Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দক্ষিণাঞ্চলে ডায়রিয়া পরিস্থিতির আশাব্যঞ্জক উন্নতি হচ্ছে না

বরিশাল ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০২২, ১২:০০ এএম

আবহাওয়া অনুকূল হলেও দক্ষিণাঞ্চলে ডায়রিয়া পরিস্থিতির আশাব্যঞ্জক উন্নতি হচ্ছে না। জুনের প্রথম ১৫ দিনে এ অঞ্চলের ৪২ উপজেলায় আরো প্রায় ৪ হাজার ডায়রিয়া আক্রান্ত নারী-পুরষ ও শিশু বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এনিয়ে গত সাড়ে ৪ মাসে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৪৫ হাজার ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিলেন। তবে এর বাইরে বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিক ছাড়াও চিকিৎসকদের পরামর্শে অন্তত দুই লাখ ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন বলে ওয়াকিবহাল মহল জানিয়েছেন। এখনো প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩শ’ ডায়রিয়া রোগী সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিচ্ছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যানে জানা গেছে।

দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর মধ্যে ভোলা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর ও বরিশালে এখনো ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেশি। ১৫ জুন পর্যন্ত দ্বীপ জেলা ভোলাতে ডায়ারিয়া আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৯ হাজার। পিরোজপুরের সরকারি হাসপাতালগুলোতেও ইতোমধ্যে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। পটুয়াখালীর ৭ উপজেলাতেও ইতোমধ্যে সাড়ে ৭ হাজারের বেশি মানুষ ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। বরিশালেও আক্রান্ত ১১ হাজার নারী-পুরষ ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল ও শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বরগুনাতেও প্রায় ৫ হাজার এবং ঝালকাঠীতে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ডায়রিয়া আক্রান্ত মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

গতবছরও মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ৭০ হাজার ডায়রিয়া আক্রান্তকে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। এবারো মার্চের মধ্যভাগ থেকে দক্ষিণাঞ্চলে ডায়রিয়া পরিস্থিতি জটিল হতে শুরু করে। গত ৩১ মে পর্যন্ত এ অঞ্চলে যে ৪০ হাজার ২৯৭ জনের আক্রান্তের কথা বলেছিল বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতর। তার অন্তত ৩৭ হাজারই আক্রান্ত হয়েছে মধ্য মার্চ থেকে মে মাসের শেষ পর্যন্ত। আর জুনের প্রথম ১৫ দিনে আরো প্রায় ৪ হাজার ডায়রিয়া আক্রান্ত সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

তবে এবারও গত বছরেরে মত সর্বাধিক আক্রান্তের সংখ্যাটা বরিশালেই। ১৫ জুন সন্ধা পর্যন্ত বরিশালে আক্রান্তদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই মহানগরীতে। স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্রের মতে গত দিন পনের যাবত দক্ষিণাঞ্চলে কম বেশি বৃষ্টি হওয়ায় পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন লাখ করা গেলেও ডায়রিয়া পুরোপুরি নিমূল হচ্ছেনা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, ব্যক্তিগত সচেতনতা ও পরিশুদ্ধ আহারের মাধ্যমে ডায়রিয়াকে দূরে রাখা সম্ভব। চিকিৎসকগণ বিশুদ্ধ পানি পান সহ বাঁশি পঁচা খাবার পরিত্যাগসহ তাজা খাবার গ্রহণেরও পরামর্শ দিয়েছেন।

বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় চিকিৎসাগণ পরিস্থিতির উন্নতি আশা করছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার ৪২ উপজেলায় ডায়রিয়া চিকিৎসায় ৪১৩টি মেডিকেল টিম কাজ করছে বলে জানান হলেও এসব টিমে সার্বক্ষণিক কোনো চিকিৎসক নেই। দু-তিনটি টিমের দায়িত্বে একজন চিকিৎসক রয়েছেন। ডিপ্লোমাধারী চিকিৎসা কর্মীগণ মেডিকেল টিমের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকের পরামর্শে সকটাপন্ন রোগীসহ যেকোন ডায়রিয়া আক্রান্তের চিকিৎসা দিচ্ছেন বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় ১ হাজার সিসির প্রায় ৬৭ হাজার ব্যাগ এবং ৫শ’ সিসির ৪২ হাজার ব্যাগ স্যালাইন মজুদ রয়েছে। যা এ মাসের শুরুর মজুদের চেয়ে কিছুটা বেশি বলে বিভাগীয় পরিচালক স্বাস্থ্য জানিয়েছেন। প্রয়োজনে যেকোন সময় চাহিদা মাফিক আইভি স্যালাইন সরবারহে স্বাস্থ্য বিভাগের কেন্দ্রীয় ভান্ডার প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ