Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রতিবাদ করে সিভাসুর হল ছাড়া ৪ ছাত্র নিরাপত্তাহীনতায়

মহানবীর (সা.) অবমাননা

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৯ জুন, ২০২২, ১২:০০ এএম

ভারতে মহানবীকে (সা.) কটূক্তির প্রতিবাদ করে চট্টগ্রামের ভেটেরিনারি অ্যান্ড এ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) আবাসিক হল থেকে বহিস্কৃত চার ছাত্র এখন নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরাও। মহানবীর (সা.) অবমাননার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ওই চার শিক্ষার্থীকে কোন কারণ দর্শানো কিংবা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে বহিস্কারের ঘটনায় হতবাক তারা এবং তাদের অভিভাবকেরা। যদিও কর্তৃপক্ষ তরফে বলা হচ্ছে, ওই চার শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি ও ক্যাম্পাসে সাম্প্রদায়িক উসকানি দিয়েছেন।

পরীক্ষা চলাকালে হল থেকে বের করে দেওয়ার পর তারা পড়েন মহাবিপাকে। কারণ এই নগরীতে তাদের থাকার কোন ব্যবস্থা না থাকায় তারা হলে উঠেন। হল ছাড়া হওয়ার পর তাদের শিক্ষাজীবনেও অনিশ্চয়তা নেমে এসেছে। বহিস্কৃত একজন শিক্ষার্থীর এক স্বজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কখন তাদের উপর হামলা হয় এমন আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের। এমন উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় তাদের পড়ালেখা বিঘ্নিত হচ্ছে। বহিষ্কৃত এই চার শিক্ষার্থী হলেন- ২৪তম ব্যাচের বোরহান উদ্দিন মোহাম্মদ সাজ্জাদ, মোমিন বিন রহিম, তসলিম উদ্দিন ও মোহাম্মদ তানভীরুল ইসলাম।

বোরহান গতকাল শনিবার ইনকিলাবকে জানান, বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেসব কারণ দেখিয়ে আমাদের হল থেকে বহিস্কার করেছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট। বলা হয়েছে আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উস্কানিমূলক পোস্ট, সাম্প্রদায়িক উস্কানি, গণতন্ত্র বিরোধী কথা প্রচার করেছি, এমনকি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়েও কটূক্তি করেছি। এসব অভিযোগের কোন তথ্য প্রমাণ কর্তৃপক্ষের হাতে নেই। তারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার উল্লেখ করে বোরহান বলেন, মহানবীর (সা.) অবমাননার প্রতিবাদ করার পরেই আমাদের বিরুদ্ধে এমন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, আমাদের কোনরকম আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে। বোরহান নিরাপত্তাহীনতায় আছে জানিয়ে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

গত মঙ্গলবার এক অফিস নোটিশের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিক্যাল অনুষদের ২৪তম ব্যাচের ওই চার শিক্ষার্থীকে আবাসিক হল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মীর্জা ফারুক ইমাম স্বাক্ষরিত সেই অফিস নোটিশে বলা হয়, উল্লেখিত শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কটূক্তি, ধর্মীয় উস্কানিমূলক, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও গণতন্ত্র পরিপন্থি বিবৃতি প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় তাদেরকে সিভাসুর আইন মোতাবেক এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এম এ হান্নান হল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো। জানা যায়, বহিষ্কৃত হওয়া এই শিক্ষার্থীদের তৃতীয় বর্ষের প্রথম সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। বিভাগের সেমিস্টার পরীক্ষা চলাকালীন হল থেকে বের করে দেয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন এই শিক্ষার্থীরা। আর প্রায় দেড়শতাধিক শিক্ষার্থী মানববন্ধনে অংশ নিলেও শুধুমাত্র এই চারজনকে শাস্তি প্রদান করায় অন্যান্য সাধারণ শিক্ষার্থীরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার ভয়ে তারা প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না।

এদিকে বিশ^বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আবারো দাবি করা হয়, প্রকৃতপক্ষে মহানবী (সা.)-কে অবমাননা অথবা কটূক্তির প্রতিবাদে কর্মসূচি পালনের অভিযোগে কোন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কটূক্তি, ধর্মীয় উস্কানীমূলক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী মন্তব্য, গণতন্ত্রপরিপন্থী বিবৃতি প্রদান এবং কয়েকজন শিক্ষকের ব্যাপারে অবমাননাকর মন্তব্য করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে ৪ শিক্ষার্থীকে হল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আনীত সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রমাণপত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মহানবীর (সা.)


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ