Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

১৬ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বড় চ্যালেঞ্জ : ড. আবদুর রাজ্জাক

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশের ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও বিপণনে স্বতন্ত্র এসএমই প্রতিষ্ঠা ও কমিউনিটিভিত্তিক অর্থায়ন বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে এ নিয়ে কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বিসেফ ফাউন্ডেশন।
গতকাল সোমবার রাজধানীর ফার্মগেটে সার্ক কৃষি কেন্দ্রে এক সেমিনারে এই দাবি জানানো হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, নিরাপদ খাদ্য একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সারা জাতির কাছেই এটা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে ফরমালিন বিষয়ে। এছাড়াও অন্যান্য উপাদান নিয়েও মানুষ আতঙ্কিত। এখন অনেক বেশি ক্যন্সার এর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এর মূল কারণ হচ্ছে ভেজাল খাবার।
আবদুর রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অর্গানিক ফুড দিয়ে ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। তাই বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই আমাদের কৃষি উৎপাদনের অন্যান্য মাধ্যমের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তার প্রতি সব পক্ষকে গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি বলেন, এসব ক্ষেত্রে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে কঠোর হস্তে তা দমন করতে হবে। শুধু সচেতনতা দিয়ে তা হবে না। যারা নিরাপদ খাদ্য নিয়ে কাজ করে এবং খাদ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব বিভাগকে এর সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যেমে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আর এই সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করতে হবে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় হুইপ এবং কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নূরুল ইসলাম ওমর বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে আমরা সবাই চিন্তিত। এজন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। কৃষি উৎপাদনে ব্যাংকগুলোকে অর্থায়নে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের খাদ্য চাহিদা মেটাতে ব্যাংক ঋণে সুদের হার কমাতে হবে। জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য ও খাদ্যের গুণগতমান নিশ্চিত করতে পরীক্ষা করার যন্ত্রপাতি মানুষের হাতের নাগালের কাছে নিয়ে যেতে হবে। সেমিনারে বক্তারা বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে ‘নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩’ নামে সরকার একটি যুগান্তকারী আইন প্রণয়ন করেছে। তা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে দায়িত্বশীল হয়ে কাজ করতে হবে। জনস্বাস্থ্য এবং মোট জাতীয় উৎপাদনশীলতার আলোকে বিবেচনা করলে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও বিপণনে অর্থায়ন বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
বক্তাগণ আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশকে একটা বৃহত্তর কারাগার হিসেবে দেখতে চাই না। আইনের আওতায় কাউকে শাস্তি দেয়ার চাইতে বরং আইন অনুযায়ী বা আইনের আওতায় নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, আমদানি, প্রক্রিয়াকরণ, মজুদ, সরবরাহ, বিপণন ও বিক্রয় সংশ্লিষ্ট সমন্বয়ের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টদের আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
সেমিনারে প্রস্তাব করা হয়, দেশে কোন প্রকল্প করতে গেলে যেমন পরিবেশ ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হয় ঠিক তেমনি নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনেও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা উচিত। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও বিপণনে স্বতন্ত্রভাবে এসএমই বা আর্থিক সহায়তা কর্মসূচী গ্রহণ করা উচিত। এ ধরণের অর্থায়নের ক্ষেত্রে কমিউনিটিভিত্তিক প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দেয়া প্রয়োজন। সরকারের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি কর্মসূচীর সঙ্গে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও বিপণনকে সম্পৃক্ত করা হলে উভয় ক্ষেত্রই লাভবান হতে পারে।
বেসরকারী সংগঠন হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড, বিসেফ ফাউন্ডেশন, শিসউক এবং অরোরা ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিসেফ ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও কৃষি বিজ্ঞানী ড. জয়নুল আবেদীন। এতে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. মাহফুজুল হক, প্রফেসর এমএ মালেক, ড. এসএম বখতিয়ার, ড. কাজী মো. কামরুদ্দীন, রফিকুল ইসলাম, নূরে আলম সিদ্দিকি, ড. রোকেয়া খানম, ড. মনোয়ার হোসেন, সাকিউল মিল্লাত মোর্শেদ প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ