রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলছে প্রায় ৪ শতাধিক কোমলমতি শিশু ছাত্র-ছাত্রীর পাঠদান কার্যক্রম। ফলে যে কোনো সময় বিধ্বস্ত হতে পারে বিদ্যালয়টি। অথচ কর্তৃপক্ষ যেন একেবারেই নির্বিকার।
জানা যায়, এমনি বিপর্যয়কর বিদ্যালয়টির নাম উত্তর রাঙামাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (ইএমআইএস কোর্ড নং- ৪১১০৭০৩০২)। এটির অবস্থান চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদ থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরত্বে। ফটিকছড়ি-কাঞ্চননগর সড়ক লাগোয়া এ বিদ্যালয়টি ১৯৯৪ সালে কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে তা জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিগত ২০১০ সালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার অঞ্জনা খান মজলিশ (বর্তমানে নেত্রকোনা জেলা প্রাশাসক) বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে একটি কক্ষ খুবই ঝুঁকি পূর্ণ হওয়ায় বন্ধ করে দেন। পরবর্তীতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি লিখিতভাবে বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানালে সে সময় উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভায় আলোচনার পর সভার কার্যবিবরণীতে স্থান পেলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের কক্ষ কখন ভেঙে পরে এ ভয়ে যে কেউ দূরে চলে যাবে। তবু এরই ভেতর দিনভর আতংকের মধ্যে চলে কোমলমতি ৪ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীর পাঠদান কার্যক্রম। সকাল ৯টা হতে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ১ম থেকে ৫ম শ্রেণির পাঠদান কার্যক্রম চলছে। যে কোন সময় ভয়ার্ত এ বিদ্যালয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের জীবন বিপন্ন হতে পারে। এ বিদ্যালয়ের বারান্দার ছাদ বীম, পিলার ও প্রতিটি কক্ষে কখনো ভেঙে পড়ছে ছাদের পোলেস্তার, আবার কখনো ভেঙে পড়ছে ছাদ বীমের কিছু কিছু অংশ।
এদিকে ২০১৯ সালে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, ঢাকা ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রকল্পের প্রাক্কলন তৈরি করে প্রেরণের নির্দেশ দেন। নির্দেশনা পেয়ে উপজেলা প্রকৌশলী সরেজমিনে পরিদর্শন করে উক্ত বিদ্যালয়টি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন ভবন করার জন্য উল্লেখ করে যাবতীয় তথ্যাদি প্রেরণ করেন।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি পৌর কাউন্সিলর মুহাম্মদ রফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে উপবৃত্তি ও প্রতি বছর বিদ্যালয় সংস্কারসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের জন্য কয়েক বার সরকরিভাবে বরাদ্দ আসে। অথচ যে বিদ্যালয় বিধ্বস্থ হবার প্রহর গুনছে, সেটি নির্মাণে কোনো বরাদ্দ আসে না। বছরের পর বছর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরিদর্শন ও প্রতিবেদন পাঠালেও কোন কাজ হয় না। আমার জানা মতে- এমন বিধ্বস্তপ্রায় বিদ্যালয় ভবন ফটিকছড়িতে আর কোথাও নেই। এ বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে যে কোন সময় বিধ্বস্ত হতে পারে, ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনাও। যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটে, তবে দায়ভার নেবে কে?
সত্যি বলতে কি- বিদ্যালয়টি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ করার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিস ও প্রকৌশলী অফিসে ৫ বছর ধরে বহুবার ধর্ণা দিয়েছি, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. হাসানুল কবির বলেন, বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে স্থির চিত্র ধারণ করে প্রতিবেদন সহকারে দ্রুত নতুন ভবনের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আসলেই বিদ্যালয়টি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। এমন ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয় ফটিকছড়িতে আর কোথাও নেই। যে কোন সময় বিপদ হতে পারে। তাই বিদ্যালয়টি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে গত ১ অক্টোবর ২০২০ পিইডিপি-৪ এর আওতায় নতুন ভবন নির্মাণ করার জন্য অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও উপজেলা প্রকৌশলীর প্রতিবেদনসহ যাবতীয় তথ্য মহাপরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মিরপুর, ঢাকা ও পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন), প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মিরপুর, ঢাকা বরাবরে প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়েছে। তারপরও বিদ্যালয়টিতে নতুন ভবন নির্মাণ বিষয়ে এখনো কোন অগ্রগতি হচ্ছে না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।