বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সোমবার (২০ জুন) বিএম ডিপোতে অগ্নিকান্ডে হতাহত সকল পরিবারের সদস্যদের সাড়ে ৫ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকার চেক তুলে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান। এ সময় সীতাকুন্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকান্ডে নিহত ফায়ার সার্ভিসকর্মীদের প্রত্যেকের পরিবারকে ১৫ লক্ষ টাকা করে দিয়েছে বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে নিহত শ্রমিক ও চালকসহ অন্যদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা এবং অঙ্গ হারানো ব্যক্তির পরিবারকে ছয় লাখ টাকা, সাধারণ আহতদের চার লাখ টাকা করে দেয়া হয়েছে।
এ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মাহমুদ উল্লাহ মারুফের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চসিকের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, বিএম কন্টেইনার ডিপোর পরিচালক শফিকুর রহমান, স্মার্ট গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, যাদের লাশ এখনো চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি, সেই সব পরিবারকে ডিএনএ রিপোর্টের মাধ্যমে লাশ শনাক্ত করার পর সহায়তার অর্থ দেয়া হবে বলে জানিয়েছে ডিপো কর্তৃপক্ষ।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক বলেন, বিএম ডিপোর ঘটনার পর শুধু প্রশাসন নয়, চট্টগ্রামের জনসাধারণ একযোগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। চট্টগ্রামকে যে, ‘বীর চট্টলা’ বলা হয়, এর মাধ্যমে সেটা প্রমাণ করেছে পুরো চট্টগ্রামবাসী। তিনি বলেন, বিএম ডিপোতে রাত ৯টায় আগুন লাগে। রাত পৌনে ১০টায় বিএম ডিপোর ঘটনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী জানেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষনিক সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরকে নির্দেশনা দেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনীসহ সবাইকে দূর্যোগ মোকাবিলায় তাৎক্ষনিক পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কারণেই এতো বড় দূর্যোগ মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে।
মমিনুর রহমান বলেন, এ দুর্ঘটনায় বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষ এ পর্যন্ত যত প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সব প্রতিশ্রুতি রেখেছেন। তারা হতাহতদের পরিবারকে সহযোগিতার যে আশ্বাস দিয়েছে, সেটা এরই মধ্যে প্রতিপালন করছেন। আশা করবো আগামীতেও যেসব আহত ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নেবেন। যাদের পরিবারে কর্মক্ষম ব্যক্তি নেই, সেই পরিবারের ভবিষ্যতে ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবেন।
এ সময় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর নিহত ১০ জন ও নিখোজ ৩ জনকে ১৫ লাখ টাকা, গুরুতর আহত ৯ জনকে ১০ লাখ টাকা, সাধারণ আহত ৫ জনকে ৬ লাখ টাকা ও প্রাথমিক চিকিৎসা প্রাপ্ত ৩ জনকে ২ লাখ টাকা করে দেয়া হয়। বিএম ডিপোর নিহত ৯ জনের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা, গুরুতর আহত ৩ জনকে ৬ লাখ টাকা এবং সাধারণ আহত ১৯ জনকে ৪ লাখ টাকা করে প্রদান করা হয়। এছাড়াও অন্যান্য নিহত ৪ জনকে ১০ লাখ টাকা ও আহত ৪ জনকে ৪ লাখ টাকা করে প্রদান করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে মোট ৬৯টি চেক এর মাধ্যমে মোট ৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে।
বিএম ডিপোর মালিকানা প্রতিষ্ঠান স্মার্ট গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী বলেন, বিএম কন্টেইনার ডিপোর দুর্ঘটনায় নিজেদের জীবনের মায়া ত্যাগ করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভাতে গিয়ে অনাকাঙক্ষিত দুর্ঘটনায় অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়াও অনেকে প্রাণ হারিয়েছে। তারা শহীদ হয়েছে। এতো বড় একটি দুর্ঘটনার পড়েও বিএম ডিপো হতাহত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। সবার সহযোগিতায় বিএম ডিপো আবারও তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।