পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকার পাঁচটি এলাকায় ৭০০টি কেন্দ্রে কলেরার মুখে খাওয়ার টিকার ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। গতকাল রাজধানীর মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রের (আইসিডিডিআর,বি) সাসাকাওয়া মিলনায়তনে এই ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এই টিকাদান কর্মসূচি চলবে ২ জুলাই পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে ২৩ লাখ মানুষকে প্রথম ডোজ মুখে খাওয়ার কলেরা টিকাদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আমরা সকল বয়সের মানুষকে ডায়রিয়ার ওরাল ভ্যাকসিন দেব। ঢাকার সংক্রমণপ্রবন ৫টি এলাকার ২৩ লাখ মানুষকে এই টিকা দেব। আমরা প্রথমবারের মতো দেশে বড় পরিসরে এই ভ্যাকসিন দিচ্ছি। এর আগে ট্রায়ালে যেসব এলাকায় টিকা দিয়েছি সেখানে কলেরার প্রাদুর্ভাব একদম কমে গেছে। তিনি বলেন, একসময় কলেরা, ডায়রিয়ায় হাজার হাজার মানুষ মারা যেত। এখন তা হয় না। এর পেছনে সরকার ও আইসিডিডিআরবির গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে। সরকার সারা দেশে নিরাপদ পানি ও স্যানিটারির ব্যবস্থা করেছে। সরকার সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেছে। আমরা প্রতিটি জেলা, উপজেলা হাসপাতালে কলেরা-ডায়রিয়া ইউনিট চালুর নির্দেশ দিয়েছি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোাগ নিয়ন্ত্রণ) ও লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) প্রফেসর ডা. মো. নাজমুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, আইসিডিডিআর,বি-র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ, সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ও ইনফেকশাস ডিজিজেস ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র ডিরেক্টর ড. ফেরদৌসী কাদরী, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার ডেপুটি ডিরেক্টর ডা. মো. শফিকুল ইসলাম এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ, আইসিডিডিআর,বি, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন-সহ অন্যান্য দেশি ও বিদেশি সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা।
করোনা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ইদানীং করোনার সংক্রমণ বেড়েছে। আমরা আতঙ্কিত না হলেও চিন্তিত, তবে সতর্ক অবস্থায় রয়েছি। আমরা বেশি বেশি করোনা পরীক্ষার উপর গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা দ্বিতীয় ডোজ দেয়া প্রায় শেষ করেছি। আজকের (গতকাল) মধ্যে ৭০ ভাগ নাগরিকের দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শেষ হবে। যারা বুস্টার ডোজ টিকা এখনও নেননি তাদের টিকা নেয়ার আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে কলেরা টিকা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. মো. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিকদের কলেরা ভ্যাকসিনের দেয়ার দাবি জানিয়েছে। আপাতত তাদের কলেরা নেই, সনদ প্রদান করে বিদেশে পাঠাচ্ছি। ভবিষ্যতে আমরা শ্রমিকদের কলেরা ভ্যাকসিন দিয়ে দেশে বাইরে পাঠাবো।
তিনি বলেন, সব ডায়রিয়া বা সবসময় কলেরা মৃত্যু ঘটায় না। একসময় গ্রামের পর গ্রাম কলেরায় উজাড় হয়ে যেতো। এখন সেই অবস্থা নেই। অতীতে যেসব এলাকায় সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল আমরা সেসব এলাকায় কলেরা টিকা দিয়েছি। এবার যেহেতু রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় কলেরার সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। তাই আমরা এসব এলাকায় টিকা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।
অনুষ্ঠানে ড. ফেরদৌসী কাদরী জানান, বাংলাদেশে এপ্রিল থেকে মে এবং আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর, বছরে এই দুই বার তীব্র ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এবছর ঢাকায় মার্চ থেকে মে পর্যন্ত ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বিগত যেকোনও সময়ের তুলনায় অনেক গুণ বেশি ছিল। আক্রান্তদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি রোগীর বসবাস ঢাকার যাত্রাবাড়ী, দক্ষিণখান, সবুজবাগ, মোহাম্মদপুর এবং মিরপুর এলাকায়। তিনি জানান, আইসিজি প্রায় ৪৭ লাখ ৫০ হাজার মুখে খাওয়ার কলেরা টিকা প্রদানে সম্মত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সার্বিক সহায়তায় আইসিডিডিআর,বি ২৬ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত কলেরার টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করবে। এই কর্মসূচিতে আরও সহায়তা করছে জাতীয় সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ, আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও এমএসএফ। দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স, গ্যাভি-র আর্থিক সহায়তায় এই টিকাদান উদ্যোগ পরিচালিত হচ্ছে।
আগামী শনিবার পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রথম ডোজ কলেরা টিকাদান কর্মসূচি চলবে। যাত্রাবাড়ীর প্রায় ৫ লাখ, সবুজবাগের প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার, দক্ষিণখানের প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার, মিরপুরের প্রায় ৭ লাখ ৮০ হাজার এবং মোহাম্মদপুরের প্রায় ৪ লাখ অধিবাসীকে কলেরার টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে মাইকিং করা হচ্ছে। প্রায় ৭০০টি টিকাদান কেন্দ্রের মাধ্যমে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রতি এক হাজার বাড়ির জন্য একটি টিকা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ইপিআই কর্মসূচিতে ব্যবহৃত টিকাদান কেন্দ্র, সূর্যের হাসি ক্লিনিক রয়েছে।##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।