পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
৩১ মে থেকে, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) দেশগুলির সফর শুরু করেন, যেখানে তিনি অন্যান্যদের মধ্যে বাহরাইন, সউদী আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেন। ল্যাভরভের এই সফরগুলির মূল উদ্দেশ্য হল ভ‚-রাজনৈতিক আধিপত্যের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতার মধ্যে রাশিয়া এবং জিসিসি দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করা।
মধ্যপ্রাচ্য, বিশেষ করে উপসাগরীয় অঞ্চল বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার জন্য অত্যাবশ্যক এবং সেই শৃঙ্খলার যে কোনো ভবিষ্যৎ পুনর্র্নিমাণের জন্য সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। মস্কো যদি বৈশ্বিক অর্থনীতির বিপরীতে আরব অর্থনীতির ভ‚মিকা পুনঃসংজ্ঞায়িত করতে সফল হয়, তবে এটি সম্ভবত একটি বহুমুখী অর্থনৈতিক বিশ্ব গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে সফল হবে। বিশ্বের ভ‚-রাজনৈতিক পুনর্বিন্যাস কেবল যুদ্ধের মাধ্যমে বা বিভিন্ন অঞ্চলে পশ্চিমের রাজনৈতিক প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ করে অর্জন করা যায় না। অর্থনৈতিক উপাদান সম্ভবত রাশিয়া এবং তার পশ্চিমা বিরোধীদের মধ্যে চলমান যুদ্ধের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে সকল যুদ্ধের মূলেই থাকে অর্থনৈতিক অর্জনের লক্ষ্য। যে কারণে পানামা ও ইরাক আক্রমণ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
যদিও ধনী দেশগুলি সফলভাবে তাদের নিজস্ব শিল্পের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আলোচনা করেছে, গেøাবাল সাউথের বেশিরভাগ অংশের কাছে পশ্চিমের নিয়ম মেনে চলা ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মুক্ত বাণিজ্য এবং উন্মুক্ত বাজারের কথা বলেছিল যখন এটি মূল শিল্প হিসাবে বিবেচিত হয় তার উপর একটি সুরক্ষাবাদী এজেন্ডা বজায় রাখে। মার্কিন/পশ্চিমা আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য দরিদ্র দেশগুলির সমালোচনা করা সহজ। প্রকৃতপক্ষে, তারা চেষ্টা করেছিল, এবং ফলাফল ছিল অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, শাসন পরিবর্তন এবং যুদ্ধ।
চীনের মতো বৃহৎ অর্থনীতিকে বিশ্বায়ন থেকে উপকৃত হওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছিল যতক্ষণ না তাদের ব্যাপক প্রবৃদ্ধি বৈশ্বিক অর্থনীতির, অর্থাৎ পশ্চিমের স্বার্থে কাজ করে। যাইহোক, যখন চীনের রাজনৈতিক এবং ভ‚-রাজনৈতিক ক্ষমতা তার অর্থনৈতিক প্রভাবের সাথে মিলতে শুরু করে তখন পরিস্থিতি পরিবর্তন হতে শুরু করে। প্রাক্তন মার্কিন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনেক বক্তৃতা উৎসর্গ করেছিলেন এবং অবশেষে তথাকথিত ‘চীনের হুমকি’ এর বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। জো বাইডেনের বর্তমান ডেমোক্র্যাট প্রশাসন খুব কমই আলাদা। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের মোকাবিলায় ব্যস্ত থাকলেও, ওয়াশিংটন তার চীন বিরোধী বক্তব্যে নিবেদিত রয়েছে।
যদিও রাশিয়া এবং তার মিত্ররা এখন বেশিরভাগই ইউক্রেনে বিজয়ের দাবি করার দিকে মনোনিবেশ করেছে, তাদের চ‚ড়ান্ত লক্ষ্য হল একটি ভিন্ন অর্থনৈতিক ভারসাম্যের বীজ বপন করা, এই আশা নিয়ে যে, এটি শেষ পর্যন্ত আজকের বিশ্বায়নের পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করবে, তাই পশ্চিমের অর্থনৈতিক আধিপত্য ক্ষুণœ করবে। রাশিয়া স্পষ্টভাবে একটি নতুন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় বিনিয়োগ করেছে, কিন্তু প্রক্রিয়ায় নিজেকে বিচ্ছিন্ন না করেই। অন্যদিকে, পশ্চিম ছিঁড়ে গেছে। এটি রাশিয়ার উপর অতীতের মতো লোহার পর্দা ফেলে দিতে চায়, কিন্তু প্রক্রিয়ায় তার নিজস্ব অর্থনীতিকে আঘাত না করে। এই সমীকরণটি কেবল অমীমাংসিত, অন্তত আগামী কয়েক বছরের জন্য।
ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ফোরামে এক বক্তৃতায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বলেছেন যে, রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা হচ্ছে ‘আধুনিক বিশ্বে অসম্ভব, একেবারেই অবাস্তব।’ তার কথাগুলো পশ্চিমের উদ্দেশ্য এবং লাভরভের ব্যস্ত সফরসূচী সম্পর্কে রাশিয়ার পূর্ণ সচেতনতাকে জোরদার করে, বিশেষ করে গেøাবাল সাউথ, এবং এটি একটি বিকল্প বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে অ্যানিমেট করার মস্কোর নিজস্ব উপায় যেখানে রাশিয়া বিচ্ছিন্ন নয়।
এ বিষয়ে রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে চীন, তুরস্ক ও ভেনেজুয়েলার মতো দেশগুলো। রাশিয়া এবং তুরস্ক বুধবার কৃষ্ণ সাগরে একটি নিরাপদ সামুদ্রিক করিডোর তৈরির জন্য সমর্থন জানিয়েছে যাতে ইউক্রেন একটি ক্রমবর্ধমান বিশ্ব খাদ্য সঙ্কটের মধ্যে বিশ্ব বাজারে শস্য রপ্তানি করতে পারে। মঙ্গলবার তুরস্ক সফরে যান রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ। একইদিন তুরস্ক সফরে গেছেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। মূলত ইউক্রেন ইস্যুতে আলোচনার জন্য তুরস্ক সফরে গেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার বৈঠকের কোনও কর্মসূচি রয়েছে কিনা সেটি জানা যায়নি।
এমন সময়ে মাদুরো এই সফরে গেলেন যখন লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের অন্য দেশগুলোর নেতারা লস এঞ্জেলেসে একটি শীর্ষ সম্মেলনের জন্য জড়ো হয়েছেন। তবে ওই সম্মেলনে তাকে আমন্ত্রণ জানায়নি যুক্তরাষ্ট্র। তুরস্ককে নিকোলাস মাদুরো সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সমস্ত প্রচেষ্টার ফলাফল শুধুমাত্র একটি ভ‚-রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্বকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করবে না, তবে আগামী প্রজন্মের জন্য বিশ্বায়নের ধারণাটিকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করবে।
‘মস্কোকে বাদ দিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বেআইনি’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনোভ বুধবার বলেছেন যে, রুশ পক্ষের অংশগ্রহণ ছাড়া আর্কটিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তগুলো হবে বেআইনি এবং ঐকমত্যের নীতি লঙ্ঘন করবে।
টেলিগ্রাম চ্যানেলে দূতাবাসের প্রেস সার্ভিস আন্তোনভকে উদ্ধৃত করে বলেছে যে, মস্কোর অংশগ্রহণ ছাড়াই এর কার্যক্রম সীমিত পুনরুদ্ধারের বিষয়ে আর্কটিক কাউন্সিলের পশ্চিমা অংশগ্রহণকারীদের যৌথ বিবৃতিতে মন্তব্য চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের পদক্ষেপ রাশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট হিসাবে এবং এই অঞ্চলে আরো টেকসই উন্নয়নে আগ্রহী সমগ্র আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় উভয়কেই শঙ্কিত না করে পারে না’। তিনি ব্যাখ্যা করেন, ‘আমরা ঘোষণা করি যে, দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার এ অনন্য রূপটি রাজনৈতিকভাবে রয়ে গেছে। আমাদের দেশগুলো ছাড়া আর্কটিক কাউন্সিলের পক্ষ থেকে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো বেআইনি হবে এবং এর নির্দেশিকা নথিতে অন্তর্ভুক্ত ঐকমত্যের নীতি লঙ্ঘন করবে’।
ক‚টনীতিক যোগ করেছেন, ‘রাশিয়া ছাড়া আর্কটিক সমস্যার দক্ষতার সাথে সমাধান করা অসম্ভব’।
এর আগে বুধবার ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, কানাডা, নরওয়ে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন রাশিয়ার অংশগ্রহণ ছাড়াই আর্কটিক কাউন্সিলের কাজ পুনরায় শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একটি সংশ্লিষ্ট বিবৃতি তাদের বহিরাগত পরিষেবা ওয়েবসাইটে পোস্ট করা হয়েছে. ৩ মার্চ রাশিয়া ব্যতীত আর্কটিক কাউন্সিলের সমস্ত দেশ একটি লিখিত বিবৃতি জারি করে, যেখানে তারা রাশিয়ার সভাপতিত্বে এবং ইউক্রেনের চারপাশের পরিস্থিতির কারণে তার ভুখন্ডের অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ নিতে অস্বীকার করেছিল।
আর্কটিক কাউন্সিল হল আর্কটিক দেশগুলোর একটি আন্তঃসরকারি সংস্থা, যার মধ্যে রয়েছে ডেনমার্ক (গ্রিনল্যান্ড এবং ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জসহ), আইসল্যান্ড, কানাডা, নরওয়ে, রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন। ২০২১ সালে যখন কাউন্সিল তার ২৫তম বার্ষিকী উদযাপন করে, তখন দুই বছরের প্রেসিডেন্টশিপ আইসল্যান্ড থেকে রাশিয়ায় চলে যায়। সূত্র : তাস, মিডল ইস্ট মনিটর, ডেইলি সাবাহ, ফ্রান্স ২৪।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।