Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বন্যায় লন্ডভন্ড জকিগঞ্জ, পাউবোর গাফিলতিতে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত

বাড়ছে সুরমা কুশিয়ারার পানি

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৯ জুন, ২০২২, ৯:৪৬ পিএম

বর্ষণ ও ভারতের উজানের ঢলে সিলেট জকিগঞ্জের সুরমা নদীর ডাইক উপচে ও ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে অন্ততপক্ষে শতাধিক গ্রাম। আজ রোববার (১৯ জুন) সন্ধ্যা ৬টায় আমলশীদ সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৭৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে জকিগঞ্জ-সিলেট সড়ক। বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে উপজেলায় খোলা হয়েছে একটি কন্ট্রোল রুম ও ৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র। বন্যার্ত মানুষের জন্য ৩০ টন চাল ও দেড়লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এক মাসের ব্যবধানে জকিগঞ্জে আবারও বন্যা সৃষ্টি হওয়ার পেছনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফলতিকে দায়ী করছেন সাধারণ মানুষ। আজ উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবীদগণের তোপের মুখে পড়েন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাগণ। পাউবো কর্মকর্তাদের গাফলতির কারণে একমাসের ব্যবধানে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় পাউবো কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেছেন জনপ্রতিনিধিগণ।

বিভিন্ন এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বারহাল ইউপির সুরমা নদীর কয়েকটি স্থানের ডাইকের উপর দিয়ে পানি লোকালয়ে এসে বাড়িঘরে প্রবেশ করছে। আটগ্রামের বড়বন্দ এলাকার ভাঙা ডাইক দিয়েও পানি প্রবেশ করছে। বিরশ্রী ইউপির সুপ্রাকন্দী গ্রামে দুটি ভাঙন, গড়রগ্রামে একটি ভাঙন, পূর্ব জামডহর গ্রামে একটি নতুন ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। জকিগঞ্জ ইউপ’র রারাই গ্রামের পুরাতন ভাঙন বড় হয়েছে। লালোগ্রামে কুতুব উদ্দিনের বাড়ির পাশে ডাইকের অবস্থা নাজুক। সুলতানপুর ইউপির ভক্তিপুর গ্রামে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। বারঠাকুরী ইউপির পিল্লাকান্দী গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমলশীদ ত্রিমোহনার পুরাতন ভাঙন দিয়েও পানি লোকালয়ে ঢুকার আশঙ্কা আছে। কসকনকপুর ইউপির হাজীগঞ্জ এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। মানিকপুর ইউপিতে ভাঙন রয়েছে। জকিগঞ্জ পৌর এলাকার কেছরী ও মাইজকান্দী এলাকার ডাইক খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ডাইকের উপর দিয়ে পানি লোকালয়ে আসার খবর পাওয়া গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যনুযায়ী পুরো জকিগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ৩৮টি স্থানের ডাইক দিয়ে পানি লোকালয়ে আসছে। নদীর তীরবর্তী এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, সুরমা-কুশিয়ারায় পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বন্যা কবলিত এলাকার গ্রামীণ সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যহত হয়েছে। জকিগঞ্জ-সিলেট সড়কের ফলাহাটে পানিতে তলিয়ে গেছে সিলেটের সঙ্গে চলাচলের প্রধান সড়ক। বন্যার পানিতে সময় সময় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বন্যাকবলিত অনেক এলাকার লোকজন এখনো কোন ত্রাণ সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ করেন। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। গৃহপালিত পশুপাখি নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন লোকজন। বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম ফয়সাল।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডিই নিলয় পাশা জানান, গত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া ডাইক মাটির অভাবে দ্রুত মেরামত করা যায়নি দাবী করে বলেন, আমরা মেরামতের চেষ্ঠা করেছিলাম কিন্তু ডাইকের পাশে মাটি পাইনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ