বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
লক্ষ লক্ষ তৌহিদী মুসলিম জনতার নারায়ে তাকবীর-আল্লাহু আকবার শ্লোগানে প্রকম্পিত খুলনা মহানগরী। ডাকবাংলো থেকে জোড়াগেট পর্যন্ত প্রায় ৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় তিল ধারণের কোনো জায়গা নেই। ধর্ম প্রাণ মুসল্লিরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। নবীজিকে (সা.) নিয়ে অবমাননাকারী মন্তব্য দেয়া উগ্র সাম্প্রদায়িক ক্ষমতাসীন বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও মিডিয়া সেল প্রধান নবীন জিন্দালের দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তি তারা দাবি করছেন। একই সাথে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছেন। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোরও জোরালো দাবি জানিয়েছেন সমবেত মুসল্লীরা। এ সময় মুরতাদ আখ্যা দিয়ে নূপুর শর্মা ও নবীন জিন্দালের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। ইমাম পরিষদের এ কর্মসূচির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে শরীক হন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, মজাহিদ কমিটি সহ বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতা ও কর্মীরা।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ও উম্মাহাতুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রাযি.) কে নিয়ে চরম অশ্লীল ও অবমাননাকর মন্তব্য করার প্রতিবাদে খুলনা জেলা ইমাম পরিষদ আজ শুক্রবার দুপুর ৩ টায় প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেয়। জুম্মার নামাজের পর থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা জড়ো হতে থাকেন নিউমার্কেট বায়তুন নুর জামে মসজিদ চত্বরে। বিকাল ৫ টার মধ্যে জনসমুদ্রে পরিণত হয় নিউমার্কেট, বাবরী চত্বর, জোড়াগেট এলাকা। প্রতিবাদ সমাবেশে খুলনা মহানগরী ও জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজার হাজার মুসল্লী যোগ দেন। স্মরণাতীতকালে খুলনায় এটিই সর্ববৃহৎ জন সমাবেশ। রাসুলের অবমাননার প্রতিবাদে রাজনৈতিক দল মত নির্বিশেষে মানুষও অংশ নেন। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করার কথা থাকলেও লক্ষাধিক মানুষ জড়ো হওয়ায় রাস্তায় সাধারণ মানুষের পথ চলায় ভোগান্তি দেখা দিতে পারে বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়নি।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভারতের এই ঘটনা বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটিয়েছে। এমন জঘন্যতম অন্যায় কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। বিশ্বনবীর অবমাননার ঘটনা অসভ্যতাকেও হার মানিয়েছে। ভারত সরকারকে এর চরম মূল্য দিতে হবে। নবী (সঃ) ও তার পরিবারের শানে এহেন অসভ্য কর্মকাণ্ডের জন্য সৌদী আরব, ওমান, বাহরাইন, জর্ডান,লিবিয়া,আফগানিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, কাতার, কুয়েত, ইরানসহ বিভিন্ন মুসলিম বিশ্ব রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবাদ জানালেও বিশ্বের অন্যতম মুসলিম প্রধান রাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিবাদ জানানো হয়নি। আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে রাষ্ট্রীয়ভাবে এর প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানাচ্ছি। বক্তারা আরও বলেন, মুসলমানরা তাদের নবীকে নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসেন। বিশ্বনবীর মর্যাদা রক্ষার জন্য আমরা জীবন দিতেও কুণ্ঠিত হবো না। বীরের জাতি মুসলিমরা জেগে ওঠলে ভারতকে উচিত শিক্ষা দেয়া হবে। প্রয়োজনে জীবন দিয়ে হলেও নবী (সঃ) এর মর্যাদা রক্ষা করবো, ইনশাআল্লাহ। এ ঘটনায় ভারত সরকারকে মুসলিম উম্মাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এবং ভবিষ্যতে এমন কর্মকান্ড যেন করতে না পারে সে জন্য বিশ্ব মুসলিমকে সজাগ থাকতে হবে।
প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন খুলনা জেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ সালেহ। বক্তৃতা করেন, সহ সভাপতি মাওলানা মুশতাক আহমেদ, সহ সভাপতি মাওলানা রাহমাতুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নাসির উদ্দিন কাসেমী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এ এফ এম নাজমুস সউদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আনোয়ারুল আযম, অর্থ সম্পাদক হাফিজ মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, প্রচার সম্পাদক মাওলানা মোল্লা মিরাজুল হক, দপ্তর সম্পাদক মাওলানা শফিকুল ইসলাম, সদর থানার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান, দৌলতপুর থানা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নূর সাইদ জালালী, খালিশপুর থানা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এ, এস,এম জাফর সাদিক দাকোপ উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শাইখুল ইসলাম বিন হাসান, রূপসা উপজেলা সভাপতি মাওলানা হেকমত আলী শেখ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসিরউদ্দিন, মুজাহিদ কমিটি খুলনার সাধারণ সম্পাদক শেখ হাসান ওবায়দুল করিম প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।