বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আষাঢ়ের পূর্ণিমার ভরা কোটালে ভর করে সাগর ফুসে ওঠার সাথে উজানের ঢলের পানিতে দক্ষিণাঞ্চল সহ উপক’লের বেশীরভাগর নদ-নদীর পানি বিপদ সীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে বিশাল এলাকা প্লাবিত হবার শংকা ক্রমশ প্রবল হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাইড্রোলজি বিভাগের সর্বশেষ হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলের ৯টি পয়েন্টের মধ্যে ৩টি স্থানেই পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্য ৬টি স্থানে বিপদসীমা অতিক্রম না করলেও তা ছুই ছুই করছে। দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করলে উজানের বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পাড়ে। সাগর অতিমাত্রায় উজানের পানি গ্রহন না করলে উত্তরে বন্যা পরিস্থিতি বিলম্বিত হবার আশংকা থাকে বলে মনে করছেন পানি বিশেষজ্ঞগন।
একদিন আগে মেঘনা ও বিষখালী সহ ৫টি স্থানে নদীর পানি বিপদ সীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছিল। ফলে দক্ষিণাঞ্চল সহ উপক’লের বিভিন্ন বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ও চরসমুহে বসবাসরত হাজার হাজার বসতি ও জনপদ এখন পানি তলায়। আসন্ন খরিপ-২ মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান খাদ্য ফসল আমনের বীজতলা নিয়েও কৃষকের দুঃশ্চিন্তা ক্রমশ বাড়ছে। যেসব এলাকার কৃষকরা ইতোমধ্যে বীজতলা তৈরী করেছে, তার বেশীরভাগই প্লাবনের শিকার।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের মতে, বরিশাল মহানগরী সংলগ্ন কির্তনখোলা নদীর পানি আগের দিনের চেয়ে দশমিক ২ সেন্টিমিটার হ্রাস পেলেও তা বিপদ সীমা, ২.৫৫ সেন্টিমিটারের কাছে ২.৪৫ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হচ্ছে। ভোলা শহরের পাশের খেয়াঘাট এলাকায় তেতুলিয়া নদীর পানি বিপদসীমার দশমিক ১০ সেন্টিমিটার, দৌলতখানে মেঘনার পানি দশমিক ২৭ সেন্টিমিটার, তজুমদ্দিনে দশমিক ৪৭ সেন্টিমিটার, বরগুনার পাথরঘাটায় দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া অন্য ৬টি পয়েন্টেই নদ-নদীগুলোর পানি বিপদ সীমা প্রায় ছুই ছুই করছে। আগের দিন দক্ষিণাঞ্চলের ৫টি স্থানে নদীর পানি বিপদ সীমার ওপরে ছিল ।
এদিকে শণিবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত বরিশালে প্রায় ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হলেও চলতি মৌসুমেও গত বছরের মত দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমান কম। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু সময় মতই দেশের উপক’লভাগ অতিক্রম করলেও গত কয়েকটি মাসের মত চলতি মাসেও বৃষ্টিপাতের পরিমান কিছুটা কম। তবে গত দু-তিন দিন উপক’ল যুড়ে সাগর থেকে ধেয়ে আসা জোয়ারের বনের সাথে উজানের ঢলের পানি আর মাঝারী বৃষ্টিপাতে পরস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে যচ্ছে।
গত এপ্রিল মাসে বরিশালে স্বাভাবিক ১৩২ মিলিমিটরের স্থলে মাত্র ১৯ মিঃমিঃ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। যা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ৮৫.৬% কম। মে মাসেও আবহাওয়া বিভাগ থেকে বরিশালে স্বাভাবিক ২৬০ মিলিমিটারের স্থলে ২৪৫ থেকে ৩১০ মিঃমিঃ পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকলেও স্বাভাবিকের চেয়ে ৫.৬% কম বৃষ্টি হয়েছে বলে আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে। আপরদিকে চলতি জুনে বরিশালে ৪৬০ থেকে ৫১০ মিলি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হলেও মাসের প্রথম ১৮ দিনে বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ৬০.৪ মিলিমিটার।
পূর্ণিমার ভরা কোটালে ভর করে আগামী কয়েকদিন মাঝারী থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা রয়েছে। কিন্তু তাতেও মাসের ¯া^ভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা কম বলেই মনে করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবহাওয়া পর্যবেক্ষকগন।
তবে উজানে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের ফলে সাগরমুখি সবগুলো নদÑনদী অনেকটাই দুকুল ছাপিয়ে প্রবাহিত হবার সাথে জোয়ারে দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান দনাদার খাদ্য ফসল আমনের কিছুটা ঝুকিতে রয়েছে।
আবাহাওয়া বিভাগ থেকে মৌসুমী বায়ু দক্ষিণাঞ্চল সহ সারা দেশে সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থার কথা জনিয়ে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চল এবং উপক’লীয় এলাকায় হলকা থেকে মাঝারী বর্ষনের সাথে কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভবনার কথাও বলা হয়েছে।
ফলে সাগরের জোয়ারে ভর করে আসা পানির সাথে উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে দক্ষিণাঞ্চলের নদÑনদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করে দুকুল ছাপিয়ে প্রবাহিত হবার আশংকা বাড়ছে। বাড়ছে দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান
দানাদার খাদ্য ফসল অমান-এর ঝুকিও।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।