প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
অভিনেত্রী শাহ হুমায়রা হোসেন সুবাহকে নির্যাতনের অভিযোগে করা যৌতুকের মামলায় গায়ক ইলিয়াস হোসাইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত। অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হল। আজ (১৯ জুন) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭’র বিচারক আবেরা সুলতানা খানম আসামির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রাইব্যুনালের পেশকার ইসতিয়ার আলম জনি।
এর আগে চলতি বছরের (২০২২) ৩ জানুয়ারি যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগে ইলিয়াসকে আসামি করে রাজধানীর বনানী থানায় মামলা করেন সুবাহ। এতে ঘড়ি, স্বর্ণের আংটি, গলার চেইন ও কাপড়ের জন্য ইলিয়াসকে টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়। চলতি বছরের মার্চে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের উপ-পরিদর্শক মাসুমা আফ্রাদ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২৯ মে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছিলেন বিচারক। একই সঙ্গে মামলার চার্জ গঠনের জন্য ১৯ জুন দিন ধার্য করেন।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, সুবাহ একজন অভিনয়শিল্পী এবং আসামি ইলিয়াস একজন কণ্ঠশিল্পী। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে তাদের পরিচয়। পরিচয়ের সূত্র ধরেই প্রেমের সম্পর্ক। পরে দুই পরিবারের সম্মতিতে ওই বছরের ১ ডিসেম্বর ইসলামী শরীয়া মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ইলিয়াসের চাহিদা অনুযায়ী যৌতুক হিসেবে ১২ লাখ টাকা দামের রোলেক্স ব্র্যান্ডের একটি ঘড়ি, ২৫ হাজার টাকা মূল্যের আরেকটি ঘড়ি, এক লাখ টাকার স্বর্ণের আংটি, গলার চেইনের জন্য ৫০ হাজার টাকা এবং বিয়ের কাপড় বাবদ দুই লাখ টাকা দেওয়া হয়। এতে সন্তুষ্ট না হয়ে সুবাহর কাছে ফ্ল্যাট কেনার জন্য ৫০ লাখ টাকা ও গাড়ি কেনার জন্য ৩০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন ইলিয়াস। এছাড়া সুবাহর মায়ের কাছে যৌতুক হিসেবে ইউটিউব চ্যানেল কেনার জন্য ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। তখনও ইলিয়াসকে আড়াই লাখ টাকা দেওয়া হয়।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, সুবাহ জানতে পারেন ইলিয়াস একাধিক বিয়ে করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুবাহকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন তিনি। এরপর একই বছরের (২০২১ সাল) ২৭ ডিসেম্বর ইলিয়াস যৌতুক হিসেবে আরও ৮০ লাখ টাকা দাবি করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া চলছিলো। এর জেরে ইলিয়াস কাচের গ্লাস ভেঙে তার ভাঙা অংশ দিয়ে সুবাহকে মারতে যান। তখন সুবাহ থামাতে গেলে তার বাম হাত জখম হয়। পরবর্তী সময়ে ইলিয়াস বিষয়টি নিয়ে সুবাহর কাছে ক্ষমা চান এবং এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেন। এরপরও সুবাহর কাছে ইলিয়াস ফের টাকা দাবি করেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, পরের দিন ২৮ ডিসেম্বর ইলিয়াস আবার সুবাহর কাছে ৮০ লাখ টাকা দাবি করেন। এতে সুবাহ অস্বীকৃতি জানালে ইলিয়াস এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি, লাথি মারেন এবং চুলের মুঠি ধরে দেওয়ালের সঙ্গে ঠুকে জখম করেন। অসুস্থ হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন সুবাহ। মেডিকেল সনদপত্রে সুবাহকে মারপিট করে সাধারণ জখম করার বিষয়টি প্রকাশ পায়।
তদন্তকালে ইলিয়াসের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী/২০০৩) এর ১১(গ) ধারায় অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।