহত হচ্ছে। শহর গ্রামে হাতপাখার কদর বেড়েছে। বর্তমানে এমনিতেই গ্রাম ও শহরে জ্বর, ঠান্ডা দেখা দিয়েছে। এতে লোডশেডিং এর ফলে এসব জ্বরের রোগীরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। মিল কারখানায় উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। এতে বিভিন্ন এলাকায় চুরি-ছিনতাই বেড়ে গেছে। ঈদকে সামনে রেখে গরু চোরের উপদ্রবও বৃদ্ধি পেয়েছে। মুরগী ও গবাদী পশুর খামারীরা বিপাকে পড়েছে।

নাসিরনগর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া)উপজেলা সংবাদদাতা মোযযাম্মিল হক জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাসিরনগর শতভাগ বিদ্যুৎতায়িত উপজেলা হিসেবে ঘোষণা হলেও বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিংয়ে জনজীবন চরম বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী উপজেলার ১৩০টি গ্রামে প্রায় ৬২ হাজার ৮০০টি সংযোগের মাধ্যমে নাসিরনগরকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করেন। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার পর থেকে বর্তমানে তীব্র তাপবদাহ, ভ্যাপসা গরম ও রৌদ্রের প্রখরতার সাথে যেন পাল্লা দিয়ে চলছে নাসিরনগর পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিং। এ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে হাজার হাজার গ্রাহক ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। গ্রাহকরা দিনে-রাতে অর্ধেক সময়ও বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না।

উপজেলা সদরের বাইরে প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাতে ও দিনে কমপক্ষে ৮/১০ বার লোডশেডিং দেওয়া হয়। ভুক্তভোগী এলাকাবাসীরা জানায়, সন্ধ্যা ৭টায় থেকে কখনো কখনো মাঝ রাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না। ফলে এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার্থী সহ সকল শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। অনেক সময় মৃদু হালকা বৃষ্টির অজুহাতেও ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকে। নাসিরনগরের প্রায় সবকটি ইউনিয়ন থেকে এমন অভিযোগ আসে। রাতেও দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ থাকে না। উপজেলাবাসী অনেকেই পল্লী বিদ্যুতের,ডিজিএম, এজিএমের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে তার বদলির দাবি করেছেন। ভুক্তভোগীরা জানায় পল্লী বিদ্যুৎ লোডশেডিং এর বিষয়ে ডিজিএম,এজিএম কে ফোন করলে তারা গ্রাহকের সাথে খারাপ আচরণ করে। উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি জানায়- কর্তৃপক্ষ বলছে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উতপাদন না হওয়ায় লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।

চলমান লোডশেডিংয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ না করেও মিটার ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল গ্রাহককে জুন মাসে অতিরিক্ত পরিশোধ করতে হয়েছে। বিদ্যুৎ লোডশেডিংয়ে উপজেলা প্রশাসন, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ জরুরি অনেক কাজেও বেগ পেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বন্যা পরিস্থিতি, ডেঙ্গু জ্বর, প্রতিনিয়ত লোডশেডিংয়ে শিক্ষার্থী সহ উপজেলাবাসী চরম দুর্ভোগে জীবন যাপন করছে। এসব সমস্যা থেকে উত্তরনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা গ্রহণে জোর দাবি জানিয়েছে উপজেলার সর্বসাধারণ।

সাভার থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, বিদ্যুতের ভেলকিবাজিতে অতিষ্ঠ সাভার উপজেলাবাসী। আকাশে মেঘ জমলেই চলে যায় বিদ্যুৎ। যতক্ষণ মেঘ-বৃষ্টি থাকে, ততক্ষণ বিদ্যুতের দেখা মেলে না। এর বাইরেও ঘন ঘন লোডশেডিং এবং বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে অতিষ্ঠি হয়ে পরেছে সাভার বাসী। বিভিন্ন এলাকায় ঘন ঘন লোড শেডিংয়ের কারণে সাধারন গ্রাহক ও পোশাক কর্মীরাও চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

পোশাক শ্রমিক জোসনা বেগম বলেন, কয়েকদিন ধরে বিদ্যুৎ আসে যায়। বিদ্যুৎ না থাকলে সেদিন খাওয়া, গোসল ছাড়াই অফিসে যেতে হয়। আবার দুপুরে এসে বাসায় বিদ্যুৎ না পেলে সেই না খেয়ে ও গোসল না করে অফিসের দিকে ফিরতে হয়।

জোসনা বেগমের মতো বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং এর কবলে পড়েছে সাভার-আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের লাখ পোশাক শ্রমিকরা। খেয়ে না খেয়ে সঠিক সময়েই অফিসে উপস্থিত হতে হচ্ছে তাদের। ঘন-ঘন বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন।
গত ৪/৫দিন ধরে সাভার-আশুলিয়ার সব এলাকায় ঘন-ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। এ কারণে শ্রমিকদের সঙ্গে বিপাকে রয়েছে ছোটো কিছু পোশাক কারখানা মালিকও।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে সাভার-আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং চলছে। আকাশে একটু মেঘ আর হালকা বাতাস পেলেই চলে যায় বিদ্যুৎ। দিনে অন্তত ৮/৯ বারের বেশি সময় লোডশেডিং হয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সন্ধ্যার পর একাধিকবার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় পড়াশোনা করতে খুব কষ্ট হয়। বার বার লোডশেডিং হওয়ার ফলে লেখাপড়াও ঠিকমতো হয় না। তাই এ সমস্যা দ্রুত সমাধানের দাবি জানান তারা।
ঢাকা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. শাহজাহান কবীর বলেন, এখন কেন লোডশেডিং হচ্ছে আমরা সবাই জানি তবুও দোষটা আসছে আমাদের ওপর। এখানে আমাদেরও করার কিছু নেই। যেমন আমার ১২২ মেগাওয়াট, লোডশেডিং হচ্ছে। আমি অর্ধেকের মতো পাচ্ছি আর অর্ধেক পাচ্ছি না।
শিল্পাঞ্চলের জন্য আলাদাভাবে বিদ্যুতের বাড়তি মেগা ওয়াট দেওয়া হয় কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের যে চাহিদা, সেই চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পেলে আর কোনা সমস্যা থাকতো না। চাহিদা মতো তো পাচ্ছি না। তবে আশা করছি খুব দ্রুতই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

নাচোল (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে লোডশেডিং নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। কিন্তু বর্তমানে গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং এর তীব্রতা। নাচোলে নেসকোর বিদ্যুৎ এই আসে, এই যায়। বিশেষ করে নাচোল পৌর এলাকার চিত্র ভয়াবহ। পুরো দিনে এইসব এলাকায় ১০/১২ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকে কিনা বলা দুষ্কর। বিদ্যুৎ সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় একটি জিনিস। দিনে বা রাতে যে কোন সময়েই হোক, বিদ্যুতের অনুপস্থিতি আধুনিক জীবনে হাজার সংকট ও সমস্যার সৃষ্টি করে। রাষ্ট্রীয়, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক সকল ক্ষেত্রে প্রতিটি মুহূর্তে বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। বিদ্যুৎ ছাড়া কলকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিস-আদালত অচল। শিল্প কারখানাগুলোতে প্রতিনিয়ত লোডশেডিং এর ফলে উৎপাদন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে পূর্বের তুলনায় আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পেয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখার নিরন্তর ব্যাঘাত ঘটছে। বিদ্যুৎ না থাকলে সুষ্ঠু পানি সরবরাহ বাধাগ্রস্ত এবং কৃষি আজ হুমকির মুখে পতিত হয়েছে। অনেক সময় লো-ভোল্টেজের কারণে ফ্রিজ, ফ্যান, এসি ইত্যাদি অচল হয়ে যাচ্ছে। কল/ মটর, কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, হাসপাতালের চিকিৎসার ব্যাঘাত ঘটছে এমনকি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে সরকারি ও বেসরকারি কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে শুধু কৃষি খাতে সামনে আউস মৌসুমে নাচোল উপজেলায় চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৫হাজার হেক্টর জমিতে।

নেসকো নির্বাহী প্রকৌশলী হাফেজ নাসিম বিন জসিম বলেন, আমাদের নেসকোর একার পক্ষে এ অবস্থার উন্নতি সম্ভব নয়। তাই জনগণেরও বিদ্যুৎ ব্যবহারের ব্যাপারে সতর্কতা ও সচেতনাতার পরিচয় দিতে হবে এবং বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করতে হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তাহলে হয়তোবা জনগণের এই দুর্ভোগের অবসান ঘটবে।

পুঠিয়া (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদতা জানান, পুঠিয়ায় তীব্র লোডসেডিং জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। ২৪ ঘন্টায় ৮ ঘন্টা বিদ্যুত থাকছেনা। গত কয়েক দিন ধরে উপজেলায় তীব্র লোডসেডিং চলছে। বিদ্যুতের অভাবে জনজীবনে চলছে অচল অবস্থা। নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির-২ পুঠিয়া জোনাল অফিস সূত্রে জানাগেছে, পুঠিয়া উপজেলায় বর্তমানে দৈনিক ১৮ থেকে ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলে সেখানে তারা ৮ মেডাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছেন। এলাকায় বিদ্যুতের আসা যাওয়ার প্রতিযোগিতায় অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। দিন-রাতে অতিরিক্ত গরম আর বিদ্যুতের লোডসেডিং এর কারণে অধিকাংশ পরিবারের শিশু থেকে বৃদ্ধরা অসুস্থ্য হয়ে পড়ছেন। এছাড়াও বিদ্যুতের লোডসেডিং এর ফলে উপজেলার ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্প কলকারখানার উৎপাদন কম হচ্ছে। এতে করে তারা লোকসানে মুখে পড়বে বলে মালিকগণ অভিযোগ করেন। সরজমিনে ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, এখন লোডসেডিং এর মাত্র আরোও ভয়াবহ পর্যায়ে চলে গেছে। প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১৫ বার বিদ্যুৎ যাচ্ছে।
নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা জানান, নওগাঁ জেলায় ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। নর্দার্ন ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী (নেসকো) নওগাঁ কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে নওগাঁ বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের আওতায় ৭ািট ফিডারের মাধ্যমে প্রায় ১০৩ কিলোমিটার লাইন সরবরাহ করা হয়েছে। এই ফিডারগুলো হচ্ছে শহর-২, শহর-৩, মোহনপুর, বদলগাছি, কাঁঠালতলী বিসিক, মাদারমোল্লা ও কলোনী।

এসব ফিডারের আওতায় প্রায় ৩৬ হজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। এসব গ্রাহকের প্রাত্যহিক বিদ্যুতের চাহিদা হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৭ মেগাওয়াট। প্রতিদিন চাহিদা মোতাবেক বিদ্যুৎ এই কেন্দ্রের আওতায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। কাজেই চাহিদার তুলনায় কোন ঘাটতি থাকেনা । নেসকো কর্ত্তৃপক্ষ জানিয়েছে জাতীয় গ্রীডে ফ্রি-কুয়েন্সি কমে যাওয়ার লোড সামাল দিতে পারার কারনে লোড শেডিং দিতে বাধ্য হতে হয়। এ ছঅড়াও ট্রান্সফরমার বিকল্প হয়ে যাওয়া এবং যথন তখন বিভিন্ন যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে বিদু্যুতের লোড শেডিং করতে হচ্ছে। বিশেষ করে পিকআওয়ার বিকাল ৫টা থেকে রাত ১১টার মধ্যে এই লোডশেডিং প্রদান করতে বাধ্য হতে হচ্ছে।

নওগাঁ শহরের তুলনায় গ্রামে লোডশেডিংয়ের পরিমাণটা বেশি। পল্লী বিদ্যুতে ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। একেতো গরমের দিন, তার ওপরে বিদ্যুতের লোডশেডিং। এদুইয়ে মিলে অসুস্থ হয়ে পড়ছে বৃদ্ধ ও শিশুরা। এছাড়া সেচ কাজে পানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে। এদিকে চাহিদা মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় অফিস আদালত, শিল্পকারখানা কাজের বিঘ্নের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার ও ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা বলছেন নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে। কোনো ধরনের সমস্যা নেই।

প্রযুক্তির এ সময়ে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় জনজীবন প্রায় স্থবিব। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) দাবি করছেন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু দিনে প্রায় ২ থেকে ৩ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। অপরদিকে পল্লী বিদ্যুতের আওতায় বিশেষ করে গ্রামের দিকে বিদ্যুৎ থাকছে না। ফলে কৃষি কাজে সেচ পাম্পে ঠিক মতো বিদ্যুৎ পাচ্ছে না।
নওগাঁ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) আবাসিক প্রকৌশলী রুহুল করিম বলেন, নওগাঁ জেলায় পিডিবির বিদ্যুতের কোনো ঘাটতি নেই। যেটুকু সমস্যা হয় সেটা যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে। পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিং আছে। জেলায় পিডিবির বিদ্যুৎ চাহিদা ২৫ মেগাওয়ার্ট এবং গ্রিড থেকে চাহিদা মোতাবেক বিদ্যুৎ পাওয়া যায়।

নওগাঁ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রিজিয়ন-১ এর জেনালে ম্যানেজার (জিএম) এনামুল হক বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ রিজিয়ন-১ (নওগাঁ সদর, আত্রাই, রানীনগর, মান্দা, নিয়ামতপুর ও বদলগাছী উপজেলা) এর সর্বমোট বিদ্যুতের চাহিদা ৭৫ মেগাওয়ার্ট। গ্রিড থেকে পাওয়া যায় ৪৫ মেগাওয়ার্ট। আর বাকি ৩০ মেগাওয়ার্ট বিভিন্নভাবে লোডশেডিং করে সমন্বয় করে দেয়া হয়।

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ভয়াবাহ বিদ্যুত সংকটে কলারোয়ার গ্রামগজ্ঞের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ফলে ব্যবসা বাণিজ্য, ঘর গৃহস্থলী কাজে বিঘ্ন এবং স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া শিকেয় উঠেছে। ##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিদ্যুতে

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৪ জানুয়ারি, ২০২৩
১০ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ