Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বানে ভাসছে সিলেট : সোস্যাল মিডিয়ায় নেটিজনদের প্রতিক্রিয়া

সোশাল মিডিয়া ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ জুন, ২০২২, ৮:৫১ পিএম

টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি সিলেটবাসী। সবমিলিয়ে জেলার ৮০ শতাংশ জায়গা পুরোপুরি তলিয়ে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এরই মধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলেও বন্যার তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে। আগামী দুই দিনের মধ্যে উত্তরাঞ্চলের ১৪টি জেলায়ও বন্যা শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এছাড়া পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে একই সময়ে দেশের মধ্যাঞ্চলের চারটি জেলায় বন্যা শুরু হতে পারে। দেশের তিন এলাকার ওই বন্যা আরও ৭ থেকে ১০ দিন ধরে থাকতে পারে।

ভয়াবহ বন্যার শিকার লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েও জায়গা পাচ্ছেন না। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কটে রয়েছেন সিলেটের বানভাসি মানুষ। এছাড়া জেলার কৃষকরা তাদের গৃহপালিত পশু নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। এমন পরিস্থিতিতে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠকরা মানবিক সঙ্কট মোকাবিলায় সবাইকে সাধ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সিলেট বিভাগের বেশিরভাগ এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। টেলিফোন নেটওয়ার্ক অকার্যকর হয়ে গেছে। সিলেটের পুরো শহর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

তবে, এ বন্যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সোস্যাল মিডিয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে নেটিজেনরা।

ফেসবুকে আব্দুল্লাহ আল মারুফ নামে একজন লিখেছেন, ভারতের ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ায় সিলেটে এ বন্যা। আমাদের কি উচিত ছিল না আরেকটি বাঁধ নির্মাণ করা। তিনি ক্ষোভে লিখেছেন, তা হবে কেনো, বাঁধ নির্মাণ হলে তো বন্ধু রাষ্ট্রের ক্ষতি হবে।

মোহাম্মদ বদরুল ইসলাম নামে একজন লিখেছেন, আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র ভারত টিপাইমুখের ৪৩টি স্লুইচ গেট খুলে দেওয়ায় সিলেট অঞ্চলে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। এই বাঁধের কারণে নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় পানি বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারত শুষ্ক মৌসুমে পানি আটকিয়ে রাখে, আর ভরা মৌসুমে পানি ছেড়ে দেয়। যার ফলে বাংলাদেশে কৃত্রিম বন্যা সৃষ্টি হয়। এর দায় কে নিবে।

সারফারাজ খান ইয়াজ নামে একজন লিখেছেন, ভারতে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে তাদের দেশে বন্যা দেখা দেওয়ায় তিস্তা টিপাইমুখীর মোট ১১টি পানির গেট খুলে দিয়েছে তারা। এর ফলে আমাদের দেশের বন্যায় ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা আরো নতুন নতুন এলাকা। ভারত আমাদের কখনো বন্ধু ছিল না, তারা প্রয়োজনে পানি দেয় না। আর বিপদে পড়লে সব পানি ছেড়ে দেয়।

মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে একজন লিখেছেন, ভারত পানি ছেড়ে দেওয়ায় আমাদের দেশে বন্যা সৃষ্টি হয়েছে।


রবিউল ইসলাম জীবন নামে একজন লিখেছেন, ভারতে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে তাদের দেশে বন্যা দেখা দেওয়ায় তিস্তা টিপাইমুখীর মোট ১১টি পানির গেট খুলে দিয়েছে তারা। বন্যায় ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা আরো নতুন নতুন এলাকা। ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছে সুতরাং ভারতের বিরুদ্ধে কিছু বলা মানে আপনি দেশদ্রোহী।


নারী বিজ্ঞানী নামে একজন লিখেছেন, ভারতে বন্যা দেখা দেওয়ায় তিস্তা টিপাইমুখীর মোট ১১টি পানির গেট খুলে দিয়েছে তারা, যার ফলে আমাদের দেশে বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। হে রব আপনি বন্যার্তদের হেফাজত করুন বলেও তিনি লেখেন।

রাসেল সরকার নামে একজন লিখেছেন, সিলেটে বন্যা বৃষ্টির পানিতে হয়নি, উজানের ঢলে সিলেট প্লাবিত হয়েছে। এর জন্য সম্পূর্ণ দায়ী বন্ধু দেশ ভারত। আমরা ভারত বন্ধুদের জন্য ভালোবাসে আম্রপালি পাঠিয়েছি, আর বন্ধুরা আমাদের ভালোবাসে বেশি করে পানি দিয়েছে।

তিনি আরও লেখেন, ভারতে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে তাদের দেশে বন্যা দেখা দেওয়ায় তিস্তা টিপাইমুখের মোট ৪৩টি গেট খুলে দিয়েছে আজ। তাই নতুন নতুন এলাকা বন্যা প্লাবিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি সবাইকে নিরাপদ জায়গা ও সাবধানে থাকার অনুরোধ করেন।

এম সাঈদ স্বদেশী নামে একজন লিখেছেন, ইন্ডিয়া পানি খেতে না পারলে বাংলাদেশে ছেড়ে দেই।
যার ফলে বন্যা হয়ে আমার দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

অনেকেই আবার ফেইসবুকে পোস্ট করেছেন, আমাদের দেশের সরকার বন্যা আটকানোর জন্য আরেকটি যেন ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করে।

আবার এ ঘটনায় ফেইসবুকে অনেকেই সাহায্য সহযোগিতার জন্য বিভিন্ন মোবাইল নাম্বার দিয়ে টাকার জন্য পোস্ট করেছেন। সবাই বলেছেন, যার যার অবস্থান থেকে সবাই যেন এ বন্যার্তদের পাশে যেন দাঁড়াতে। কিছু রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যে বিভিন্ন সহযোগিতাও করেছেন। তবে, তা খুবই অপ্রতুল বলেছেন অনেকেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ