Inqilab Logo

রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ২৩ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সাভারে দিনে বিচ্ছিন্ন রাতে সংযোগ

স্টাফ রিপোর্টার সাভার থেকে : | প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০২২, ১২:০০ এএম

সাভারের বিভিন্ন এলাকায় দিনে সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান পরিচালনা হলেও রাতের মোটা অংকের বিনিময়ে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিচ্ছে একটি চক্র। আর এভাবেই সাভার-আশুলিয়া জুড়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগের রমরমা ব্যবসা চালাচ্ছে চক্রটি। এদিকে অবৈধ গ্যাস সংযোগের কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন বৈধ গ্রাহকরা। এক দিকে গ্যাসের চাপ যেমন কমে যাচ্ছে, অন্যদিকে বারবার খোঁড়াখুড়ির কারণে নষ্ট হচ্ছে রাস্তাঘাট। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি কর্তৃপক্ষের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ঠিকাদার এসব অবৈধ গ্যাস সংযোগের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, সাভার তিতাস গ্যাস ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাউসার আলীর নেতৃৃত্বে একটি চক্র এসব অবৈধ সংযোগ প্রদানের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখটাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। আর এদিকে প্রতি সপ্তাহে ঢাক ঢোল পিটিয়ে সরকারি অর্থ অপচয় করে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ অভিযান চললেও কোন সুফল মিলছে না।
অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার কাউসার ও তার লোকজন গ্যাস অফিসের কর্মকর্তা পরিচয়ে যেসব বৈধ সংযোগ ব্যবহারকারী অতিরিক্ত চুলা ব্যবহার করছে তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি জরিমানা এবং মামলার ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। বিভিন্ন ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলেও অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। এলাকাবাসী জানান, অভিযানে যেসব বাড়িতে অবৈধ সংযোগ ব্যবহারের প্রমান পাওয়া যায় ওইসব বাড়ির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাইজার খুলে নিয়ে আসে তিতাস কর্তৃপক্ষ। পরে তিতাস গ্যাসের ঠিকাদার কাউসার আলীর নের্তৃত্বে তার লোকজন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা বাড়ির কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে রাতের আধারে নি¤œ মানের রাইজার লাগিয়ে পুনরায় সংযোগ প্রদান করছে। এসব অবৈধ কর্মকান্ড নির্বিঘেœ পরিচালনার জন্য স¤প্রতি অসাধু ঠিকাদাররা একটি গ্রæপ তৈরি করেছেন। এই গ্রæপের সদস্যরা বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ সংযোগ প্রদানের পাশাপাশি বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে ঘুরে ঘুরে বিল বই চেক করে থাকে। এসময় অতিরিক্ত চুলা পেলেই প্রতি চুলার জন্য এক বছরের জরিমানা করে সংযোগ বিচ্ছিন্নের হুমকি দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করছে।
আশুলিয়া বাজার এলাকার নিউমার্কেট সংলগ্ন হাবিব ভিলার ৬ তলা ভবনে সাভার তিতাস গ্যাস অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বৈধ সংযোগের বিপরীতে অতিরিক্ত চুলা ব্যবহার করায় তাদের কাছ থেকে জরিমানা বাবদ নগদ ৪৭ হাজার টাকা নিয়েছে চক্রটি।
কিন্তু তিতাস গ্যাস অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাদের কোন কর্মকর্তা ওই এলাকায় ওইদিন অভিযানেই জায়নি।
এঘটনায় বাড়ির মালিক হাজী ন‚রুল ইসলামের দেয়া তথ্য থেকে জানা যায়, সাভার তিতাস গ্যাস ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাউসার আলীর নের্তৃত্বে কয়েকজন নিজেদের গ্যাস অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রথমে দুই লাখ টাকা দাবি করে। পরবর্তীতে দেন দরবার করে ৪৭ হাজার টাকায় রফাদফা করা হয়। এছাড়াও গত এক বছরে তিতাসের অভিযানে যতগুলো রাইজার কাটা হয়েছে তার বেশির ভাগই পুনরায় অবৈধভাবে সংযোগ দিয়েছে এই চক্রটি।
ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাউসার আলী সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন অবৈধ সংযোগ দেইনি। একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারণা করছে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের সাভার জোনাল অফিসের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু সাদাৎ মো. সায়েম বলেন, ঠিকাদার কাউসারের বিরুদ্ধে এর আগেও এধরনের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তার লাইসেন্সটি কালো তালিকাভূক্ত করা হয়েছে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. হারুনুর রশিদ মোল্লা বলেন, অবৈধভাবে সংযোগ গ্রহনকারীদের সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ প্রাথমিকভাবে সতর্ক করা হচ্ছে। এছাড়া যদি কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ