Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

যমজ শিশুদের আগলে রেখে প্রাণ হারিয়েছেন মা

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ জুন, ২০২২, ১০:৩০ এএম

চট্টগ্রাম মহানগরীর আকবর শাহ থানাধীন ঘোনায় পাহাড়ধসে মাটিচাপা পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন শাহীনুর বেগম (৩০)। গত শুক্রবার (১৭ জুন) পাহাড়ধসে শাহীনুর মারা গেলেও অলৌকিকভাবে বেঁচে যায় তার ছয় মাস বয়সী যমজ সন্তান। নিজের মৃত্যু জেনেও শেষ পর্যন্ত শাহীনুর বুকে আঁকড়ে ধরেছিলেন যমজ সন্তান তাসকিয়া ইসলাম তানহা ও তাকিয়া ইয়াসমিন তিন্নিকে।

এ ছাড়াও দুর্ঘটনার রাতে খালার বাসায় থাকায় প্রাণে বেঁচে যায় শাহীনুরের বড় ছেলে তরিকুল ইসলাম তানিম।

পাহাড়ধসের পরপরই তাদের উদ্ধার করেন স্থানীয় লোকজন। উদ্ধারকারীদের একজন আশিক বলেন, পাহাড়ধস হয়েছে জেনে দ্রুত তাদের ঘরে যাই। এ সময় শাহীনুরের বোন মাহিনুর (২০) মাটির নিচে চাপা থাকলেও শাহীনুরের এক পা আটকে ছিল। তখনো শাহীনুরের বুকেই ঘুমিয়ে ছিল দুই শিশু। পরে দুই শিশুকে উদ্ধার করা হয়। যখন দুই শিশুকে উদ্ধার করা হয়, তখনও শাহীনুরের নিশ্বাস, শরীরেও উঞ্চতা ছিল। মাটি সরিয়ে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

উদ্ধারকারী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, `শাহীনুরের শ্বশুরবাড়ি মীরসরাইয়ে। দুই বাচ্চা গর্ভে থাকাকালে মায়ের বাসায় আসেন। এখানে হাসপাতালে যমজ বাচ্চা হয় তার। প্রসব পরবর্তী সেবার জন্য মা-বোনের সঙ্গে ছিলেন। কয়েকদিন পরই শ্বশুরবাড়ি চলে যাওয়ার কথা ছিল তার। দুই সন্তানকে টিকা দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কয়েক দিন আগে টিকাও দেওয়া হয়েছিল তাদের। তবে আর শ্বশুরবাড়ি যাওয়া হলো না শাহীনুরের। ছোট্ট দুই সন্তানও এতিম হয়ে গেলো।'

যে বাসাটি ধসে পড়েছে সেটি শাহীনুরের বাবার বাসা। কিছুটা দূরে অবস্থিত বোন নার্গিসের বাসায়ই ছিলেন শাহীনুর। কিন্তু শুক্রবার দিবাগত রাতে বাবা-মায়ের সঙ্গে ওই বাসায় ঘুমাতে যান শাহীনুর। কে জানতো, এই ঘুমই বাবা-মায়ের সঙ্গে তার শেষ ঘুম। পাহাড়ধসে আহত অবস্থায় শাহীনুরের বাবা-মাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তারা সেখানেই চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তারা আশঙ্কামুক্ত।

কথা হয় যমজ শিশুদের বাবা জয়নাল আবেদীনের বলেন, রাতে যখন বৃষ্টি বাড়ছিল, তখন তাদের চলে আসতে বলেছিলাম। কিন্তু শোনেনি। মা ছাড়া ছয় মাসের দুই শিশুকে নিয়ে উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে।

শুক্রবার (১৭ জুন) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে চট্টগ্রামের আকবরশাহ এলাকায় দুটি পাহাড় ধসের ঘটনায় চারজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ