Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বন্যার্তদের দুঃখ দুর্দশায় গোটা জাতি ব্যথিত

ত্রাণ সামগ্রী বিতরণকালে বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০২২, ৭:৫৮ পিএম | আপডেট : ৯:২০ পিএম, ২৯ জুন, ২০২২

সিলেট,সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রামসহ বিভিন্ন বন্যা দুর্গত এলাকার অসহায় মানুষের দুঃখ দূর্দশায় গোটা জাতি ব্যথিত। বন্যা পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুর্নবাসনে সরকারকে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। বন্যা প্লাবিত অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ এখনো কোনো ত্রাণ সামগ্রি পায়নি। সমাজের বিত্তশালী ব্যক্তিদের বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে। বন্যা দুর্গত এলাকায় অসহায় মানুষের মাঝে গতকাল ত্রাণ সামগ্রি বিতরণকালে বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন : বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের উদ্যোগে আজ বুধবার সকালে সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা এলাকায় ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী ও নগদ টাকা বিতরণ করা হয়। খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও ঢাকা মহানগর আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আমীর আলহাজ আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সির নেতৃত্বে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম সম্পন করা হয়।
এ সময় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, খেলাফত আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা নায়েবে আমীর মুফতী এহতেশামুল হক কাসেমী উজানী, কেন্দ্রীয় নেতা ও হবিগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জুনায়েদ আহমদ কাটখালী, ঢাকা মহানগরীর নায়েবে আমীর মুফতী আখতারুজ্জামান আশরাফী, মুফতী মুশফিকুর রহমান জামাল রশিদী, মাহদী হাসান, ইকবাল হাসান আজাদ ও মাওলানা ফয়সালসহ জেলা নেতৃবৃন্দ। ত্রাণ বিতরণকালে উপস্থিত বন্যার্তদের মাঝে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে দলের শীর্ষ নেতা আলহজ আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সি বলেন, বন্যাদুর্গত মানুষের দুঃখ দুর্দশায় গোটা জাতি ব্যথিত। বন্যা পরবর্তী সঙ্কট মোকাবেলায় সরকারসহ বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিপদ মুসিবত সবই আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে। মহান আল্লাহর দরবারে আমাদের অতীতের গুনাহ থেকে তওবা, রোনাজারি ও দোয়া করতে হবে। দলের নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, আল্লাহর প্রতি অবাধ্যতার কারণে বন্যা খরাসহ নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেমে আসে। এসব থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে হাফেজ্জী হুজুরের তওবার ডাকে সাড়া দিয়ে সব ধরনের পাপাচার পরিহার করত বেশি বেশি তওবা ও ইস্তেগফার করতে হবে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ : জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদের সভাপতি ও জামিয়া মাদানিয়া আঙ্গুরা মুহাম্মদপুরের পরিচালক শায়খ মাওলানা জিয়া উদ্দীনের উদ্যোগে ও জামিয়া আঙ্গুরার ব্যবস্থাপনায় সিলেট ও সুনামগঞ্জে গত তিনদিন সিলেট জেলার কোম্পানিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক দোয়ারা উপজেলার ৫০০ পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ ও কাপড় বিতরণ করা হয়। শায়খ জিয়া উদ্দীন বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দেশ বিদেশের মানবতাবাদী মানুষদের ধন্যবাদ জানান। শায়খ জিয়া উদ্দীন এহেন মসিবত থেকে উদ্ধারকল্পে দেশবাসীকে আল্লাহর দরবারে তাওবাহ ইসতিগফার করার আহবান জানান। তিনি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বানভাসি মানুষের জন্য বিশেষ মুনাজাত করেন। ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জামিয়া আঙ্গুরার শায়খুল হাদীস মুফতি মুজিবুর রহমান, মাওলানা আব্দুল গাফফার, মাওলানা ফখরুজ্জামান, মাওলানা মাহফুজ আহমদ, মাওলানা আব্দুল কাদির, মাওলানা জফির উদ্দীন, মাওলানা ফরহাদ আহমদ, মাওলানা জামিল আহমদ ও মাওলানা লুকমান হাকীম।
যশোর ইমাম পরিষদ : যশোর ব্যুরো জানায়, সিলেট সুনামগঞ্জের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২ হাজার মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন যশোর জেলা ইমাম পরিষদ। আজ বুধবার সকালে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ড এলাকা ও দুপুরের পর জামালগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ দেয়া হয়। এসময় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে চাল, ডাল, চিড়া, চিনি, লবণ, আলু, তেল, ওষুধ শুকনা খাবার, কাপড় ও নগদ টাকা প্রদান করেন ইমাম পরিষদের প্রতিনিধিরা।
এর আগে গত সোমবার ইমাম পরিষদের ২৪ সদস্যর একটি প্রতিনিধি দল ৪৫টন ত্রাণ সামগ্রী ও নগদ অর্থ নিয়ে সিলেটে যান। মঙ্গলবার সেখানে গিয়ে তারা স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় করে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরী করে ত্রাণ বিতরণ করেন।
ত্রাণ বহরের নেতৃত্বে থাকা জেলা ইমাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা বেলায়েত হোসেন জানান, বুধবার ইমাম পরিষদের ত্রাণ বহরে থাকা ২৪জন প্রতিনিধি দুই দলে ভাগ হয়ে ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নেন। এসময় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ট্রলারে করে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন। ত্রাণ পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ আল্লাহর প্রতি শোকরিয়া জ্ঞাপনের পাশাপাশি ইমাম পরিষদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এসময় ওই এলাকার ১ হাজার মানুষের মাঝে এ ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেয়া হয়।
দুপুরের পর সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকাতেও এভাবে ত্রাণ বিতরণ করেন যশোর জেলা ইমাম পরিষদের প্রতিনিধিরা। সেখানেও দূর্গম এলাকায় নৌকা ও ট্রলারে করে ত্রাণ বিতরণ করেন তারা। ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে স্থানীয় জনপ্রতি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও স্থানীয় প্রশাসন সহযোগিতা করেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফা ত্রাণ বিতরণ শেষে ইমাম পরিষদের ত্রাণ বহরের থাকা ২৪ প্রতিনিধি যশোরে ফিরে আসবেন বলে জানান নেতৃবৃন্দ।
সমগ্র ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জেলা ইমাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা মো. বেলায়েত হোসেন, মুফতি হামিদুল ইসলাম, মুফতি হাফিজুর রহমান, মুফতি মো. মাজহারুল ইসলাম, মুফতি আব্দুর রহমান এযাযী, মুফতি কামরুল আনোয়ার নাঈম, মুফতি শামসুর রহমান, হাফেজ মো. আব্দুল্লাহ, মুফতি হুসাইন আহমেদ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ