Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নেত্রকোনা জেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, বানভাসী মানুষের দুর্ভোগ চরমে

নেত্রকোনা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২০ জুন, ২০২২, ৭:১১ পিএম

টানা ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, বারহাট্টা ও খালিয়াজুরী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েয়ে।


স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রশাসন সাথে কথা বলে জানা যায়, টানা ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে নেত্রকোনা জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা দূর্গাপুর, কলমাকান্দা, বারহাট্টা ও খালিয়াজুরী উপজেলার ৬৩টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে অসংখ্য রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে। অসংখ্য পুকুর পানিতে তলিয়ে ভেসে গেছে মাছ। সবচেয়ে বেশী খারাপ অবস্থা কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, বারহাট্টা ও খালিয়াজুরী উপজেলা। বন্যায় গ্রামীন সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ও বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে যাওয়ায় বিভিন্ন ইউনিয়নের সাথে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে প্রায় সাড়ে ১০ লক্ষাধিক মানুষ। বানভাসী মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। বানভাসী সাধারণ মানুষের অভিযোগ, তারা প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী পাচ্ছে না।

স্থানীয় প্রশাসন বন্যা দুর্গতদের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ৩২৯টি আশ্রয় কেন্দ্র খুলেছে। এ সব আশ্রয় কেন্দ্রে ১ লাখ ১৫ হাজার ৯ শত ২৩ জন আশ্রয় নিয়েছে।

নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত জানান, টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে নেত্রকোনা জেলার কংশ নদীর জারিয়া পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে কলমাকান্দা উপজেলার উব্দাখালি ও মহাদেও নদীর পানি বিপদসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। খালিয়াজুরীর ধনু নদের পানি ৬০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সোমেশ্বরী নদীর বিজয়পুর পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ২৫৯ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে, দুর্গাপুর পয়েন্টে ৩১২ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ ও ১৯ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী সমন্বিতভাবে নেত্রকোণা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার বন্যা কবলিত বিভিন্ন স্থান ও আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পুনর্বাসিত মানুষের সার্বিক পরিস্থিতি তদারকি করেন ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার ও ত্রান সামগ্রী বিতরণ করেন।

এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোণার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী, খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসিন খন্দকার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুজিবুর রহমানসহ অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, সেনাবাহিনীর সদস্যবৃন্দ।

এ ব্যাপারে নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান বলেন, নেত্রকোনা জেলায় বন্যা দূর্গতদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত ১৩ লক্ষ নগদ টাকা, ৩ শত ৩৩ মেট্রিক টন চাল ও ৪ হাজার ৯ শত ৫০ প্যাকেট বরাদ্দ পাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বন্যা দুর্গত লোকজনের মাঝে ১ শত ৩১ মেট্রিক টন চাল, ৩ লক্ষ ৫ হাজার টাকা ও ২ হাজার ৩ শত শুকনো খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ