Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সমুদ্রগামী জাহাজশিল্পে নতুন দিগন্ত

বাজেট প্রতিক্রিয়ায় শিপার্স কাউন্সিল চেয়ারম্যান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০২২, ৪:৪৭ পিএম

সমুদ্রগামী জাহাজ আমদানিতে আগাম কর প্রত্যাহার হয়েছে এক বছর আগে। পুরোনো জাহাজ আমদানিতে বয়সও শিথিল করা হয়েছে। আমদানির পর চাইলে বিক্রি করার ন্যূনতম সময়ও তিন বছরে নামিয়ে আনা হয়েছিল। এরপরও উদ্যোক্তাদের বড় দাবি ছিল দেশীয় জাহাজে বিদেশের পণ্য পরিবহন করে যে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়, তার ওপর করভার প্রত্যাহার করা। প্রস্তাবিত বাজেটে সেটিও টানা আট বছর প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

গত বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তার বাজেট বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ কর্তৃক বহির্বিশ্বে সেবা প্রদানের বিপরীতে ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈদেশিক মুদ্রায় আনা আয়কে ২০৩০ সাল পর্যন্ত করমুক্ত করার প্রস্তাব করছি। এসব প্রস্তাব গৃহীত হলে সেবা রফতানি খাতকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে একটি সম্ভাবনাময় শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।

বাজেট প্রতিক্রিয়ায় শিপার্স কাউন্সিল অফ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে বাংলাদেশী পতাকাবাহী জাহাজ চলাচল উৎসাহিত করতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত করমুক্ত করা হয়েছে। এতে এই সেক্টরে নতুন বিনিয়োগে আশার সঞ্চার হবে। কর্পোরেট করহার হ্রাসে বিনিয়োগ উৎসাহিত হবে; কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং রফতানি বহুমুখীকরণ সম্প্রসারিত হবে। তবে ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়-সীমা বাড়ানো জরুরি।

রেজাউল করিম বলেন, বাজেটে মোট ব্যয় ৬ লক্ষ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা, মোট আয় ৪ লক্ষ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা এবং ঘাটতি ২ লক্ষ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। পরিচালন ব্যয় ৪ লক্ষ ১১ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী ২ লক্ষ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নেয়া হবে। ঘাটতি মোকাবেলায় ক্রমবর্ধমান ঋণের ক্ষেত্রে সরকারের সচেতন হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।

শিপার্স কাউন্সিল অফ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান বলেন, ব্যাংক সুদের উৎসে করহার কোম্পানী করদাতার জন্য ১০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ করা এবং রফতানিকৃত পণ্যদ্রব্যের উৎসে কর শূন্য দশমিক ৫ শতাংশের পরিবর্তে ১ শতাংশ করা হয়েছে যা পুনর্বিবেচনা করা যেতে পারে। তৈরিপোশাক শিল্পের মত অন্যান্য সকল রফতানিমূখী শিল্পের ক্ষেত্রেও একই হারে কর নির্ধারণের ফলে রফতানি পণ্য বহুমুখীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের দক্ষিনাঞ্চলে স্থানীয় জনগনের জীবন মানোয়ন্নের পাশাপাশি শিল্প ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। একইভাবে অন্যান্য প্রকল্প যেমন, মেট্রো রেল, চট্টগ্রাম বে-টার্মিনাল, কর্ণফুলী টানেল, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মিরসরাই বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর এবং চট্টগ্রাম কক্সবাজার রেল পথ সহ অন্যান্য প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন প্রয়োজন।

মূল্যস্ফীতির মত চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় রেজাউল করিম বলেন, আমরা মনে করি, কঠিন হলেও এই বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব। এক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করতে হবে এবং কিছু বিষয়ে কঠোর অবস্থান নীতিতে থাকতে হবে। করোনা মহামারী পরবর্তী অর্থনৈতিক পুণরুদ্ধার প্রক্রিয়া এবং রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এই বাজেট সময়োপযোগী বলে মনে করেন তিনি।

এছাড়া ফ্রেইট ফরওয়ার্ডিংকে একটি পরিষেবা শিল্প ঘোষণা, শিপিং এজেন্ট সমূহের উপর করপোরেট কর হার কমানো এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী হিসেবে শিপিং এজেন্টদের আর্থিক প্রণোদনা প্রদান প্রয়োজন বলে মনে করি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ