Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অসহায় এক শহর সুনামগঞ্জ, উদ্ধারের জন্য রাতভর মানুষের হাহাকার

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ জুন, ২০২২, ১০:১৪ এএম

অবিরাম ভারী বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ পৌরশহরের সবকটি সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। এতটুকু মাটিও দৃশ্যমান নয়। সব সড়কেই কোথাও হাঁটুপানি, আবার কোথাও কোমরপানি। একইভাবে শহরের বেশির ভাগ এলাকার ঘরবাড়িতে কোমরপানি কিংবা গলাপানি।

এদিকে, সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের বেশির ভাগ স্থানে পানি উঠে যাওয়া সারা দেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। মুহূর্তের মধ্যেই পানি ঢুকে সব তলিয়ে যায়। কেউ কেউ নিরুপায় হয়ে অন্যত্র আশ্রয়ে ছুটে যান। সন্ধ্যার পর থেকে অবস্থা বেগতিক হলে মানুষ ঘরে আসবাপত্র ফেলে পরিবার-পরিজন নিয়ে একটু আশ্রয় জন্য ছোছেন। কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে, কেউ আবাসিক হোটেলে অবস্থান নেন। কিন্তু, সব কিছু পানির নিচে তলিয়ে থাকায় কোনো যান চলাচল করতে পারেনি। তাই, মানুষের ভোগান্তিরও শেষ ছিল না। একসময় মানুষ ঘরের আসবাবপত্র বন্যার হাত থেকে রক্ষা করতে চেয়েছেন, কিন্তু পরে পানি বেশি বেড়ে যাওয়ায় জীবন নিয়ে কোনোমতে আশ্রয়ের জন্য ছুটেছেন। অনেকেই দোতলা বাড়িতে উঠেছেন। অনেকে আবার বাড়িতে কোমরসমান পানি থাকার পরও রাত ১০টার পর থেকে নিরুপায় হয়ে ঘরের মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে অবস্থান করেছেন।

পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার করার মতো কোনো যানবাহন অথবা নৌকা ছিল না। ছিল না প্রশাসন বা জনপ্রতিনিধিদের তৎপরতা। সারা রাত বিদ্যুৎবিছিন্ন ছিল পুরো শহর।

আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান নেওয়া মানুষজন অভিযোগ করেন—তাঁদের কেউ কোনো সহায়তাও দিচ্ছে না।

রাতে বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় ঘরবাড়িতে কোমরের ওপর পানি উঠে যায়। অসহায় মানুষ উদ্ধারের জন্য সাহায্য চেয়েছে, কিন্তু কোনো নৌকা বা যানবাহন চলাচল না করায় মানুষ ঝঁকি নিয়ে ঘরের মধ্যেই বাধ্য হয়ে থেকেছেন।

পানিবন্দি মানুষ সারা রাতই উদ্ধারের জন্য হাহাকার করে। কিন্তু, প্রশাসন বা জনপ্রতিনিধিদের কাউকেই কোনো তৎপরতায় দেখা যায়নি বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।

বড়পাড়া এলাকার আব্দুল মতিন (৫৫) বলেন, ‘ঘরের মধ্যে কোমরপানি, আর সামনের সড়কে গলাপানি। এই পানির মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে সন্তানদের নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছি। সুনামগঞ্জ শহরের এবারের পানি আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। ১৯৮৮ ও ২০০৪ সালেও বন্যা হয়েছে, তবে এবারের মতো নয়। এ দফার বন্যা সবকিছু ছাড়িয়ে গেছে। আমার ঘরের বেশির ভাগ আসবাবপত্র ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। একটা সময় শুধু জান নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছি।’

এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আগামী আরও কয়েকদিন ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা পরিস্থিতি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ