বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সিলেট,কুড়িগ্রামসহ বিভিন্ন বন্যা দুর্গত এলাকায় ইসলামী সংগঠন ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দের ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। ত্রাণ বিতরণকালে বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, দুর্গত এলাকার যেখানেই ত্রাণ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সেখানেই ক্ষুধার্ত অসহায় মানুষ ত্রাণের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। অনেক দুর্গত এলাকার বন্যার্তদের মাঝে কোনো ত্রাণ পৌঁছেনি। বন্যার পানি সরে গেলেও বানভাসি মানুষের ভোগান্তি কমেনি। নেতৃবৃন্দ বন্যা দুর্গত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ী ঘর এবং রাস্তা ঘাট দ্রুত নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের জন্য সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : দক্ষিণ সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ, বিশ্বম্ভরপুর, বাংলাবাজার, হরিনা পাটি ও গঙ্গারচর এলাকার বন্যায় বিপর্যস্ত মানুষের মাঝে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর হযরত পীর সাহেব চরমোনাই’র পক্ষে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। আজ মঙ্গলবার এ সকল এলাকায় দলের সহকারি মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলমের নেতৃত্বে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। ত্রাণ বিতরণকালে নেতৃবৃন্দ বলেন, যেখানেই ত্রাণ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ক্ষুধার্ত মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। বন্যার্ত অসহায় মানুষের আহাজারি আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠছে। সরকারের ত্রাণের দেখা মিলছে না।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের দুর্যোগকালীন সহায়তা টিম-০২ সুনামগঞ্জ বিশ্বম্ভরপুর ও কিশোরগঞ্জ উপজেলার কর্চার হাওরের পাশ ঘেষে ফতেহপুর ইউনিয়ন, ফুলবড়ী, বিশ্বম্ভপুর,পিরোজপুর,গাইট্টা,বাহাদুরপুর, দক্ষিণ ভাদাঘাট ইউনিয়ন, শ্রীধরপুর, পলাশ ইউনিয়ন, কৃষ্ণনগর, মেরুয়াখলা, সড়কপার, গাজিরগাও ও আলীপুর এলাকার পানিবন্দি মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়।
ইসলামী ঐক্যজোট : ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব ও মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুল করিম এক বিবৃতিতে বলেন, সিলেট,সুনামগঞ্জ এলাকার বন্যা দুর্গত এলাকার অধিকাংশ ক্ষুধার্ত মানুষের ভাগ্যে কোন ত্রাণ জোটেনি। নেতৃদ্বয় বলেন, বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও অসহায় মানুষের ভোগান্তি কমেনি। তারা বন্যা দুর্গত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ী ঘর এবং রাস্তা ঘাট দ্রুত নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেয়ার জন্য সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
খেলাফত মজলিস : সিলেটে বন্যাদুর্গতদের মাঝে খেলাফত মজলিসের উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণকালে দলের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের আজ বলেছেন, সিলেট অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নতুবা মানবিক বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। তিনি বলেন, সিলেটের বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের জন্য সরকারের ত্রাণ তৎপরতা খুবই অপ্রতুল। অবিলম্বে বন্যাপ্লাবিত সিলেট অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে জরুরি ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করা ও চিকিৎসা সেবা ও পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
আজ দুপুরে খেলাফত মজলিস বালাগঞ্জ উপজেলার উদ্যোগে স্থানীয় মুরার বাজার আছিয়া কমিউনিটি সেন্টার ত্রাণ বিতরণ পূর্ব এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিকে আজ সকাল থেকে বন্যাদুর্গত সুনামগঞ্জের কয়েকটি স্পটে সংগঠনের যুগ্মমহাসচিব এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইনের নেতৃত্বে একটি টিম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের মাধ্যে খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়।
বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি : বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান শাহ্সূফী সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারীর নির্দেশে ও পৃষ্ঠপোষকতায় বিএসপি’র উদ্যোগে কুড়িগ্রামের রৌমারি ও অলিপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ২০০০ পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। আজ পার্টির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের কয়েকটি টিম ত্রাণ বিতরণ কাজে অংশ নেন। ত্রাণ বিতরণের সময় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, খলিফা আসলাম হোসাইন, মো. শরিফুর রহমান, মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন, মো. ফরহাদ মুন্সি, সোহেল মাহমুদ ভুঁইয়া।
ছাতক (সুনামগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, খেলাফত মজলিস ছাতক উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে বন্যায় দুর্গত মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। আজ ইউনিয়নের মাদরাসাবাজারে এলাকার ৩ শতাধিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মধ্যে এসব ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
ত্রাণ বিতরণী পূর্ব আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রিয় যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন।
ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, বন্যাকবলিত সিলেট কুড়িগ্রামে পানির স্তর কিছুটা কমে আসলেও সেখানে বসবাসরত লাখো মানুষ হারিয়েছে স্বাভাবিক জীবন যাপনের নূন্যতম সম্বল। সিলেট-কুড়িগ্রাম বানভাসি মানুষের কাছে আজ মঙ্গলবার জরুরি সহায়তা নিয়ে ফরিদপুর আলফাডাঙ্গা উপজেলা কওমি ওলামা ঐক্য পরিষদ পৌঁছেছে। সোমবার রাতে সংগঠনটির সদস্যরা দু’টি টীমে বিভক্ত হয়ে সিলেট ও কুড়িগ্রাম পৌঁছান। জরুরি সহায়তার মধ্যে বিভিন্ন নিত্য খাদ্য সামগ্রী, শিশু খাদ্য, খাবার পানি, ঔষুধ ও নগদ অর্থ রয়েছে। দু'টি স্থানে এসব জরুরি সহায়তা প্রদান করতে সাড়ে চার লক্ষ টাকা ব্যয় হবে বলে জানা গেছে।
সিলেট টীমের নেতৃত্বে থাকা আলফাডাঙ্গা উপজেলা কওমি ওলামা ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি মুফতি কুতুবউদ্দিন ফরিদী জানান, সিলেট জেলার জকিগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানের বন্যাদুর্গত পাঁচ শতাধিক পরিবারকে এ জরুরি সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।