বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মাত্র এক ঘন্টার বৃষ্টিতেই আরো একবার প্লাবিত হয়ে বরিশাল মহানগরীর পয়ঃ নিস্কাশন ব্যাবস্থার দুরবস্থার জানান দিল বৃহস্পতিবার। মহানগরীর পাশ দিয়ে প্রবাহিত কির্তনখোলা নদীতে অপরিকল্পিত ড্রেজিং-এর পাশাপাশি নগরীর খাল ও ড্রেনগুলো যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ সহ সুষ্ঠু পরিচালন-এর অভাবে মাঝারী থেকে ভারি বর্ষণেই এ নগরী পানির তলায় চলে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১.৫০ থেকে ৩টা পর্যন্ত এ নগরীতে ৩৬.৫ মিলি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এত স্বল্প সময়ে এ ধরনে ভারি বর্ষন চলতি মৌসুমে এ প্রথম। আর এ বৃষ্টিপাতে ডুবেছে মহানগরীর বেশীরভাগ রাস্তাঘাট। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে দুপুর থেকে এ বর্ষণে রাস্তাঘাটে পানি জমে নগরবাসী চরমভাবে নাকাল হয়েছেন। আর এধরনের দূর্ভোগ বরিশাল মহানগরবাসীকে সাম্প্রতিক বছরগুলেতে বারবারই প্রত্যক্ষ্য করতে হচ্ছে।
জলবায়ু পরিবর্তনে সারা দেশের সাথে দক্ষিণাঞ্চলেও তাপমাত্রার পারদ যেমনি স্বাভাবিকের ওপর উঠে যাচ্ছে,তেমনি বৃষ্টিপাতেও তারতম্য ঘটছে। গত কয়েকটি মাসেই বরিশাল অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমান ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে কম। এমনকি এপ্রিল মাসে ১৩২ মিলিমিটরের স্থলে মাত্র ১৯ মিলি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। যা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ৮৫.৬% কম। ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’তে ভর করে মে মাসের প্রথম পক্ষে আকষ্মিক ভাবে কয়েকদিন প্রবল বর্ষণ হলেও মাসের মোট বৃষ্টিপাতের পরিমান ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৬% কম।
কিন্তু মাঝারী থেকে একটু ভারি বৃষ্টি হলেই প্রায় দেড়শ কিলোমিটার দীর্ঘ খাল ও কাঁচাপাকা ড্রেনগুলো এ নগরীর পানি ধারন করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। ফলে ড্রেনের পানি উপচে রাস্তাঘাট সহ অনেক জনবসতিকেও সয়লাব করে দিচ্ছে। চরম দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে নগরীর বিশাল জনগোষ্ঠীকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারী নদী গবেষনা প্রতিষ্ঠানের একাধীক প্রকৌশলী জানিয়েছেন, বরিশাল মহানগরীর জলাবদ্ধতা থেকে উত্তরনের পথ এখনো পুরোপরি রুদ্ধ হয়ে যায়নি। এ জন্য নগরীর বড় খালগুলোকে অবিলম্বে সংস্কার সহ সব ড্রেন যথাযথ পরিচ্ছন্ন ও রক্ষনক্ষেনে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদানের তাগিদ দিয়েছেন তারা। পাশাপাশি বরিশাল বন্দরের নাব্যতা উন্নয়নের নামে মহানগরী সংলগ্ন কির্তনখেলা নদীর তলদেশ ভরাটের মত যে আত্মঘাতি কর্মকান্ড চলছে তা বন্ধ করার কোন বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞগন।
অথচ জরুরী এ জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে নগর পরিষদের স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী কর্ম পরিকল্পনা প্রনয়ন ও বাস্তবায়নের যেমনি কোন উদ্যোগ নেই, তেমনি নদী খননের নামে বিআইডবিøউটিএ এ মহানগরীর যে ক্ষতি করছে, তা নিয়েও কোন প্রতিকারমূলক উদ্যোগ গ্রহন করছে না। এমনকি নগরীর খাল সমুহ যথাযথ সংরক্ষনে কোন গবেষনা প্রতিষ্ঠানের সাথেও সমন্বয় নেই নগর ভবনের।
বিষয়টি নিয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়রে সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বহী কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে নগর ভবনের দায়িত্বশীলদের সাথে কথা বলে পরবর্তি পদক্ষেপ গ্রহনের উদ্যোগ গ্রহনের কথা জানিয়েছেন। সিটি করপোরেশনের পয়ঃ নিস্কাশন ও পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা প্রনি সম্পদ চিকিৎসক ডাঃ রবিউল আলম নগরীর ড্রেনসমুহ নিয়মিত পরিস্কার করা হচ্ছে বলে দাবী করে প্রয়োজনে যা কিছু সম্ভব তা করা হবে বলেও জানান। তবে কির্তনখোলা নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে নগরীর খাল ও ড্রেনসমুহের পানি নিস্কাশনে বাঁধার সৃষ্টির বিষয়টি সাম্প্রতিক বলে দাবী করে এ লক্ষ্যে নগর ভবন থেকে বিআইডবিøউটিএ’র সাথে কথা বলা সহ পানি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের ভিত্তিতে কর্মপরিকল্পনা প্রনয়নের সাথে তিনি একমত পোষন করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।