Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ইসলামপুরে কর্মসৃজন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

ইসলামপুর (জামালপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০২২, ১২:০২ এএম

জামালপুরের ইসলামপুর ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হতে না হতেই দ্বিতীয় পর্যায়ে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসৃজন কর্মসূচি (ইজিপিপি) ৪০ কর্মদিবসের ৯ মে কাজ শুরু হয়েছে। শুরু থেকে অধিক সময় পার হলেও ১২ ইউনিয়নের ৫৬ টি প্রকল্পে মাত্র ২৫-৩০%কাজ হয়েছে। অনিয়ম লুটপাটের অভিযোগের মধ্য দিয়ে কাজ শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সভাপতিরা।

জানা গেছে, জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলা ১২ টি ইউনিয়নের ৫৬টি প্রকল্পের মাধ্যমে ২ হাজার ৮শ ১৪ জন শ্রমিকদের কাজ করার কথা। দৈনিক মজুরি শ্রমিক প্রতি ৪০০ টাকা হারে ৪০ কর্মদিবসে মজুরি পাবেন। প্রকল্পের মোট বরাদ্দ ৪ কোটি ৫০ লাখ ২৪ হাজার টাকা। নন ওয়েজ কষ্ট প্রকল্পের ২০ লাখ ৬৫ হাজার ৯১৫ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গত ২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বর শ্রমিক নির্বাচন করে ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে শ্রমিকদের জব কার্ড বিতরণ করে পহেলা জানুয়ারি থেকে এলাকায় সাইনবোর্ড টাঙিয়ে প্রথম পর্যায়ের কাজ শুরু করে নানা অনিয়মের মধ্য দিয়ে কোনরকমে দায়সাড়াভাবে কাজ সমাপ্তি দেখিয়ে সমুদয় বিল উত্তোলন করেছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, দ্বিতীয় পর্যায়ে অতি দরিদ্রদের জন্য পূর্বের ন্যায় জব কার্ড বিতরণ করে এলাকায় সাইনবোর্ড টাঙিয়ে ৯মে থেকে কাজ শুরু করার কথা থাকলেও ১২টি ইউনিয়নে প্রকল্প ঘুরে দেখা যায় কোন প্রকল্পের সঠিক নিবন্ধনকৃত শ্রমিক পাওয়া যায়নি।

৩১নং পূর্ব গামারিয় শাহালমের বাড়ি হতে আনসারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত প্রকল্পের ৫৫ জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও সেখানে মিরু নামে একজন শ্রমিককে কাজ করতে দেখা যায়। মিরু জানায়, রাস্তার প্রথম মাথায় দুই ট্রাক শেষ মাথায় দুই ট্রাক মাটি ফেলানো হয়েছে। আমি মাটি লেবেল করছি। ২৯ নং প্রকল্পের পাথর্শী ঘেতা শেখের বাড়ি হতে ড্র্রাবরি ব্রীজ পর্যন্ত রাস্তার মাঝখানে গর্ত ভরাটসহ রাস্তা মেরামত সেখানে গিয়ে দেখা যায় ৬০জন শ্রমিকের পরিবর্তে খট্টু শেখ নামে একজন শ্রমিককে মাটি লেবেল করছেন।

নোয়াপাড়া ইউনিয়নে ১৮নং প্রকল্প উলিয়া কবরস্থান হতে আজিত মেম্বারের বাড়ি হয়ে উলিয়া পাকা রাস্তা পর্যন্ত রাস্তা মেরামত সেখানে গিয়ে দেখা যায় ৫০ শ্রমিক কাজ করা কথা থাকলেও কোন শ্রমিক দেখা যায় নি। সভাপতি সোলায়মান শেখকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, মাটি পাওয়া যায় না, দুই এক দিনের মধ্যে কাজ শুরু করব।
অভিযোগ উঠেছে, গাইবান্ধা ইউনিয়নের ১ম পর্যায়ে ৪৮নং প্রকল্প নাপিতের চর বাজার মসজিদ হতে নয়া মালমারা রাস্তা পুণঃনির্মাণ কাজে কোন কাজই হয়নি। প্রকল্পের সভাপতি সংশ্লিষ্ট অফিসকে ম্যানেজ করে ভূয়া প্রকল্পের বিলটি তুলে নেন।

গাইবান্ধা ইউনিয়নে ২য় পর্যায়ে আটটি প্রকল্পের অধিকাংশ কোন কোন প্রকল্পের সভাপতিরা এখনো কাজ ধরেনি। ওই প্রকল্পের সভাপতিদের দেখা না পেয়ে মুঠোফোনে জিজ্ঞেস করলে নানা অজুহাত দেখিয়ে ফোন কেটে দেন। আবার কোন কোন সভাপতি কাজ দু-এক দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে বলে জানান। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৩০ কার্যদিবস পার হয়ে গেছে।

সরকারপাড়া মহাকান্দি পাকা রাস্তা হতে মরাকান্দি ছমির উদ্দিনের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুণঃনির্মাণ। ওই প্রকল্পে ৮১ জন শ্রমিকের কাজ করার কথা। সেখানে কোন রাস্তায় মাটি পাওয়া যায়নি। বটচর পাকা রাস্তা ফতেহ আলী বাড়ি হতে পোড়ারচর নয়াপাড়া রাস্তা পুণঃনির্মাণ কাজ সেখানে কোন শ্রমিক পাওয়া যায়নি। প্রায় ৫৬টি প্রকল্পের মধ্যে ৪২টি প্রকল্পে অনুসন্ধানে দেখা গেছে কোন প্রকল্পের শ্রমিক পাওয়া যায় নি। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটুকে মোবাইল ফোনে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সাংবাদিকদের ৫০%কাজ হয়েছে বলে জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ