Inqilab Logo

বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ০৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারের বিরুদ্ধে অহেতুক হয়রানির অভিযোগ করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বন্ড লাইসেন্স ইস্যুর প্রক্রিয়া সহজতর করলেও চট্টগ্রামে বন্ড কমিশনারেটের আচরণে তা আরে জটিল হয়ে পড়েছে। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মোহাম্মদ মুবিনুল কবির দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে অহেতুক হয়রানি করা হচ্ছে। ফলে গার্মেন্টস এক্সেসরিজ উৎপাদনকারী শিল্প মালিকরা রাজস্ব বোর্ডের সুফল থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। গতকাল নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তুলে ধরেন দেশের রফতানিমুখী গার্মেন্টস এক্সেসরিজ শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ এন্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিজিএপিএমইএ) প্রথম সহ-সভাপতি স্থপতি তসলিম উদ্দিন চৌধুরী।
সংগঠনের প্রথম সহ-সভাপতি স্থপতি তসলিম উদ্দিন চৌধুরী পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের উপদেষ্টা শাহজাদা মাহমুদ চৌধুরী। সরকারি কর্মকর্তার কারণে গার্মেন্টস এক্সেসরিজ উৎপাদনকারী শিল্প মালিকরা অপ্রত্যাশিত নানা সংকটের সম্মুখীন। এতে কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ হুমকির মুখে পড়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ফাইল আটকে রাখা, শিল্প মালিকদের সাথে দুর্ব্যবহার, অযথা হয়রানি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। কমিশনারের অনাকাক্সিক্ষত আচরণে আক্রোশমূলক মনোভাব প্রকাশ পায়। যা সরকারকে খাটো করছে এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) বিতর্কিত করছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বন্ড লাইসেন্স ইস্যুর প্রক্রিয়া সহজতর করলেও কমিশনারের নেতিবাচক মনোভাবের কারণে তা আরও জটিল হয়ে পড়েছে। তাই আমরা রাজস্ব বোর্ডের সহজতর করার সুফল থেকে বঞ্চিত।
লিখিত বক্তব্যে মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নীতিমালা অনুসারে ১৪টি ডকুমেন্টস দাখিল করলেই বন্ড লাইসেন্স ইস্যু হওয়ার কথা। বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০০৮ অনুসারে নতুন বন্ড লাইসেন্স ইস্যুর সময়সীমা ৩০ দিন। কিন্তু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস দাখিলের পরও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইসেন্স পাওয়া যাচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ভুক্তভোগী ডিজিটাল এক্সেসরিজ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডর প্রধান নির্বাহী মো. হামিদুর রহমান বলেন, চলতি বছরের জুন মাসে প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্ট দাখিলের পরও এখনো পর্যন্ত লাইসেন্স পাইনি। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানে ৮ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। প্রতি মাসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা দিতে হচ্ছে। কারখানা চালু করতে না পারায় যন্ত্রপাতি অকার্যকর হয়ে পড়ছে। অন্যদিকে প্রতিদিন স্ফীত হচ্ছে ব্যাংক ঋণের সুদ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আদেশ অনুসারে কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচামালের বার্ষিক আমদানি প্রাপ্যতা প্রদানের ক্ষেত্রে, স্থাপিত মেশিনের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতাকে বিবেচনায় নিয়ে ৬০ শতাংশের সমপরিমাণ কাঁচামাল বার্ষিক আমদানি প্রাপ্যতা হিসেবে দিতে হবে। এনবিআরের আদেশ অমান্য করে কারখানায় ব্যবহৃত বিদ্যুৎ বিলের কপি, ফরেন ডিমান্ড ড্রাফট (এফডিডি) চেয়েও হয়রানি করা হচ্ছে অভিযোগ করে বলেন, আবেদনের ১৫ দিনের মধ্যে বার্ষিক কাঁচামালের প্রাপ্যতা পাওয়ার কথা। কিন্তু দু’তিন মাসেও তা দেয়া হয় না। ফলে বন্দরে পড়ে থাকা কাঁচামালের লাখ লাখ টাকা ডেমারেজ গুনতে হয়। ব্যাহত হয় উৎপাদন কার্যক্রম।
এক্সেসরিজ শিল্পের কিছু কাঁচামাল কমপক্ষে এক কন্টেইনার আমদানি করতে হয় উল্লেখ তসলিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা রয়েছে যাতে এক কন্টেইনারের সমপরিমাণ অথবা আমদানির জন্য সুবিধাজনক প্রাপ্যতা নির্ধারণ করতে হবে। কিন্তু সেই সুবিধা বর্তমানে দেয়া হচ্ছে না। একটি শিল্প কারখানার মালিক হয়ে নিজে না গিয়ে তার প্রতিনিধিকে বন্ড কমিশনারের শুনানিতে পাঠানোর অজুহাতে জরিমানা আরোপের অভিযোগ করা হয়েছে মুবিনুল কবিরের বিরুদ্ধে। সরকার ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করে সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বন্ড কমিশনারের কারণে কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ হুমকির মুখে পড়েছে। তার আচরণ ব্যবসাবান্ধব নয়।
সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতি অবিলম্বে এসব সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসার আহŸান জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যথায় চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন্ডেড শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে গার্মেন্টস এক্সেসরিজ আবারও বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে। এতে তৈরি পোশাক শিল্পসহ অন্যান্য রফতানি বাণিজ্য ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেনÑ কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, পরিচালক খন্দকার লতিফুর রহমান, আবদুল জাব্বার, এম এ সবুর, মো. নজরুল ইসলাম প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ