বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বাঙ্গালীর স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের অপেক্ষা আর মাত্র ৬ দিন। সেতুকে ঘিরে গুজবে ছেলেধরা সন্দেহে চার বছর আগে ঢাকায় গণপিটুনীর শিকার হয়ে নিহত হন তাসলিমা বেগম রেণু। তাঁর গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামে। সর্ব কনিষ্ঠ মেয়ের নির্মম মৃত্যুতে আজও কাঁদছেন বৃদ্ধা মা ছবুরা খাতুন। প্রাণ হারানো মাকে খুঁজে ফিরছে দুই কোমলমতি সন্তান তাহসিন আল মাহির ও তাসমিম মাহিরা তুবা।
মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই তুবা তার মায়ের বড় বোনের (খালা) সাথে থাকে এবং তাঁকেই মা বলে ডাকে। এখন পড়ালেখা করছে প্রথম শ্রেণিতে। অপরদিকে মাহিরকে ভর্তি করা হয়েছে মাইল স্টোন স্কুলে। সেখানে হোস্টেলে রেখেই চালানো হচ্ছে তার পড়াশোনা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৯ সনে পদ্মা সেতুর জন্য বলি দেয়া হবে মর্মে ছেলেধরা গুজবে সারাদেশে ২১টি গণপিটুনির ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু হয়। ২০ জুলাই রাজধানীর উত্তর-পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তুবাকে ভর্তির বিষয়ে তথ্য জানতে যান তাছলিমা আক্তার রেণু। সেখানে উপস্থিত কয়েকজন নারী তাকে ছেলেধরা সন্দেহ করে এই গুজব বাইরে ছড়িয়ে দেন। মুহুর্তেই বিভিন্ন বয়সী কয়েকশ’ নারী-পুরুষ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ঢুকে পড়েন। তাদের রোষানল থেকে রক্ষা করতে রেণুকে দোতলায় প্রধান শিক্ষকের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। উশৃঙ্খল রেণুকে টেনে-হিঁচড়ে নিচে নামিয়ে এনে এলোপাতাড়ি লাথি, কিল, ঘুষি ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন। ওই ঘটনায় নিহতের ভাগিনা সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৫০০ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঢাকার ৬ষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফাতিমা ইমরোজ ক্ষনিকার আদালতে মামলার বিচার কাজ চলমান রয়েছে। মামলাটিতে সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে।
রেণুর বৃদ্ধা মা ছবুরা খাতুন বলেন, আমি মৃত্যু পথযাত্রী। আমার নাড়ি ছেড়া ধনকে হারিয়ে আজ আমি নিঃস্ব। পদ্মা সেতু চালু হচ্ছে জেনে খুব খুশি হয়েছি। তবে আমার মেয়ের বিচার দেখে যেতে পারবো কী না এ নিয়ে হতাশ। তাই আমার জীবদ্দশায় আমি আমার মেয়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখে যেতে চাই।
মামলার বাদী ও নিহত তাসলিমা আক্তার রেনুর ভাগ্নে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু বলেন, ‘গুজব’ আমার খালার প্রাণ কেড়ে নিলেও ষড়যন্ত্রকারীরা পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ থামিয়ে রাখতে পারেনি। যে পদ্মা সেতুর জন্য আমার খালাকে জীবন দিতে হয়েছে, আজ সেই সেতু উদ্বোধনের ক্ষণ গননা চলছে। কাঙ্খিত সেতু উদ্বোধনের সাথে সাথে গুজব রটনাকারী ও আমার খালার হত্যাকারীদের ফাঁসি দেখতে পারলে আমরা আরো বেশি খুশি হতাম। শান্তনা দিতে পারতাম তাঁর অবুঝ দুই শিশু সন্তানকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।