বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় এক মাদরাসা ছাত্রকে নির্মমভাবে খুনের তিন মাস পর এর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতার করা হয়েছে খুনের সঙ্গে জড়িত ওই মাদরাসার কিশোর দুই ছাত্রকে। খুনের দায় স্বীকার করে দুই ছাত্র গতকাল রোববার চট্টগ্রামের একটি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। একইসঙ্গে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী হিসেবেও দুই ছাত্র আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।
পিবিআই জানিয়েছে, তুচ্ছ বিষয়ে ক্ষোভ থেকে মাদরাসার ভেতরে ওই ছাত্রকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। গত ৫ মার্চ উপজেলার চরণদ্বীপ ইউনিয়নে আল্লামা অছিয়র রহমান মাদরাসার দোতলায় স্টোররুম থেকে ওই ছাত্রের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ইফতেখার মালিকুল মাশফি (৭) চরণদ্বীপ ইউনিয়নের ফকিরাখালী গ্রামের প্রবাসী আব্দুল মালেকের ছেলে। সে ওই মাদরাসার হেফজখানা বিভাগের কায়দা শাখার ছাত্র ছিল। এ ঘটনায় মাশফির মামা মাসুদ খান বাদী হয়ে বোয়ালখালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলায় পুলিশ তিন শিক্ষককে গ্রেফতার করে। তারা হলেন- হাফেজ জাফর আহমদ, হাফেজ মো. রুস্তম আলী ও শাহাদাত হোসেন। জাফরকে রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। তবে খুনের রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। এ অবস্থায় গত ১০ এপ্রিল পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পায় পিবিআই।
চট্টগ্রাম জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান জানান, তদন্তভার পাওয়ার পর তারা সিদ্ধান্ত নেন, যেহেতু হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে প্রযুক্তিগত কোনো ক্লু নেই, মাদরাসার সকল শিক্ষক ও ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। গত ১৪ জুন পিবিআইয়ের একটি টিম মাদরাসায় গিয়ে বেশকিছু শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
গত শুক্রবার পিবিআই টিমের কাছে তথ্য আসে যে, একজন ছাত্র খুনের ঘটনা স্বচক্ষে দেখেছেন এবং সে বিষয়টি জানাতে রাজি হয়েছে। অভিভাবকের মাধ্যমে শুক্রবার রাতে ১০ বছর বয়সী হেফজ বিভাগের ওই ছাত্রকে পিবিআই কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ওই ছাত্র জানায়, তার সঙ্গে আরও একজন সহপাঠী ঘটনা দেখেছে। অভিভাবকের মাধ্যমে তাকেও এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই টিম। দু’জনের বর্ননা অভিন্ন হওয়ার পর তাদের তথ্য অনুযায়ী ঘটনায় জড়িত দুই ছাত্রকে শনিবার আটক করে পিবিআই কার্যালয়ে আনা হয়। দু’জনের বয়স ১৫ বছর। তারা ওই মাদরাসার সবচেয়ে সিনিয়র তিন ছাত্রের মধ্যে দু’জন। জিজ্ঞাসাবাদে দু’জন হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে বলে জানান পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান।
দুই ছাত্র জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, নিহত মাশফি এবং তাদের বাড়ি একই এলাকায়। মাশফির জন্য তার বাসা থেকে মাঝে মাঝে রান্না করা খাবার পাঠাত। এই দু’জন সেই খাবার জোরপূর্বক খেয়ে ফেলত। মাশফি তার বড় ভাইকে বিষয়টি জানায়। তখন বড় ভাই ক্ষুব্ধ হয়ে মাদারাসায় এসে দু’জনকে বকাঝকা করে এবং তিনি বিষয়টি শিক্ষক জাফরকেও জানিয়ে দেন। জাফরও তাদের ধমক দেয়। এতে দু’জনের ক্ষোভ জমে মাশফির ওপর। সেই ক্ষোভ থেকেই হত্যাকাণ্ড। হত্যাকাণ্ডে জড়িত ওই দুই কিশোরের নাম প্রকাশ করেনি পিবিআই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।