Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পুরোপুরি গ্যান্ট্রি ক্রেনের আওতায় চট্টগ্রাম বন্দর

যুক্ত হলো আরো ২টি

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০২২, ১২:০২ এএম

চট্টগ্রাম বন্দরে যুক্ত হচ্ছে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে বিশ্বের সর্বাধুনিক ইক্যুইপমেন্ট আরো দুটি কী গ্যান্ট্রি ক্রেন (কিউজিসি)। এর ফলে বন্দরের চিটাগাং কন্টেনার টার্মিনাল (সিসিটি) ও নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনালে (এনসিটি) মোট ১৮টি কী গ্যান্ট্রি ক্রেনের সমৃদ্ধ বহর গড়ে উঠছে। এসব জেটিতে বার্থিং নেয়া একটি কন্টেনার জাহাজে তিনটি করে কী গ্যান্ট্রি ক্রেন অপারেশন করার সুযোগ তৈরি হওয়ায় বন্দরের কন্টেনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রম অনেক বেশি গতিশীল হবে।

গতকাল সোমবার চীন থেকে কিউজিসি নিয়ে আসা জাহাজটি বিশেষ ব্যবস্থায় বন্দরের এনসিটি-৫ জেটিতে ভিড়েছে। জাহাজটিতে এসেছে আরও তিনটি রাবার টায়ার গ্যান্ট্রি (আরটিজি) ক্রেনও। বন্দরের নিজস্ব শক্তিশালী টাগবোট কাণ্ডারী ৬, ৮, ১০ ও ১১ এবং মুরিং বোট আজমত জাহাজটি বার্থিংয়ের কাজে সহায়তা করে। এ সময় বন্দর চ্যানেল নৌযান চলাচল সীমিত করা হয়।
ওই জাহাজে আসা চীনে তৈরি নতুন দুইটি কিউজিসি ও তিনটি আরটিজি আনলোড, ফিটিং, ট্রায়াল শেষে যত দ্রুত সম্ভব এগুলো অপারেশনে যাবে। এর আগে গত ৭মে বন্দরে যুক্ত হওয়া কিউজিসি ও আরটিজি দিয়ে অপারেশন চলছে। শনিবার এসব কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট নিয়ে আসা ‘জেন হুয়া-১২’ জাহাজটি দুইটি শক্তিশালী টাগবোটের সহায়তায় বিশেষ ব্যবস্থায় বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালের ৫ নম্বর বার্থে আনা হয়।
এনসিটির জন্য নতুন দুইটি কিউজিসি ও তিনটি আরটিজি এসেছে। এ নিয়ে সিসিটিতে ৪টি, এনসিটিতে ১৪টি কিউজিসি হচ্ছে। এনসিটির ১ নম্বর জেটিতে ২টি, ২-৫ নম্বর জেটিতে ৩টি করে কিউজিসি বসবে। নতুন আরটিজিসহ বন্দরের সিসিটি ও এনসিটিতে আরটিজি হচ্ছে ৪৫টি। আধুনিক হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট সংযোজনের ফলে বন্দরের সক্ষমতা বাড়বে। এর আগে গত ৭ মে ‘জেন হুয়া-১২’ জাহাজে বন্দরে পৌঁছেছিল দুইটি কী গ্যান্ট্রি ক্রেন ও তিনটি রাবার টায়ার গ্যান্ট্রি ক্রেন নিয়ে।
জানা গেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ৯০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০৪টি ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ করছে। এই প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ৪টি কী গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ ১৬টি গুরুত্বপূর্ণ ইক্যুইপমেন্ট এসে পৌঁছেছে। প্রকল্পের আওতায় অন্য ইক্যুইপমেন্টগুলো অচিরে বন্দরের বহরে যুক্ত হবে। বন্দরের সিসিটি ও এনসিটিতে মোট ৮টি বার্থ রয়েছে। ৮ বার্থের মধ্যে সিসিটির ৩টি বার্থের মধ্যে সিসিটি-১ এবং সিসিটি-৩ বার্থে দুটি জাহাজ বার্থিং দেয়া হয়। জাহাজের দৈর্ঘ্য বেড়ে যাওয়ায় সিসিটিতে একই সাথে ৩টি জাহাজ বার্থিং দেয়া সম্ভব হয় না। অপরদিকে নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনালে ৫টি বার্থ রয়েছে। এর মধ্যে এনসিটি-১ বার্থটিতে মোবাইল হারবার ক্রেন রয়েছে। এই জেটিতে শুধুমাত্র পানগাঁও টার্মিনালের জাহাজ বার্থিং দেয়া হয়। এছাড়া এনসিসি-২, ৩, ৪ ও ৫ নম্বর বার্থে কন্টেনার জাহাজ হ্যান্ডলিং করা হয়। এতে করে সিসিটি ও এনসিটিতে মোট ৬টি জেটিতে এক্সক্লুসিভলি কন্টেইনার জাহাজ হ্যান্ডলিং করা হয়। এই ৬টি জেটির প্রতিটিতে ৩টি করে কী গ্যান্ট্রি ক্রেন স্থাপন করা হচ্ছে। এতে একটি জাহাজ থেকে একই সাথে তিনটি কন্টেইনার ওঠানো বা নামানো যাবে।
চট্টগ্রাম বন্দরে কী গ্যান্ট্রি ক্রেন স্থাপন শুরু হয় ২০০৫ সালে। দুটি কী গ্যান্ট্রি ক্রেন স্থাপনের মাধ্যমে বন্দর কর্তৃপক্ষ জাহাজের ক্রেন ছাড়া শোর টু শিপ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং শুরু করে। কী গ্যান্ট্রি ক্রেন বন্দরের জেটিতে অবস্থান করে জাহাজ থেকে কন্টেইনার খালাস এবং জাহাজে বোঝাই করতে পারে।
যেসব জাহাজের নিজস্ব ক্রেন রয়েছে সেগুলোতে কী গ্যান্ট্রি ক্রেন ছাড়া কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সম্ভব হলেও নিজস্ব ক্রেন নেই (গিয়ারলেস) এমন জাহাজে কী গ্যান্ট্রি ক্রেন ছাড়া কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা যায় না। আধুনিক জাহাজ নির্মাতারা জাহাজে কন্টেইনার ধারণক্ষমতা বাড়ানোর জন্য অধিকাংশ জাহাজে ক্রেন স্থাপন করেন না। গিয়ারলেস জাহাজ নির্মাণ করেন।
এতে করে বন্দরের কী গ্যান্ট্রি ক্রেনই কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের একমাত্র ভরসা। এখন চট্টগ্রাম বন্দর পুরোপুরি কী গ্যান্ট্রি ক্রেনের আওতায় চলে এল। এই সক্ষমতা বন্দরের কন্টেনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রমে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে। গেল অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দরে রেকর্ড ৩২ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৮ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। কন্টেইনার হ্যান্ডলিং প্রতিবছর বাড়ছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ