Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নগর ভবনের আপত্তি ১০ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নে

বরিশাল মহানগরীর ৭টি মজাখাল

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০২২, ১২:০২ এএম

বরিশাল মহানগরীতে প্রবাহিত ৭টি মজা খাল ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প বাস্তবায়নে সিটি করপোরেশনের আপত্তির প্রেক্ষিতে কিছুটা বিপত্তি সৃষ্টি হলেও তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। পানি উন্নয়ন বোর্ড-এর প্রস্তাবনায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে নগরীর জেল খাল, সাগরদী খাল, চাঁদমারি খাল, ভাটার খাল, আমানতগঞ্জ খাল, পলাশপুর খাল ও রূপাতলী খাল সংস্কারসহ সৌন্দর্য বর্ধণে পরিকল্পনা কমিশন প্রায় ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করেছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পটির প্রথম পর্যায়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে খালগুলোর ১৮.৯০ কিলোমিটার এলাকা পুনঃখনন ও সংস্কারের দরপত্র আহŸান করে তা মূল্যায়ন পর্যায়ে রয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরিশাল পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।
আর্থিক ও কারিগরি মূল্যায়ন শেষে আগামী মাসেই এসব খাল সংস্কারের ঠিকাদারকে কার্যাদেশ প্রদান করা হতে পারে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে। আগামী অর্থবছরের মধ্যেই নগরীর ১৯ কিলোমিটার খাল সংস্কারের পরে তার দু’পাশে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণসহ সৌন্দর্য বর্ধনে ভিন্ন দরপত্র আহŸানের কথাও জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। যা আগামী বছরের ডিসেম্বর থেকে ২০২৪-এর মার্চের মধ্যে শেষ করার কথা রয়েছে। এসব খালের দুপাশে ওয়াকওয়েসহ বিশ্রামের জন্য বেঞ্চ নির্মাণ করা হবে।
তবে নগরীর এসব খালসমূহ সংস্কার ও সৌন্দর্য বর্ধনের প্রকল্পটি নিয়ে আপত্তির কথা জানিয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়ে পরবর্তী কার্যক্রম বন্ধ রাখতেও বলা হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে বিষয়টি নিয়ে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করে সিটি করপোরেশনকে জবাবও দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তরফ থেকে নগরীর ৭টি খাল সংস্কার ও সৌন্দর্য বর্ধন প্রকল্পটি বোর্ডের অনুমোদনের পরে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় হয়ে পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদন অনুযায়ী তা বাস্তবায়নের বিকল্প নেই বলে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক নগর পরিষদের পক্ষ থেকে নগরীর একাধিক খাল সংস্কারে প্রায় সোয়া ২০০ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্পÑপ্রস্তাবনা, ডিপিপি দাখিলের পরে তা পরিকল্পনা কমিশন থেকে ফেরত দেয়া হয়েছিল। বর্তমান নগর পরিষদ দায়িত্ব গ্রহণের পরে নগরীর ছোট বড় ৩৬টি খাল খনন, সংস্কার ও সৌন্দর্য বর্ধনে প্রায় ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকার আরেকটি ডিপিপি দাখিলের পরে পরিকল্পনা কমিশন থেকে তা অনুমোদন না করে প্রথম পর্যায়ে খালের সংখ্যা কমিয়ে প্রকল্প ব্যয় অর্ধেক করতে সিটি করপোরেশনকে দিকনির্দেশনা প্রদান করে। পাশাপাশি নিবন্ধিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পুরো প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা সমিক্ষাসহ নকশা প্রনয়ণেরও নির্দেশনা প্রদান করা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে পরিকল্পনা কমিশনের গাইড লাইন অনুসরন না করেই পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রকল্পব্যয় দ্বিগুনেরও বেশি বৃদ্ধি করে ২ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকার একটি ডিপিপি দাখিল করেন। ফলে তা আর পরিকল্পনা কমিশনের বিবেচনাই লাভ করেনি। উপরক্ত মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা কমিশন থেকে অসন্তোষ প্রকাশ করে ডিপিপিটি ফেরত পাঠায় বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
এরপর থেকে বরিশাল মহানগরীর খাল সমূহের উন্নয়নসহ সংস্কার কাজের আর কোনো গতি নেই। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রাথমিকভাবে নগরীর যে ৭টি খাল সংস্কারসহ সৌন্দর্য বর্ধনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, সে ব্যাপরে আপত্তি জানিয়ে নগর ভবন থেকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা জানান হয়েছে।
এব্যাপারে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মো. ফারুক আহমেদ জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্পভ‚ক্ত ৭টি সহ নগরীর ৪৬টি খাল খনন ও সংস্কারে ২৬শ’ কোটি টাকার একটি ডিপিপি পরিকল্পনা কমিশনের আর্থিক ও কারিগড়ি কমিটির মূল্যায়ন শেষে এখন একনেক-এর বিবেচনার জন্য রয়েছে। এ প্রেক্ষিতেই পানি উন্নয়ন বোর্ডকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের আগে সিটি করপোরেশনের সাথে কথা বলে সমন্বয়ের কথা বলা হয়েছে। প্রকল্প বাতিল করতে বলা হয়নি বলেও জানান তিনি।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ