বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
উজানের পাহাড়ি ঢল ও অবিরাম বৃষ্টির ফলে কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ইতিমধ্যে কিছুস্থানে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে।
জানা যায়- গত কয়েকদিনের আবিরাম বৃষ্টির ফলে ও উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নেমে আসার কারনে কুশির্য়্াা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় কুশিয়ারা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে বন্যার পানি প্রবেশ করছে। উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের বান্দেরবাজার-কসবা সড়ক ডুবে দ্রুত গতিতে পানি প্রবেশ করছে কসবা গ্রাম, কসবা বাজারসহ কয়েকটি গ্রামে পানি প্রবেশ করছে। দীঘলবাক ইউনিয়নের রাধাপুর, ফাদুল্লাহ, দুর্গাপুর, মথুরাপুর,হোসেনপুর, মাধবপুর, পশ্চিম মাধবপুর, গালিমপুর, আউশকান্দি ইউনিয়নের পাহাড়পুর,পারকুল, উমরপুর, দীঘর ব্রাহ্মণগ্রাম, করগাঁও ইউনিয়নের শেরপুর, পাঞ্জারাই, গুমগুমিয়া গ্রামের নি¤œাঞ্চল, বড় ভাকৈর (পশ্চিম) ইউনিয়নের সোনাপুর , চরগাঁওসহ কয়েকটি গ্রাম, বড় ভাকৈর (পূর্ব) ইউনিয়নের নি¤œাঞ্চল বন্যার পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে।
পানি দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় ভয়াবহ রূপ আকার ধারণ করছে বন্যা, মানবেতর জীবনযাপন করছেন সাধারণ মানুষ। দিশেহারা অসহায় মানুষজন ছুটছেন নিরাপদ আশ্রয়স্থলে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ১৬টি আশ্রয় কেন্দ্রে আড়াই‘শ পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়- দুর্গাপুর গ্রামের পাকা সড়ক, দীঘলবাক গ্রামের পাকাসড়কসহ ১৫-২০ টি পাকা সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের বান্দেরবাজার-কসবা সড়ক ডুবে দ্রুত গতিতে পানি প্রবেশ করছে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ইনাতগঞ্জ অবস্থিত এশিয়া মহাদেশের অন্যতম গ্যাসক্ষেত্র বিবিয়ানা ও পারকুলে অবস্থিত কুশিয়ারা নদী ঘেঁষা বিবিয়ানা ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে। বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র হতে ২-৩ হাত নিচে বর্তমান পানি রয়েছে। তবে দ্রুতহারে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্যাসক্ষেত্রে পানি প্রবেশের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নোমান হোসেন বলেন- বন্যার পানি ইনাতগঞ্জের প্রতিটি গ্রামে প্রবেশ করেছে। বন্যার পানি সড়ক ডুবে দ্রুতহারে প্রবেশ করছে। পানিবন্দি মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তিনি বলেন- যে হারে পানি প্রবেশ করছে এবং পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এতে বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে পানি প্রবেশের সম্ভবনা রয়েছে।
শেভরন বাংলাদেশের মুখপাত্র শেখ জাহিদুর রহমান বলেন- বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র সুরক্ষিত রাখতে এবং যাতে ভিতরে পানি প্রবেশ করতে না পারে এজন্য আমাদের টিম কাজ করছে। আশা করছি গ্যাসক্ষেত্রের ভিতরে পানি প্রবেশ করবেনা।
এ প্রসঙ্গে হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানেওয়াজ তালুকদার বলেন- পূর্ববাস অনুযায়ী পানি বৃদ্ধির সম্ভবনা রয়েছে, আমরা বন্যার পানি প্রবেশরোধ করার চেষ্টা করছি, ভারতের বৃষ্টি যদি বন্ধ হয় তাহলে অবস্থার উন্নতি হবে।
হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিনহাজ আহমেদ শোভন বলেন, 'টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুশিয়ারা-কালনী ও খোয়াই নদীর পানি ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। নবীগঞ্জে বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করছে । পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
নবীগঞ্জ উপজেলা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) উত্তম কুমার দাশ বলেন- সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে, পানি দীঘলবাক ও ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নে প্রবেশ করছে। পানিবন্দি অবস্থায় যারা আছেন তাদেরকে উদ্ধারে প্রত্যেকটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যানদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী বলেন- আমরা সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করছি, উজানের বৃষ্টি বন্ধ না হলে আমাদের উপজেলার অবস্থা আরও ভয়াবহের দিকে দাবিত হবে, আল্লাহ‘র উপর ভরসা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন বলেন, উজানের ঢলে কুশিয়ারা নদীর বৃদ্ধি পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে উপজেলার শতাধিক গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।নৌকা প্রস্তুত হয়েছে। বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে শুকনো খাবার দেয়া হচ্ছে। ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।