Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মা-মেয়েসহ তিনজন খুন খুনি জামাই গ্রেফতার

বেকার স্বামীর নৃশংসতা

শেরপুর জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০২২, ১২:০২ এএম

বিয়ের ১৭ বছরেও সুখ মিলেনি মনিরার সংসারে। স্বামী রোজগার না করে নানাভাবে চালাতো নির্যাতন। তাই বাবার বাড়িতে চলে আসে মনিরা। স্বামীর বাড়িতে আর না যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো অস্ত্র নিয়ে বোরকা পড়ে কুপিয়ে খুন করে স্ত্রী, শাশুরি ও জেঠা শ্বশুরকে। আহত করে শশুরসহ তিনজনকে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গতকাল সকালে পুটল গ্রাম থেকে খুনি মিন্টুকে হত্যায় ব্যবহৃত দা ও চাকুসহ গ্রেফতার করে পুলিশ।

দুই মেয়ে আর দুই ছেলের সংসার জেলার শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের পটল গ্রামের মনু মিয়ার। বড় মেয়ে মনিরা বেগমকে ১৭ বছর আগে বিয়ে দেয় পাশ্ববর্তী গেরামারা গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে মিন্টু মিয়ার সাথে। তাদের ঘরে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। কিন্তু মিন্টু মিয়া আয় রোজগার করতো না। যে কারণে তাদের সংসারে ঝগড়া লেগেই থাকতো। অভাব অনটনের সংসারে নানা সমস্যা নিয়ে কথা বললেই নির্যাতন চালাতো মনিরার ওপর। এ জন্য গত ২ রমজান দুই সন্তানকে সাথে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে আসে মনিরা। পরবর্তীতে স্বামী মিন্টু মিয়া স্ত্রী-সন্তানদের বাড়ি ফেরার জন্য বললেও তারা বাড়ি ফিরেনি। এতেক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে মিন্টু। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার সময় সবাই বুঝে উঠার আগেই ক্ষুব্দ মিন্টু মিয়া বোরকা পড়ে শশুর বাড়ি এসে প্রথমে নিজ স্ত্রীকে কুপিয়ে ঘটনাস্থলেই খুন করে। এরপর একে একে শশুর মনু মিয়া, শাশুরি শেফালি, জেঠা শশুর মাহমুদ হাজী, শ্যালক শাহাদৎসহ ৬ জনকে কুপিয়ে আহত করে। হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যায় শাশুরি ও জেঠা শশুর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় অপর তিনজনকে ভর্তি করা হয় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এ ঘটনায় হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয় ওই বাড়িতে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, মিন্টু মিয়াই এ নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসছে। এতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী, এ হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক ও সর্বোচ্চ শাস্তি চায়।

কাকিলাকুড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. হামিদুল্লাহ তালুকদার বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান জানান, তাদের পারিবারিক কলহের বিষয়টি আমরাও জানি না। ইউনিয়ন পরিষদে বিচারও কখনো দেয়নি। কিন্তু এমন নারকীয় ঘটনায় আমরা হতবাক। এদিকে এ ঘটনার পরপরই পুলিশসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধারসহ অভিযুক্তকে গ্রেফতারে মাঠে নামেন।

শেরপুর পুলিশ সুপার হাসান নাহিদ চৌধুরীসহ জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটান্থল পরিদর্শন করেন। পুলিশ সুপার বলেন, এ ঘটনার সাথে জড়িতরা কোনভাবেই রেহাই পাবে না।

শ্রীবরদী থানার ওসি বিপ্লব কুমার দে জানান, আমরা সারারাত বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাই অবশেষে আমরা পুটল গ্রাম থেকে খুনি মিন্টুকে হত্যাকান্ডের সাথে ব্যবহৃত দা ও একটি চাকুসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা তার বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করছি এবং পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ