রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
ছাতকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুষ্ঠু তদারকির অভাবে ব্যাপকহারে চলছে কাবিখা, কাবিটা, এলজিএসপিসহ বিভিন্ন সরকারি বরাদ্দ আত্মসাতের মহোৎসব। এর সাথে জড়িতরা নিজেদের গায়ে সরকারি দলের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে বরাদ্দের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে যাচ্ছে। অনেক সময় দেখা গেছে প্রকল্প কমিটি কাজ না করেই ভুয়া বিল-ভাউচারে মালামাল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। কখনো অত্যন্ত নি¤œমানের উপকরণ দিয়ে সিকিভাগ কাজ করলেও বরাদ্দের টাকা হাতিয়ে নেন। এসব নি¤œমানের কাজ দীর্ঘস্থায়ী না হওয়ায় সরকার ও জনসাধারণ উভয়ই ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এতে নিজেদের ব্যাংক ব্যালেঞ্ছ স্ফীতসহ লাভবান হচ্ছে আত্মসাৎকারীরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাঠ পর্যায়ে সরকারি প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের সাথে জড়িত রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, পাতি নেতা ও তাদের দোসররা। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ন্যায়নিষ্ঠা ও সততার ভিত্তিতে এলাকার উন্নয়ন করার অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়ে তাদের ভোট আদায় করেন। সরল বিশ্বাসে মানুষ তাদেরকে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করে। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর জনপ্রতিনিধিদের প্রকৃত চেহারা উন্মোচন হয়ে পড়ে। অমুকের চরিত্র ফুলের মতো আর পবিত্র থাকে না। এলাকার উন্নয়নের জন্য আসা সরকারি প্রকল্পের টাকা দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে নিজেদের ভূরিভোজসহ বসবাসের জন্য অট্টালিকা গড়া হয়। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, হতদরিদ্রদের মুখের অন্নও তারা কেড়ে নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় এলজিএসপি, ১০ টাকা কেজির চাল, ঢেউটিন, বিভিন্ন ভাতা টাকাসহ হতদরিদ্রদের মালামাল লুটেপুটে খাচ্ছে জনপ্রতিনিধিরা। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হচ্ছে, ইউনিয়নের মেম্বার-চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় সরকার বিভাগে। তবে এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানরা যে একেবারেই ফুলের মতো একথা কেউ বিশ্বাস করতে রাজি হচ্ছে না। এসব দুর্নীতি থেকে বাদ পড়েননি মুক্তিযোদ্ধারাও। চরমহহল্লা ইউনিয়নবাসী উন্নয়ন প্রত্যাশা বুকে নিয়ে নির্বাচিত করেন মুক্তিযোদ্ধা কদর মিয়াকে। কিন্তু তাদের প্রত্যাশায় গুঁড়ে বালি দিয়ে গত মেয়াদে তিনি ইউনিয়নে দুর্নীতি-অপকর্ম ও আত্মসাতের স্বর্গরাজ্য গড়ে তোলেন। কিন্তু এলাকার সুচতুর জনগণ কখনও নিজেরা ঠকেনা তারা সব সময় মানুষকে ঠকায়। ফলশ্রুতিতে এবারের নির্বাচনে কদর মিয়া বিপুল ভোটের ব্যবধানে শোচনীয় পরাজয় বরণ করেন। মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে নির্বাচনে। এখানে তারা নির্বাচিত করেন মাস্টার আবুল হাসনাতকে। তিনির ভাল-মন্দ যাচাই হবে আগামী নির্বাচনে। জানা গেছে, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা কদর মিয়া ২০১৫ সালের ২ আগস্ট স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের কাবিখা প্রজেক্টের ২য় পর্বের বিশেষ বরাদ্দ ১৯ মে.টন চাল উত্তোলন করেন। ইউনিয়ন কমপ্লেক্সে সোলার বিদ্যুৎ স্থাপনের জন্য এই প্রকল্পটি বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু সোলার বিদ্যুৎ স্থাপনসহ প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা প্রকল্পে কোন কাজ না করেই টাকা আত্মসাৎ করেন ইউপি চেয়ারম্যান। এ ক্ষেত্রে সমূদয় টাকার ব্যয় খাতের ভুয়া মাস্টার রোল অফিসে দাখিল করেছেন বলে জানা গেছে। রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তির কারণে কদর মিয়াসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে আত্মসাৎকৃত প্রকল্পে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। ফলে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এদের অব্যাহত দুর্নীতি-অকর্ম। এতে সরকার ও জনসাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ব্যাপারে গত ১৪ নভেম্বর সিলেট দুর্নীতি দমন কমিশনে স্থানীয় খদিরিচর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুছের পুত্র সিরাজুল ইসলাম একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযুক্ত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কদর মিয়া নিজেই এই প্রকল্পের চেয়ারম্যান দাবি করে বলেন, বরাদ্দের টাকা দিয়ে আগামী সপ্তাহে সোলার স্থাপনের কাজ শুরু করা হবে। ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত জানান, এ বিষয়ে এলাকায় ব্যাপক আলেচনা-সমালোচনা চলছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মামুন আহমদকে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।