Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যানবাহনের চোরাই তেলের রমরমা কারবার

ঢাকা বাইপাস সড়কের রূপগঞ্জ এলাকা

মো. খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে : | প্রকাশের সময় : ১৯ জুন, ২০২২, ১২:০০ এএম

ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহনের জন্য রাজধানীর বাইরে দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এশিয়ান হাইওয়ে বা ঢাকা বাইপাস সড়ক। এটি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের মদনপুর থেকে রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন, কাঞ্চন পৌরসভা ও পূর্বাচল নতুন শহর হয়ে গাজীপুরের কালীগঞ্জ, পূবাইলের মিরের বাজার, গাছা থানা এলাকা দিয়ে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত বিস্তৃত।

অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা বাইপাস সড়কে মালবাহী যনাবাহন চলাচল শুরুর পর থেকেই চোরাই তেল বিক্রিকারী চক্রটি সক্রিয় হয়ে ওঠে। চক্রটি দালালের মাধ্যমে পুলিশকে ‘ম্যানেজ’ করে চোরাই তেল বিক্রি অব্যাহত রাখে। বাইপাস এলাকায় কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়ি থাকলেও চোরাই তেল বিক্রি থেমে নেই। প্রকাশ্যে সড়কের পাশে চালকরা যানবাহন থামিয়ে চক্রের কাছে তেল বিক্রি করে। আর চক্রটি কম দামে তেল কিনে বিভিন্ন কলকারখানায় পৌঁছে দেয়। স্থানীয় বাজারেও খুচরা দোকানে চোরাই তেল চক্রটি যোগান দেয়। তাছাড়া ব্যক্তিগত গাড়ী, সরকারি পরিবহন থেকে কম দামে বিশেষ পাইপের মাধ্যমে তেল নিজেদের ড্রামে ভর্তি করে।

সরেজমিন দেখা যায়, ঢাকা বাইপাস সড়কের শুধুমাত্র রূপগঞ্জ অংশেই রয়েছে ৫০টির বেশি চোরাই তেলের খুপড়ি দোকান। এ ব্যাপারে মায়ারবাড়ি এলাকার তেল ব্যবসায়ী জাহাঙ্গির আলম বলেন, পিকআপ ভ্যানে করে আমাদের তেল দিয়ে যায়। কিছুটা কমে পাই। বিক্রি করে লাভ একটু বেশি তাই এসব তেল কিনে থাকি। আমরা টাকা দিয়ে তেল কিনি। যানবাহন চালকরা চুরি করে তেল বিক্রি করে। অপরাধ হলে তাদের হবে। অপর তেল ব্যবসায়ী সাগর বলেন, আমার খুকুমনি টেডার্স নামে বৈধ লাইসেন্স রয়েছে। সড়ক যোগাযোগ ভালো থাকায় ঢাকা বাইপাস সড়কের পাশে খুপড়ি দোকান দিয়েছি।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ট্রাক চালক বলেন, আমরা চট্টগ্রাম বন্দর থেকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় মালামাল বহন করি। মাঝপথে আমাদের খাবারের টাকার জন্য কোম্পানির তেল বিক্রি করতে বাধ্য হই। তবে অনেকে আছে পেশাদার চোর। তারা বিক্রির জন্য ডিপো থেকে বা কোম্পানি থেকে রশিদের মাধ্যমে অপকৌশল করে থাকে। তারা নিয়মিত চোরাই মালামাল ব্যবসায় লিপ্ত।

এ বিষয়ে ভোলাব তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ঢাকা বাইপাস সড়কে চোরাই তেলের খুপড়ি ঘরগুলো পুলিশের একার সিদ্ধান্তে উচ্ছেদের সুযোগ নেই। নির্বাহী ম্যাজিস্টেটের আদেশ প্রয়োজন পড়ে। এদিকে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মাহবুবুর বলেন, মহ্সাড়কের পাশের যে কোন অপরাধ দেখার দায়িত্ব হাইওয়ে পুলিশের। তাই ভুলতা ফাঁড়ি পুলিশ এসব কাজে হস্তক্ষেপ করে না।

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য আবেদন করেছি। বাইপাস সড়কের পাশে কাউকেই চোরাই তেল কেনাবেচার সুযোগ দেয়া হবে না। শিগগিরই অভিযান চালিয়ে এসব খুপড়ি ঘর উচ্ছেদ করে চোরাই তেল কারবারিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ