Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দী, মৃত ২

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০২২, ১০:১১ এএম

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটেছে। হু-হু করে বাড়ছে ব্রহ্মপূত্র ও ধরলা নদীর পানি। গত ২৪ঘন্টায় ব্রহ্মপূত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫৫ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার এবং ধরলায় সেতু পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দ্রুত পানি বৃদ্ধি পাওয়া নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দল্লাহ আল মামুন জানান, কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটেতে পারে।বন্যায় এখন পর্যন্ত ২জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জেলায় পানিবন্দী মানুষের সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। বন্যা কবলিতদের মাঝে শুকনা খাবার,বিশুদ্ধ পানি আর সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়াও বানভাসীদের মধ্যে পানিবাহিত চর্ম,ডায়রিয়া,জ¦র দেখা দিয়েছে।
কিন্তু বন্যা কন্ট্রোল রুমের দায়িত্ব প্রাপ্ত জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, জেলার ৯টি ৪৯টি ইউনিয়নের ২৮৪টি গ্রামের নি¤œাঞ্চলের ২৭হাজার ১৯৭টি পরিবারের ১লাখ ৮হাজার ৭৮৮জন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জেলার রাজিবপুর-৭টি,রৌমারী-৪৪টি চিলমারী-২৬টি, উলিপুর-২০টি,কুড়িগ্রাম সদর-১১টি,নাগেশ^রী এবং রাজারহাটে ১টি করে মোট ১১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং জেলার ২৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়,৭টি মাদ্রাসা এবং ১টি কলেজে সাময়িক পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
খামারবাড়ীর উপপরিচালক মো. আব্দুর রশীদ জানান, বন্যায় ১৩ হাজার ৭১১ হেক্টর ফসল নিমজ্জিত হয়েছে।
জেলা মৎস অফিসার কালিপদ রায় জানান, ব্রহ্মপূত্র ও ধরলা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সর্বশেষ ১১৬৩জন চাষীর ১২৫৭টি পুকুর/দীঘি/খামার ভেসে গিয়ে ১৭৮কোটি ৬২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
শনিবার দুপুরে উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের যমুনা সরকারপাড়া গ্রামের মাঈদুল ইসলামের কন্যা মাকসুদা জান্নাত (১১) এবং রবিবার দুপুরে রৌমারী উপজেলার যাদুর চর ইউনিয়নের দক্ষিণ কাঁন্দা পাড়া গ্রামের খলিলুর রহমানের দেড় বছরের ছেলে সন্তান সিয়াম বন্যার পানিতে পরে মারা গেছে বলে সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মনজুর এ মোর্শেদ জানান।
তিনি আরো জানান,বন্যার্তদের সহয়োগিতায় জেলায় মেডিকেল অফিসারের নেতৃত্বে ৮৫টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও ৯ উপজেলায় ৯টি মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগে একটি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। মেডিকেল টিমের সদস্যরা বন্যা কবলিত এলাকায় পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার স্যালাইন, কলেরা স্যলাইন ও প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র দিয়ে সহযোগিতা করছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, এখন পর্যন্ত বন্যায় ৩৩৮ মেট্রিকটন চাল, সাড়ে ১৬ লক্ষ টাকা ও ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও ১৮লক্ষ ৯৫ হাজার টাকার শিশু খাদ্য ও ১৭ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার গো-খাদ্য ক্রয় করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান,বন্যার প্রস্তুতি হিসেবে জেলা প্রশাসক দপ্তরে একটি সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। আজ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় সকল দপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রতিদিনের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য প্রদান করতে বলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২০ লক্ষ টাকা এবং ৪০৭ মেট্রিকটন চাল মজুদ রয়েছে। এছাড়াও আরো ৫০০ মেট্রিকটন চাল ও ২০লক্ষ টাকার চাহিদা দেয়া হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা পরিস্থিতি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ