Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রামগতির আলেকজান্ডার ইউপি উপনির্বাচনঃ জাল ভোট,স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের ওপর হামলা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

রামগতি (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি | প্রকাশের সময় : ১৫ জুন, ২০২২, ৬:৪৭ পিএম

জাল ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের ওপর হামলা ও ভোটকেন্দ্রের বাহিরে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে দিয়ে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। ভোটগ্রহণ চলাকালে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র ঘুরে এসব দৃশ্য দেখা গেছে। ইউনিয়নের নয়টি ওয়ার্ডের ১০টি কেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ ভোটগ্রহণ চলে। এখানে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম আব্বাছ সুমন (প্রতীক আনারস), আবুল ফাতাহ (চশমা) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী রিয়াজ হোসেন (হাতপাখা) প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।

বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে জানা যায়, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আকবর হোসেন মনোয়নপত্র প্রত্যাহার করে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ান। এ সুযোগে আনারস প্রতীকের প্রার্থী সুমনের লোকেরা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন সুবিধা নেন। সুমন নৌকার মনোনয়ন নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া প্রয়াত আনোয়ার হোসেনের ছেলে।
ভোটগ্রহণের পরপর সকাল ১০টায় ছয় নম্বর কেন্দ্র চর ডাক্তার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে জালভোট প্রদাণ ও কেন্দ্রে বুথ স্থাপনে অব্যবস্থাপনার চিত্র দেখা যায়। আনারস প্রতীকের প্রার্থী সুমনের বাড়ির দরজার পশ্চিম বালুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে জাট ভোটের মহোৎসব দেখা গেছে। প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীর এজেন্টদের দাবির মুখে অন্যের ভোট দিতে আসা অন্তত ১০ জন ভুয়া ভোটার হাতেনাতে ধরা পড়লেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে আনারস প্রতীকের লোকজন চশমা প্রতীকের কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। কেন্দ্র এলাকার বাহিরে দফায় দফায় চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা। এতে চশমা প্রতীকের কর্মী মো. ছালা উদ্দিনসহ তিনজন আহত হন। কিন্তু এ সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের নিরব দর্শকের ভ‚মিকা পালন করতে দেখা গেছে।
ওই কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা তামান্না আক্তার নামে ৪৪১ নম্বর ক্রমিকের এক ভোটার অভিযোগ করেন, তিনি ভোট দিতে এসে জানতে পারেন তার ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। ভোট দিতে না পেরে ক্ষোভ নিয়ে তিনি বাড়ি ফিরে যান।
এ সময় স্থানীয় কয়েকজন ভোটার জানান, ওই কেন্দ্রটি বরাবরই একজন প্রার্থীর দরজায় অবস্থিত হওয়ায় কেন্দ্রটিতে প্রত্যেক ভোটেই জাল ভোটের মহোৎসব চলে। ওই প্রার্থীর একক প্রভাবের কারণে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লোকজন প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না।
চশমা প্রতীকের প্রার্থী আবুল ফাতাহা বলেন, বিভিন্ন কেন্দ্রে আনারস প্রতীকের পক্ষে ব্যাপক জাল ভোটের মধ্য দিয়ে এ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। প্রশাসনকে বারবার জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো আমার কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছে।

হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মো. রিয়াজ হোসেনও জাল ভোট প্রদানের অভিযোগ তুলে এ নির্বাচনকে অনিয়ম ও জাল ভোটের নির্বাচন বলে অভিহিত করেন।

তবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার কাজী হেকমত আলী দাবি করেন দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

উল্লেখ্য, আকেজান্ডার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি মারা গেলে স্থানীয় সরকার পদটি শূন্য ঘোষণা করেন। যে কারণে নির্বাচন কমিশন এ উপনির্বাচনের উদ্যোগ নেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ