Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাড়ি ফিরতে পারছে না মানুষ

দুর্গত এলাকায় কমছে পানি # আগামী তিনদিন বাড়তে পারে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা # ভারতের ঢলের প্রবল স্রোতে ভেসে গেছে বাড়ি ঘর, পানি কমায় শুধু ভিটে মাটির চিহ্ন দেখা যাচ্ছে # আশ্রয় শিবিরে খাদ্

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০২২, ১২:০০ এএম

দেশের কয়েকটি জেলায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। সেই সাথে ওই সব এলাকায় বন্যার্তদের দুর্ভোগ বাড়ছে। পানি কমে গেলেও নিজের বাড়িতে ফিরতে পারছেন না। সিলেট সুনামগঞ্জের অনেক এলাকায় ভারতের ঢলের প্রবল স্রোতে বাড়ি ঘর ভেসে গেছে। পানি কমার পর সেখানে এখন শুধু খালি ভিটে মাটির চিহ্ন টুকু দেখা যাচ্ছে। নতুন করে বাড়ি ঘর নির্মাণ করা ছাড়া তাদের আর মাথাগুঁজার কোন উপায় নেই। এদিকে পদ্মা এবং যমুনার পানি এখনো কয়েকটি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যার্তদের প্রতি বেশি নজর দিতে গিয়ে অবহেলিত রয়েছে উত্তরাঞ্চলের বানভাসীরা। গাইবান্দা, কুড়িগ্রাম, রংপুর এসব জেলার বন্যাকবলিত মানুষ ত্রাণ পাচ্ছে না। সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণায়ও পর্যপ্ত ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে না। এসব এলাকার ত্রাণ শিবিরে হাজার হাজার মানুষ ত্রাণের অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছে। প্রশাসন এবং সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কিছু কিছুু এলাকায় ত্রাণ দেওয়া হলেও এখনো অনেক এলাকার মানুষ ত্রাণ পাচ্ছে না। নৌ-যান দেখলেই মানুষ ত্রাণের আশায় ছুটে যাচ্ছে। বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাবে ডায়রিয়াসহ নানান রোগ দেখা দিচ্ছে। কিন্তু মানুষ কোন চিকিৎসা পাচ্ছে না। সারাদেশে বন্যায় আরও পাঁচ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এর মধ্যে সিলেটে একজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে মারা গেছেন চার জন। এর মধ্যে নেত্রকোণার কলমাকান্দা ও কেন্দুয়া উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ১৭ মে থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত মোট ৬৮ জনের মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৭৩। কিশোরগঞ্জের ১০ উপজেলায় পানিবন্দি এক লাখের বেশি মানুষ। ইতোমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গত এলাকার প্রায় ১৫ হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে শিশু খাদ্য ও সুপেয় পানির তীব্র সংকট রয়েছে। যমুনা নদীর পানি কমলেও সিরাজগঞ্জে এখনো পানিবন্দি প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। পানিবন্দি থাকায় জেলার ৮৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ আছে। গতকালও সিরাজগঞ্জের কাজিপুর পয়েন্টে যমুনার পানি বিপদসীমার ২৯ সেন্টিমিটার এবং হার্ড পয়েন্টে ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
এদিকে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, দেশজুড়ে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কিছুটা কমলেও আগামি তিনদিনে আবারও তা বাড়তে পারে। বন্যাকবলিত এলাকা ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, রংপুর ও সিলেটে গতকাল বৃষ্টিপাতের পরিমান ছিল হালকা। গত ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ ৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে মাদারীপুরে। এদিন ঢাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ১ মিলিমিটার। আগামী ২৪ ঘন্টায় রংপুর, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গাসহ রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।

 


সিলেট ব্যুরো জানায়, নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পানি কিছুটা কমেছে। গত চারদিন ধরে পানি কমতে শুরু করেছে সুরমা নদীর পানি। কুশিয়ারা অববাহিকতায় পানি বাড়ছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিভিন্ন পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছিল। কুশিয়ারার পানি বাড়ায় জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, ওসমানীনগর, বিশ্বনাথ, দক্ষিণ সুরমা, মৌলভীবাজারের বড়লেখা, কুলাউড়া, রাজনগর, জুড়ি, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরসহ নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সুরমা নদীর পানি কমতে থাকায় সিলেট-সুনামগঞ্জ ও সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়ক থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। সচল হচ্ছে যান চলাচল। সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। গতকাল নগরীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, বন্যাকবলিত পাড়া-মহল্লায় বেশিরভাগ এলাকায় পানি কমেছে। এখনো বাসাবাড়িতে ময়লা ও কালো পানি জমে আছে। স্থানীয়রা এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন।
সুনামগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, জেলার বন্যার কবল থেকে লাখো মানুষ মুক্তি পেলেও ক্ষুধার যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ হয়ে গ্রামাঞ্চলের মানুষের মাঝে হাহাকার দেখা দিয়েছে। সরকারি বেসরকারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হলেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন গ্রামাঞ্চলে পৌঁছছে না ত্রাণ সামগ্রী। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ড, আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ত্রাণ দেয়া হলেও প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থরা বঞ্চিত। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের মাধ্যমে সরকারি বরাদ্দ দেয়া হলেও সঠিকভাবে তা ব্যবহার হচ্ছে না বলে বানবাসিদের অভিযোগ। জেলার ১২টি উপজেলাতে ত্রাণ বিতরণের একই চিত্র দেখা যায়। কেউ পায় দুই তিন বার আবার কেউ একবারও পায় না। খালি হাতে সন্ধার পর বাড়ি ফিরছে। সঠিক সমন্বয় না থাকায় বানভাসিরা ত্রাণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ঘর হারিয়ে অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে ছেড়ে খোলা আকাশের নীচে স্ত্রী সন্তান নিয়ে মানবেতর জীনব যাপন করছেন
কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা জানান, জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। নদ-নদীর পানি কিছুটা কমলেও এখনও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তিস্তা, ধরলাসহ অন্যান্য নদী গুলোর পানি বিপৎসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় পানিবন্দি থাকার কারণে চরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। খাদ্য সংকটের পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি, জ্বালানি ও শৌচাগারের অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে অনেক এলাকার বন্যার্তরা। দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের সংকট। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম ইনকিলাবকে জানান, বন্যার্তদের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে, ত্রাণের কোন সমস্যা নেই। পর্যায়ক্রমে সবাই ত্রাণ পাবেন। জেলার বন্যার্তদের জন্য আরো ২০০ মেট্রিকটন চাল ও ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় ৫৩৮ মেট্রিকটন চাল, নগদ ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, এক হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য বাবদ ১৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ও পশু খাদ্য বাবদ ১৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা উপজেলা পর্যায়ে বরাদ্দ করা হয়েছে।
টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, যমুনা নদীসহ জেলার সবকটি নদীতেই কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। তবে জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলার শতাধিক গ্রামের বানভাসি মানুষজন এখনো পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। গতকাল জেলার ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নে লক্ষ্য করা যায়, ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে যমুনার পানি উঠে ঘর-বাড়ি তলিয়ে রয়েছে। অনেক পরিবার ঘর-বাড়ি ছেরে অন্যত্র চলে গেছে। আবার অনেকেই ঘরেই মাচা উঁচু করে তাতে চরম কষ্টে দিনপার করছেন। জেলা পাউবো’র তথ্য জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ী পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, জেলার যমুনা নদীর পানি কমলেও বাড়ছে বানভাসীদের দুর্ভোগ। বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও বন্যাকবলিত এলাকার বসতবাড়ি থেকে এখনও পানি নামেনি। ফলে বাড়ি ফিরতে পারছেন বানবাসিরা। সাথে বিশুদ্ধ পানি, খাবার সেলাইন ও ত্রাণ সামগ্রীর স্বল্পতা রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ হার্ডপয়েন্ট এলাকায় ১৫ সেন্টিমিটার ও কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। তবে এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যমুনার পানি। জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ ইনকিলাবকে জানান, বন্যার্ত মানুষের খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা স্ব স্ব উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও চেয়ারম্যানদের নিয়মিত তাদের খোঁজ-খবর রাখছেন।
হবিগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, উজান ভাটি দু’দিক থেকেই চাপে পড়েছে হবিগঞ্জ। কালনি-কুশিয়ারা হয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করছে। এতে জেলার ৭টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ৭ লাখ মানুষ। জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড তথ্য মতে, গত এক সপ্তাহ ধরে জেলায় বন্যার পানি আঘাত হানে। শুরুতেই বাড়তে থাকে কালনী, কুশিয়ারা, খোয়াইসহ বিভিন্ন নদীর পানি। কুশিয়ারা নদীর পানি প্রবল বেগে নবীগঞ্জ ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলা দিয়ে প্রবেশ করে। বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। মুহূর্তের মধ্যেই প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ এলাকা। ক্রমেই পানি বাড়তে থাকায় আক্রান্ত হয় বানিয়াচং, মাধবপুর ও লাখাই উপজেলা। সর্বশেষ গত বুধবার থেকে নতুন করে প্লাবিত হতে থাকে বাহুবল উপজেলাও। এদিকে প্রতিদিনই বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে খাদ্য সহায়তা দিয়ে চলেছেন জেলা প্রশাসকসহ কর্মকর্তারা। জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান ইনকলিবাকে জানান, জেলার ৭টি উপজেলা বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত বুধবার থেকে বাহুবল উপজেলায়ও পানি ঢুকতে শুরু করেছে। তিনি আরো জানান, বন্যায় আক্রান্তদের অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে আসেননি। তারা গবাদি পশু বা অন্যান্য জিনিসের কারণে বাড়ি ছেড়ে গ্রামের উঁচু জায়গায় অবস্থান নিয়েছেন।
ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, জেলা সদর উপজেলার পদ্মার তীরবর্তী এলাকায় গত বৃহস্পতিবার নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। এসময় নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নে বিশ্বাস ডাঙ্গিতে লক্ষ্য করা যায় পানিতে তলিয়ে যাওয়া ফসল কৃষকরা নিরাপদ যায়গায় নিয়ে যাচ্ছে। জেলার পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মায় ৩৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিপৎসীমার লেবেল ৮ দশমিক ৬৪ সেন্টিমিটার কিন্তু তা থেকে এখন ১৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি পেতে থাকলে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে যে কোন সময়। জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দীপক কুমার রায় ইনকিলাবকে জানান, ফরিদপুরে বন্যা মোকাবেলায় প্রশাসনের যথেষ্ট প্রস্তুুতি রয়েছে। বন্যা মোকাবেলায় আমরা ইতোমধ্যে ফরিদপুরের ৯টি উপজেলার ইউএনও কে ৭ টন করে ত্রাণ বরাদ্দ দিয়েছি, আশা করি বন্যা পরিস্থিতি খারাপ হলেও খুব একটা অসুবিধা হবে না।
কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, উপজেলায় পানি বৃদ্ধি এখনো অব্যাহত আছে। পানি বেড়ে কুলাউড়ায় রেললাইনে বন্যার পানি উঠেছে। বরমচাল ইউনিয়নের ফানাই-আনফানাই নদী এলাকায় ফানাই ব্রিজের মধ্যবর্তী স্থানে রেললাইন পানিতে ডুবে যাচ্ছে। ফলে সারাদেশের সাথে সিলেট অঞ্চলের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন শঙ্কা রয়েছে। এ রুটে প্রতিদিন ১২টি আন্ত:নগরট্রেনসহ ও মোট ১৪টি ট্রেন যাওয়া-আসা করছে। কুলাউড়া সহকারী স্টেশন মাস্টার হরিপদ সরকার ইনকিলাবকে মুঠোফোনে জানান, গত ৩ দিন থেকে ওই স্থানটিতে বন্যার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওই স্থানে রেললাইনের ১ ইঞ্চি উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানির স্রোতে কম থাকায় গতি কমিয়ে ট্রেন চলাচল অব্যাহত রয়েছে। তবে স্রোত বাড়লে ট্রেন চলাচল অব্যাহত রাখা যাবে কিনা তা আশঙ্কা রয়েছে।
ফুলপুর (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ফুলপুরে বন্যার পানিতে ভেসে আসা ইব্রাহিম খলিল নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে উপজেলার ভাটপাড়া মালিঝী নদীর বাইরাখালি ব্রিজ এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। ইব্রাহিম খলিল শেরপুরের নালিতাবাড়ি উপজেলার বালুঘাট এলাকার ইয়াকুব আলী মুন্সির ছেলে। ফুলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য জানান।
ছাতক (সুনামগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ভয়াবহ বন্যায় জেলার ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় নৌকা ডুবি, পানির প্রবল স্রোতে ভেসে, বজ্রপাত, বিদ্যুৎস্পৃষ্টসহ এ পর্যন্ত ২০জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৩ থেকে ২৩জুন পর্যন্ত তাদের লাশ উদ্ধার করে ধর্মীয় রিতিনিতি অনুযায়ী দাফন ও দাহ করা হয়েছে। নিহত পরিবারদের খবর নিচ্ছেনা প্রশাসন। ভয়াবহ বন্যা, প্রাণহানির বিষয়টি আড়াল করার চেষ্টাও করছেন রাজনীতিবিদ ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ লোকজন। ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান জানান, কাগজ কলমে তাদের কাছে একজনের মৃত্যুর খবর আছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুনুর রহমান এর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।



 

Show all comments
  • Lutfor Rahman ২৫ জুন, ২০২২, ৬:৫৮ এএম says : 0
    বন্যা একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং মানবিক বিপর্যয় । যা এক সময় কাটিয়ে উঠা যাবে। পদ্মা সেতু একটা বিশাল অর্জন যা দেশটাকে একটা মর্যাদা নিয়ে গেছে। যারা বন্যা এবং পদ্মা সেতু নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেন তারা এই সমস্ত উন্নয়নে খুশি নয়।
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Nazim Uddin Talukdar ২৫ জুন, ২০২২, ৬:৫৮ এএম says : 0
    সিলেট,জামালপুর,নেত্রকোনা সুনামগঞ্জ এর জনগণের এই বিপদ থেকে উদ্ধার হলে, তাদেরকে ডিসিশন নিতে হবে বিপদের সময় কারা তাদের পাশে ছিল কে তাদের প্রকৃত সহায়তা করছে? তাদেরকে পরবর্তীতে মনে রাখতে হবে। তারা এখন কতটা অসহায় আছেন একমাত্র তারাই বুঝতেছেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Sabirul Islam ২৫ জুন, ২০২২, ৬:৫৯ এএম says : 0
    বাংলাদেশে রাস্তা, ব্রিজ, সেতু ইত্যাদি তৈরি করতে কিলো প্রতি যে খরচ হয়, পৃথিবীর আর অন্য কোন দেশে খরচ হয় না। আর পাচার হওয়া অর্থ ফেরত নিয়ে আসার সম্ভাবনা ৩%
    Total Reply(0) Reply
  • Syed Enayet Hossain ২৫ জুন, ২০২২, ৬:৫৯ এএম says : 0
    সরকারি পর্যায়ে বন্যার্তদের সেবা ও মানবিক সহায়তা পুরো দমে চলছে। সরকারের কোনো গাফিলতি নেই। আবার দেশবাসীর সস্পদ পদ্মাসেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সফল করতেও নৈতিক দায়িত্ব পালনে কাজ চলছে তাতে নেতিবাচক কথা উপস্থাপন করার সুযোগ নেই। প্রকৃতির বৈরী আবহাওয়ার মোকাবিলা করেই আমাদের চলতে হবে। পদ্মাসেতু বিরোধী ও সরকারের সমালোচকদের মুখে কুলপ পড়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Ariful Islam ২৫ জুন, ২০২২, ৭:০০ এএম says : 0
    বিবেকের টানে, মনুষ্যত্বের টানে,,ভাত্রিত্তের টানে মানুষ ছুটে চলেছে সিলেটের দিকে,,,আর অমানুষ গুলো ছুটে চলছে আনন্দ উৎসব এর দিকে,,,,
    Total Reply(0) Reply
  • Sarwar Uzzal ২৫ জুন, ২০২২, ৭:০০ এএম says : 0
    দেশের জনগণের শ্রম ঘামের টাকা লুন্ঠন ও পাচার করে সুইচ ব্যাংকে রাখা হয়। অথচ দেশের মানুষ বন্যা ও দূর্নীতি এবং দ্রব্য মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে দিশেহারা।
    Total Reply(0) Reply
  • Sarwar Uzzal ২৫ জুন, ২০২২, ৭:০০ এএম says : 0
    দেশের জনগণের শ্রম ঘামের টাকা লুন্ঠন ও পাচার করে সুইচ ব্যাংকে রাখা হয়। অথচ দেশের মানুষ বন্যা ও দূর্নীতি এবং দ্রব্য মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে দিশেহারা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যায়


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ