Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজধানীতে কোরবানির পশুহাটের প্রস্তুতি চলছে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ জুন, ২০২২, ১২:০০ এএম

রাজধানীতে শুরু হয়েছে কোরবানির পশুহাটের প্রস্তুতি। পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি দুই সপ্তাহেরও কম সময়। তাই এখন স্থায়ী ও অস্থায়ী হাটগুলোতে বাঁশের খুঁটি, গেট বানানোসহ আণুষঙ্গিক মেরামতের কাজ চলছে। তবে এখনও পশু আসা শুরু হয়নি হাটে। এ বছর চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১০ জুলাই উদযাপিত হতে পারে পবিত্র ঈদুল আজহা। সে হিসেব করে ঈদের ৫-৬ দিন আগে থেকে হাটে গরু-ছাগল আসা শুরু করবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এ বছর রাজধানীতে মোট ১৯টি পশুর হাট বসবে। এর মধ্যে দু’টি হাট স্থায়ী। যেগুলোতে বছরের অন্য সময়গুলোতেও পশু বিক্রি হয়। স্থায়ী দুটি হাট হলো-ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) গাবতলী ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সারুলিয়া। এই দুই হাট ছাড়া বসানো হবে আরও ১৭টি অস্থায়ী হাট। এ জন্য দুই সিটি এরই মধ্যে ইজারা প্রদান কার্যক্রম শেষ করেছে। নিয়মানুযায়ী হাটে ঈদের দিনসহ মোট পাঁচদিন চলবে পশু বেচাকেনা। সে হিসাবে রাজধানীতে ৬ জুলাই থেকে বসবে অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট। ডিএসসিসির অধীনে ১০টি অস্থায়ী হাট হলো-লালবাগের রহমতগঞ্জ ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গা, পোস্তগোলা শ্মশানঘাটসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনালসংলগ্ন উন্মুক্ত জায়গা, শ্যামপুর-কদমতলী ট্রাকস্ট্যান্ডসংলগ্ন খালি জায়গা, উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজার মৈত্রী সংঘের ক্লাবসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, হাজারীবাগ এলাকায় ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি মাঠসংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, মেরাদিয়া বাজারসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, দনিয়া কলেজ মাঠসংলগ্ন খালি জায়গা এবং লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাবসংলগ্ন খালি জায়গাসহ কমলাপুর স্টেডিয়ামসংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের এলাকায় অস্থায়ী হাট বসবে।
ডিএনসিসির আওতায় যে ৭টি স্থানে অস্থায়ী পশুর হাট বসবে-বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং ব্লক-ই, এফ জি এইচ পর্যন্ত এলাকার খালি জায়গা, মিরপুর সেকশন-৬ ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা, উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টর এলাকার বৃন্দাবন থেকে উত্তর দিকে বিজিএমইএ পর্যন্ত খালি জায়গা, ভাটারা (সাইদনগর) পশুর হাট, কাওলা শিয়ালডাঙ্গাসংলগ্ন খালি জায়গা, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের ৩০০ ফিট সড়কসংলগ্ন উত্তর পাশের সালাম স্টিল, যমুনা হাউজিং কম্পানির ও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন খালি জায়গা এবং মোহাম্মদপুরের বছিলায় ৪০ ফুট রাস্তাসংলগ্ন খালি জায়গা।
রাজধানীতে কোরবানির পশু কিনতে সবচেয়ে বেশি ভিড় জমে গাবতলী পশুহাটে। এ জন্য এ হাটে আগেভাগেই প্রস্তুতি শুরু হয়। সরেজমিন দেখা যায়, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গাবতলী স্থায়ী পশুর হাট সাজানো হচ্ছে। প্রস্তুত করা হচ্ছে নতুন নতুন অস্থায়ী শেড। আকর্ষণীয় ডিজাইনে সাজানো হচ্ছে প্রধান ফটক। বসানো হচ্ছে ওয়াচ টাওয়ার। বিকাশ ও রকেটের মতো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের জন্য বুথ তৈরি করা হচ্ছে। বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে তৈরি হচ্ছে বিশাল ছাউনি। হাটের ভেতরের রাস্তা পরিষ্কার করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও অপ্রয়োজনীয় কাদামাটি অপসারণ করা হচ্ছে। একই সাথে গণশৌচাগারের আশপাশে মাটি ফেলে তা ব্যবহার উপযোগী করার কাজও চলছে।
একইভাবে খিলগাঁও রেলগেট বাজার মৈত্রী সংঘের ক্লাবসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা ও লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাবসংলগ্ন খালি জায়গার হাটেও দেখা গেছে, বাঁশ দিয়ে খুঁটি স্থাপন ও গেট তৈরির কাজ চলছে। এ ছাড়া একাধিক হাসিল ঘর তৈরি করা হচ্ছে। মাঠে কাদা ও উঁচ-নীচু জায়গা সমান করতে মাটি ফেলা হচ্ছে।
গাবতলী স্থায়ী পশুর হাট পরিচালনা কমিটির সদস্য সানোয়ার হোসেন বলেন, প্রতিবারের মতো এবারো প্রস্তুতি নিচ্ছি। কোরবানির হাট নিয়ে কোনো বিষয়েই গাফিলতির সুযোগ নেই। হাটে ব্যবসায়ীদের টাকা জমা দেয়ার ভোগান্তি কমাতে এবার কমপক্ষে ৫০টি হাসিল কাউন্টার তৈরি করা হবে। এছাড়া হাটে দেড় হাজার স্বেচ্ছাসেবী কাজ করবেন। গত কোরবানিতে হাসিল ছিল শতকরা সাড়ে তিন শতাংশ। তবে ঈদের পাঁচ দিন পাঁচ শতাংশ হাসিল আদায় করা হয়। একইভাবে এবারো হাসিল আদায় করা হবে।
তিনি বলেন, হাটের পশুর চিকিৎসা আর ব্যবসায়ীদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসায় বসানো হচ্ছে আলাদা চেম্বার। যেখানে পশু চিকিৎসকসহ বসবেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও। এ ছাড়া জাল টাকার লেনদেন প্রতিরোধে আনা হবে মেশিন।
এদিকে করোনা পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে থাকায় পশুর হাট এবার বেশ জমজমাট হবে বলে আশা করছেন হাট সংশ্লিষ্টরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার রমজানের পর থেকে গরুর দাম বাড়তি। কোরবানির হাটেও সেই প্রভাব থাকবে। পাশাপাশি সিলেট-সুনামগঞ্জ আর উত্তরাঞ্চলের বন্যার প্রভাবও পড়বে পশুর হাটে। অর্থাৎ গরুর দাম এবার বেশি হতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ