বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পরে দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগের যাত্রীবাহী নৌযানের ব্যবসা এখন আশা-নিরাশার দোলাচলে। বরিশাল নদী বন্দরসহ পটুয়াখালী ও ভোলা বন্দর ছাড়াও দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো জেলা সদরসহ প্রায় ২০টি স্টেশন থেকে রাজধানীমুখী নৌযানগুলোতে ভ্রমণে যাত্রীদের আগ্রহে কিছুটা ভাটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সব নদী বন্দরে এখন যাত্রীর অপেক্ষায় নৌযানগুলো তির্থের কাকের মতো অপেক্ষা করছে। ফলে নৌযান মালিকগণ ইতোমধ্যে ডেক থেকে প্রথম শ্রেণি ও ভিআইপি কক্ষগুলোর ভাড়া কমিয়ে যাত্রীদের আগ্রহ বাড়াতে চেষ্টা করেছেন। পরিস্থিতি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছেন নৌযান মালিকগণ।
পদ্মা সেতু হয়ে সড়ক পথে বিভাগীয় সদর বরিশালের দুরত্ব ১৬০ কিলোমিটার হলেও নৌপথের দুরত্বও ১৬৫ কিলোমিটারের মতো। স্বপ্নের সেতু হয়ে রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন সংস্থা-বিআরটিসি ইতোমধ্যে বরিশালÑঢাকা সড়ক পথে ৫০০ টাকায় বাতানুকুল বাস সার্ভিস চালু করেছে। বেসরকারি গ্রীন লাইন সাড়ে ৭০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকায় যাত্রী পরিবহন করছে।
তবে বেসরকারি নৌযান মালিকগণ সড়কপথ থেকে নৌপথে যাত্রীদের ফিরিয়ে আনতে ডেক শ্রেণির ভাড়া সরকারি নির্ধারিত হারের প্রায় অর্ধেক কমিয়ে ২০০ টাকায় যাত্রী পরিবহন করছে। প্রথম শ্রেণির একক শয্যার কক্ষের ভাড়া ১৪০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকায় এবং দ্বৈত শয্যার কক্ষের ভাড়া আড়াই হাজার থেকে দুই হাজার টাকায় হ্রাস করা হয়েছে। ভিআইপি শ্রেণিতেও ভাড়া ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত হ্রাস করা হয়েছে।
শুধু বরিশালÑঢাকাÑবরিশাল নৌপথেই প্রায় ২৫টি যাত্রীবাহী নৌযানের রুট পারমিট রয়েছে। দক্ষিণাঞ্চল থেকে রাজধানীর সাথে চলাচলকারী নৌযানের সংখ্যা প্রায় ৭০টি। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে পর্যন্ত বরিশালÑঢাকা রুটে প্রতিদিন ১৮টি নৌযান নিয়মিত চলাচল করলেও গত সপ্তাহ খানেক ধরে উভয়প্রান্ত থেকে গড়ে ৪টি করে ৮টির বেশি নৌযান চলছে না। নৌযান মালিকদের হিসেবে ৩ তলা বিশিষ্ট একটি নৌযানের বরিশালÑঢাকাÑবরিশাল রুটে প্রতি ফিরতি ট্রিপে পরিচালন ব্যয় প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা। নৌ পরিবহন অধিদফতরের অনুমোদিত ধারণ ক্ষমতার ৭৫% যাত্রী না হলে পরিচালন ব্যয়ও উঠবে না। কিন্তু যাত্রীর অভাবে গত ৮ দিন ধরে ইতোপূর্বে নিয়মিত চলাচলকারী প্রায় অর্ধেক নৌযান বন্ধ রাখা হচ্ছে।
তবে বেসরকারি নৌযান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন (যাত্রী চলাচল) সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বরিশালের সুন্দরবন নেভিগেশন লিমিটেড-এর সত্বাধিকারী সাঈদুর রহমান রিন্টু জানান, আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। প্রথমদিকে সাধারণ মানুষের পদ্মা সেতুর মতো বৃহত্তম এ স্থাপনা দেখার আগ্রহ স্বাভাবিকভাবেই রয়েছে। নৌপথে সময় একটু বেশি লাগলেও রাতে ঘুমিয়ে সকালে ঢাকায় পৌঁছে কাজ শেষে আবার রাতে বরিশালের ফিরতি নৌযানে আসতে পারছেন যাত্রীরা। পাশাপাশি সড়ক পথের চেয়ে নৌপথে ভাড়াও অনেক কম। ভবিষ্যতেই যাত্রীরা সড়ক পথের মতো আগের মতোই নৌপথও ব্যবহার করতে শুরু করবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এদিকে ঈদকে সামনে রেখে ৭ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত বিশেষ সার্ভিস চালাবে বেসরকারি নৌযান মালিকগণ। এরপরেই সব বেসরকারি নৌযান মালিকগণ বৈঠক করে পরবর্তী কর্ম পরিকল্পনা স্থির করবেন বলে জানা গেছে।
তবে বেশিরভাগ নৌযান মালিকগণ এখনো সম্পূর্ণ হতাশ না হলেও আগের মতো নৌপথে রমরমা ব্যবসা আসবে না বলেই মনে করছেন। পরিস্থিতি ধীরে অনুকূলে আসবে বলেই এখনো সম্পূর্ণ নিরাশ হতেও রাজি নন দীর্ঘদিনের পরিক্ষিতি এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকগণ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।