সাতক্ষীরার দেবহাটায় স্ত্রীর ডিভোর্স নোটিশ পেয়ে শ্বশুরকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে জামাতার বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দেবহাটা উপজলার মাটিকুমড়া গ্রামে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত কৃষক আজগার আলী সরদার ওই গ্রামের সুরত আলী সরদারের ছেলে।

নিহতের ছোট ভাই আক্তার হাসেন সরদার জানান, তার বড় ভাই আজগার আলীর ছোট মেয়ে শিল্পী খাতুনের সঙ্গে কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী ইউনিয়নের বরয়া গ্রামের মুজিবর রহমানের ছেলে সালাহউদ্দিনের দু’বছর আগে বিয়ে হয়। এরা সম্পর্কে আবার খালাতো ভাইবোন। সালাহউদ্দিন বেকার হওয়ায় বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে শিল্পীকে প্রায়ই নির্যাতন করত। এ নিয়ে কয়েকবার শালিস হয়েছে। এরপরও নির্যাতন বন্ধ না হওয়ায় ১০ দিন আগে শিল্পীকে বাড়িতে নিয়ে এসে সালাহউদ্দিনের ঠিকানায় ডিভোর্স নোটিশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সালাহউদ্দিন গত রোববার ও সোমবার গভীর রাতে শ্বশুর বাড়ির পাশে ঘোরাঘুরি করত। কখনো তাকে গাছের উপর উঠে বসে থাকতেও দেখা গেছে।
তিনি আরো জানান, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ভাত খেয়ে নিজের ঘরের বারান্দায় ঘুমিয়ে পড়েন ভাই আজগার। এরপর আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সালাহউদ্দিন মশারির উপর দিয়ে তার শ্বশুরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে চলে যায়। ভাইয়ের চিৎকার শুনে তিনিসহ স্থানীয়রা ছুটে এসে আজগার আলীকে রাত দুইটার দিকে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেন।
কিন্তু আজগর আলীর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সামেক হাসপাতালে ভর্তি না নিলে গতকাল বুধবার ভোর চারটার দিকে তাকে খুলনা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা চলাকালীন ভোর ৫টার দিকে আজগার আলী মারা যান।
ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল বিকেলে লাশ গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নিহতের স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন জানান, শ্বশুরকে হত্যার পর সালাহউদ্দিন ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে। সেজন্য খুনের আগেই ভারতীয় ভিসা প্রস্তুত করে সে। যেকোন সময় সালাহউদ্দিন ভারতে পালাতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।
দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ ওবায়দুল্লাহ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।