Inqilab Logo

সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ফের ৮০০ কোটি টাকার অনিয়ম সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রায়ত্ত ৮টি ব্যাংকে আবারো ৮০০ কোটি টাকা অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি। ফোর্সড পিএডি সৃষ্টি, জামানতবিহীন প্রকল্প গ্রহণ, সীমাতিরিক্ত ঋণপত্রের দায়সহ মালিকানা পরিবর্তনের নামে ব্যাংকের দায় বৃদ্ধিসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে এই টাকা নয়-ছয় করা হয়েছে। অনিয়মের সাথে জড়িত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে মতামত দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জাতীয় সংসদ ভবনে গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির  বৈঠকে বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় উপস্থাপিত এক নীরিক্ষা  প্রতিবেদনে এসব অনিয়মের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে অনিয়মের ফিরিস্তি দেখে কমিটির সদস্যরা ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে এবং তাই জানতে চেয়েছেন অডিট অফিসের নিকট।
কমিটির সভাপতি ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। কমিটির সদস্য এ,কে,এম, মাঈদুল ইসলাম, মো. আব্দুস শহীদ, মো. মোসলেম উদ্দিন, পঞ্চানন বিশ্বাস, মো. রুস্তম আলী ফরাজী, মো. শামসুল হক টুকু এবং মইন উদ্দীন খান বাদল। সিএন্ডএজি মাসুদ আহমেদ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. ইউনুসুর রহমান, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরাদসহ মন্ত্রণালয় এবং অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানের অডিট অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
কমিটিতে উপস্থাপিত প্রতিবেদনের বলা হয়, অনিয়ম হওয়া ব্যাংকগুলো হচ্ছেÑ জনতা ব্যাংক লিমিটেড, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, আইসিবি, বেসিক ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড। ২০০৯-২০১০ অর্থ-বছরের হিসেবের উপর করা বার্ষিক এই নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ৪৫টি আপত্তির সঙ্গে জড়িত টাকার  পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৭৯৬ কোটি ৮ লাখ ৭২ হাজার ২১৫ টাকা। বাংকগুলোতে যত অনিয়মÑ প্রতিবেদনে ব্যাংকগুলোর যেসব অনিয়ম তুলে ধরা হয়েছে সেগুলো হচ্ছেÑ কনসোর্টিয়ামভুক্ত ব্যাংকের নিকট হতে টাকা আদায় না করা, ফোর্সড পিএডি সৃষ্টির মাধ্যমে অতিরিক্ত বিনিয়োগ, অসমাপ্ত প্রকল্প গ্রহণ, সীমাতিরিক্ত ঋণপত্রের দায়সহ মালিকানা পরিবর্তনের নামে ব্যাংকের দায় বৃদ্ধি, মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ ও অন্য ব্যাংকের দায় গ্রহণের শর্তাদি বাস্তবায়নের পূর্বেই প্রকল্প ঋণ বিতরণ এবং পর্যাপ্ত জামানতবিহীন প্রকল্প গ্রহণ। তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ বিএনপি
স্টাফ রিপোর্টার : নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন ও এর কাঠামো সম্পর্কে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ১৩ দফা প্রস্তাবনার প্রতিক্রিয়ায় গতকাল (মঙ্গলবার) বিশ্ব টেলিভিশন দিবস উপলক্ষে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তার পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, তথ্যমন্ত্রী যা বলেছেন তা সারবত্তাহীন, শিষ্টাচারবর্জিত, অশোভন এবং নিজ প্রভুকে হাস্যকরভাবে খুশি করার বয়ান ছাড়া আর কিছু নয়। বরং রক্তপাতহীন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাব সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। দেশের আপামর জনসাধারণ থেকে শুরু করে সুশীলসমাজ বেগম জিয়ার প্রস্তাবকে যুগোপযোগী হিসেবেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। আমরা আবারো দৃঢ়কণ্ঠে বলতে চাইÑ গত ১৮ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন শক্তিশালী ইসি গঠনে যে প্রস্তাবনা উত্থাপন করেছেন তা আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার পথকে সুগম করবে। আমি বিএনপির পক্ষ থেকে বেগম জিয়ার প্রস্তাবনাকে নিয়ে ইনু সাহেব যে কুরুচিপূর্ণ প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন সেটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
রিজভী বলেন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন, শক্তিশালী ও প্রভাবমুক্ত হয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ইনু সাহেবরা ধরাশায়ী হবেন বলেই বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাবে তার ক্ষোভ ফেটে পড়েছে। কারণ অবাধ, স্বচ্ছ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ইউপি মেম্বার পদেও জিততে পারবেন কি না এ নিয়ে তার এলাকাবাসী সন্দেহ পোষণ করে। ইতঃপূর্বে তিনি যত নির্বাচন করেছেন সবগুলোতেই তার ভরাডুবি হয়েছে এবং জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তাই তাদের সৎ উদ্দেশ্য উপলব্ধি করা কারো পক্ষেই কঠিন নয়।
তিনি বলেন, বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার রকিবমার্কা নির্বাচন কমিশন দিয়ে বাংলাদেশে নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে ফেলেছে। ভোটকেন্দ্রগুলোতে এখন কোনো ভোটার যায় না, সেখানে চতুস্পদ প্রাণীদেরই বিচরণ দেখা যায়। কারণ ব্যালট বাক্স ভরে ফেলা হয় আগের রাতেই। আর যে কয়জন ভোটার ভোট দিতে যায় তাদের অনেকেই প্রাণ নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারেন না। তাদের স্থান হয় গোরস্থানে। কারণ রকিবমার্কা নির্বাচন কমিশন মৃত্যুবাণে কিনেছেন ভোটারদের নিরাপত্তা।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশী-বিদেশী সব নির্বাচন পর্যবেক্ষক মহল বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য একটি শক্তিশালী ইসি গঠনের জন্য দাবি তুলেছেন। আমি তথ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বলতে চাইÑ বেগম জিয়ার প্রস্তাব যদি জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করা হয় তাহলে কী ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ দেশী-বিদেশী নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করার জন্যই শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের দাবি তুলছেন?



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ