বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
স্বপ্নের পদ্মা সেতু নিয়ে এখনও আনন্দে ভাসছে পুরো দেশ। হাজার হাজার মানুষ এখন সেতুতে গিয়ে ভিডিও করে, সেলফি তুলে এই আনন্দঘন মুহূর্তে। এর মধ্যে এক যুবক খালি হাতে সেতুর রেলিংয়ের নাট খুলে ভিডিও আপলোড করেছেন। সেই ভিডিওকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়।
ভিডিওটিতে দেখা গেছে, এক যুবক পদ্মা সেতুর কংক্রিটের রেলিংয়ের ওপর দিয়ে লোহার রেলিংয়ের দুটি নাট খুলছেন। এই নাট দুটি দিয়ে লোহার রেলিংটি আটকানো রয়েছে কংক্রিটের রেলিংয়ের সঙ্গে। এরপর সেই যুবক নাট দুটি বাম হাত দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে খুলে ডান হাতে নেন এবং আবার বাম হতের ওপর রাখেন।
নাট দুটি খুলে হাতের ওপর রেখে বলেন ‘এই হলো আমাদের পদ্মা সেতু। আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু।’ এসময় পাশ থেকে আরেকজনকে বলতে শোনা যায়, ‘নাট খুলে ভাইরাল করে দিয়েন না।’
মুহূর্তেই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকে পক্ষে-বিপক্ষে মন্তব্য করতে থাকেন।
আহমেদ ফয়েজ নামে একজন লিখেছেন, সেতুর নাট হাতের মাধ্যমেই খোলা যায়, ভাবা যায় এটা। কিভাবে কর্তা ব্যক্তিরা নাট লাগিয়েছেন। যারা এ কাজে অবহেলা করেছেন তাদের প্রতি ধিক্কার।
মেহেদী নামে একজন লিখেছেন, তার এ কাজের দ্বারা সরকার জানতে পারলো কাজ ভালোভাবে করা হয়নি। তা নাহলে হাত দিয়ে কিভাবে এতো বড় নাট খুলে ফেললো? তবে, এখন থেকে ঠিক করে নাট-বল্টু লাগানো হোক।
হাবিবুর রহমান নামে একজন লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী দেখেন কিভাবে কাজ করছে আপনার লোকেরা। ঠিক মতো কাজ করেনি তারা। পদ্মা সেতুর যদি এ অবস্থা হয় আর বাকি সেতুর কি হবে।
আশিক মজুমদার নামে একজন লিখেছেন, একটি দেশের জাতীয় সম্পদ তথা কোটি মানুষের স্বপ্নকে নিয়ে তামাশা করা আসলে খুবই নেক্কারজনক। নাট-বল্টু খুলে জাতিকে কি আপনি দেখাতে চাচ্ছেন।
শেখ মিজান শেখ মিজান নামে একজন লিখেছেন, এর জন্য ইঞ্জিনিয়ারই দায়ি। কিভাবে নাট তিনি লাগালেন, ভালোভাবে দেখলেন না। ইঞ্জিনিয়ার সাহেবকে অতি দ্রুত গ্রেফতার করা হোক।
সুজন চন্দ্র নামে একজন লিখেছেন, নাটগুলো টাইট দেওয়া হোক।
আব্দুল কাদের মাসুম নামে একজন লিখেছেন, তোর কপালে অনেক কষ্ট আছে রে ভাই!
মো. আলমগীর হোসেন লিখেছেন, পদ্মা সেতুর প্রথম নাট-বল্টু খোলা ব্যক্তি সে। পদ্মা সেতু কত মজবুত একটু দেখেন, এতোটাই মজবুত যে খুব সহজেই নাট-বল্টু খুলে নিচ্ছে এক যুবক। লোকটার কপালে প্রচুর দুঃখ আছে।
জান্নাত ঐশী নামে একজন লিখেছেন, এসব ব্যক্তিদের কারণেই এ দেশের অবস্থা এতটা বাজে। কারণ তারা দেশের সম্পদ নষ্ট করে।
আরাফাত সানী নামে একজন লিখেছেন, ও একটা রাজাকারের বাচ্চা। তাকে আইনের আওতায় আনা হোক। তার বিচার বাঙালি জাতি দেখতে চায়।
মাসুদ খান নামে একজন লিখেছেন, তোমাদের জন্য দেশের সম্পদ অ-নিরাপদ।
মো. শাহ জামাল অপূর্ব নামে একজন লিখেছেন, আমার তো মনে হয় উনি ব্যক্তিগতভাবে প্রথমে রেঞ্জ দিয়ে নাট খুলছে, তারপর সেটা ভাইরাল হওয়ার জন্য ভিডিও করছে।
তারিক মাহমুদ নাসরুল্লাহ নামে একজন লিখেছেন, নাট-বল্টুসহ তাকে জাদুঘরে রাখা হোক।
মো. হেলাল উদ্দিন নামে একজন লিখেছেন, এটা প্রথমে রেন্স দিয়ে খুলেছে, তারপর হাত দিয়া খোলার অভিনয় করেছে। তার কু-মতলব আছে। সে বিএনপির লোক।
আদনান শহীদ নামে একজন লিখেছেন , অদ্ভুত মানুষ ভাই! একটা সদ্য নির্মিত সেতুতে ওঠে নাট-বল্টু টেনে খুলে পরীক্ষা করা কি উদাসীনতা, ফাজলামি নাকি মজা?
দেশের একটা জিনিসকে সুন্দর, অক্ষত ও পরিষ্কার রাখতে কি তোদের ভালো লাগে না? সরকার, রাষ্ট্র কিংবা ব্যক্তি উদ্যোগে যেভাবেই হোক না কেন জনগণের জন্য যখন কোনো কিছু তৈরি করা হয় তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কি আমাদের সবার না?
দুইটা লাইক-কমেন্টসের জন্য টিকটক বানাতে গিয়ে একটা সদ্য নির্মিত সেতুর নাট-বল্টু টেনে খুলতে হবে? তার নিজের মাথার নাট-বল্টু কি ঠিক আছে? প্রশাসনের উচিত হবে তদন্তসহ এ ধরনের সম্পদ নষ্টকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া।
এছাড়া অনেকেই তার শাস্তি কামনা করেছেন। আবার অনেকে বলেছেন, কিভাবে কর্তা ব্যক্তিরা নাট লাগিয়েছেন, তা তদন্ত করা হোক।
এরই মধ্যে নাট-বল্টু খুলে নিয়ে টিকটক ভিডিও করা বায়েজিদ নামের সেই যুবককে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে আটক করেছে পুলিশ। আজ রোববার (২৬ জুন) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন সিআইডির সাইবার ইন্টিলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।