Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মেঘনায় ভরা মৌসুমেও ইলিশের আকাল

লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শঙ্কা

এস এম বাবুল (বাবর), লক্ষ্মীপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ২৬ জুন, ২০২২, ১২:০১ এএম

লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় ভরা মৌসুমে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ছে খুবই কম। এবার চলিত বছর ইলিশের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ২৫ হাজার মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কাঙ্খিত মাছ না পাওয়ায় ঘাটগুলোতে অলস সময় পার করছেন জেলে ও আড়তদাররা। ইলিশের আকালে হতাশ স্থানীয় জেলেরা। প্রতিবছর এ সময় ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ে।
অথচ এবার লক্ষ্মীপুরে মেঘনা নদীতে ইলিশ ধরা পড়ছে খুবই কম। ইলিশের এমন দুর্দিনে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলেরা। এতে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন কাটছে জেলে পরিবারে। যেখানে গত বছর এক কেজির এক হালি ইলিশ কেনা যেু ৪ হাজার টাকায়, এবার এক কেজির এক হালি ইলিশ ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। মার্চ-এপ্রিলে নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ ছিল। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর মাছ শিকারের আসায় নদীতে ছুটছেন জেলেরা। কিন্তু রাত-দিন জাল টেনেও নৌকার তেল খরচ করা টাকার মাছও পাওয়া যাচ্ছে না। মাছ না পাওয়ায় ঘাটে অলস সময় পার করছেন জেলেরা।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলায় প্রায় ৫২ হাজার জেলে রয়েছে। তাদের মধ্যে নিবন্ধিত রয়েছে ৪২ হাজার জেলে। সবাই মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে থাকেন এখানকার জেলেরা। এসব এলাকার ছোট-বড় প্রায় ৩০টি মাছঘাটে আড়তদার ও জেলেরা মাছ না পাওয়ায় অলস সময় পার করছেন। খালি হাতে ফিরছেন জেলেরা। মেঘনা নদীতে নাব্যতা-সংকট ও ডুবোচরের কারণে সাগর থেকে ইলিশ আসতে বাঁধার মুখে পড়ছে। ফলে মেঘনায় মাছ ধরা পড়ছে না। চলতি মাস শেষে ইলিশ ধরা পড়বে, এমনটাই আশা।
জেলে সরাফত মাঝি, কালু মাঝি, মুন্সী ঢালীসহ অনেকে জানান, দিন-রাত নদীতে জাল ফেলে যে মাছ শিকার করছেন, তাতে ইঞ্জিনচালিত নৌকার তেলের খরচও মিলছে না। রোদ-বৃষ্টিতে নদীতে খাটলেও মিলছে না প্রত্যাশিত ইলিশ। এ পরিস্থিতিতে নদীতে যেতে আগ্রহ হারাচ্ছেন জেলেরা। বাজারে ইলিশের আমদানি কম। কিন্তু দাম অনেক চড়া। বর্তমানে জেলেরা পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।
সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাটের আড়তদার জিয়াউর রহমান মিন্টু ও কমলনগর মতিরহাট মাছঘাটের মৎস্যজীবী নেতা মেহেদী হাসান লিটন বলেন, গত বছর এমন মৌসুমে ঝাঁক ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়েছে। কিন্তু এবার নদীতে ইলিশ খুব কম। মৌসুমের শুরুতে ইলিশ না পেয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। মাছ ধরে জেলেরা আড়তে বিক্রি করবেন-এমন শর্তে দাদন নিয়েছেন। নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা না পড়ায় আড়তে মাছ আসছে না। জেলেরা দেনাও শোধ করতে পারছেন না। এবার দাদনের টাকা ওঠানো অসম্ভব হয়ে পড়বে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, নদীতে ডুবোচর ও নাব্যতা সংকটে ইলিশ চলাচলে বাধার সৃষ্টি হয়। প্রচুর বৃষ্টিপাত ও নদীতে পানি বাড়লে ইলিশ ধরা পড়বে। তবে এখন বৃষ্টি হচ্ছে।
গভীর সমুদ্র থেকে এখন নদীর মোহনায় ইলিশ আসবে।
আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ইলিশ ধরা পড়বে। এবার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ হাজার মেট্রিক টন, যা গত বছরের চেয়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন বেশি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ