সিলেটের ওসমানীনগরের তাজপুর ডিগ্রি কলেজের দুই শিক্ষার্থী দ্বন্ধের জেরে উপজেলার ছাত্রলীগের বিবেদমান দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করা হয়েছে। এ সময় প্রায় দেড় ঘন্টা সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। সংঘর্র্ষ চলাকালে কয়েকটি যানবাহনও ভাংচুর করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার তাজপুর বাজারে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে সেনাবাহীনীর কয়েকটি গাড়ি আটকা পরে। এ সময় সেনাবাহীনীর সদস্যরা পুলিশের পাশাপাশি লাটিচার্জ করলে সংঘর্ষকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করেছে।

যে কোন সময় আবারও দুই গ্রুপ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে রণক্ষেত্রে পরিনত হওয়ার আশংঙ্খা থাকায় ইউএনও এর নীর্বাহী আদেশে আজ শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত তাজপুর বাজার এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ সকল কার্যক্রম বন্ধ ষোষণা করা হয়েছে। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলাকালে উপজেলা ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের একাধিক নেতা-কমীরা দু-ভাগে বিভক্ত হয়ে হামলা-পাল্টা হামলা চালায়। তবে বিষয়টি অস্বিকার করে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা জানিয়েছেন কলেজের দুই শিক্ষার্থীর দ্বন্দকে ঘিরে বাজার এলাকায় সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়ে পরবর্তীতে এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। প্রকৃত সংঘর্ষকারীদের এখনও চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে না।

পুলিম ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তাজপুর ডিগ্রি কলেজের অজ্ঞাতনামা দুই শিক্ষার্থীর দ্বন্ধের জের ধরে ছাত্রলীগদের দুই গ্রুপের মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুুর ১২টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে দুপুর ২টার দিকে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে তাজপুর বাজারে সংঘর্ষে জরিয়ে পরে। এক পর্যায়ে সংঘর্ষটি এলাকাভিত্তিক ছড়িয়ে পরলে বাজার এলাকার ব্যাবসায়ীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পরে। খবর পেয়ে ওসমানীনগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে লাটিচার্জের মাধ্যমে সংঘর্ষকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে বিকাল ৪ টার দিকে আরেক দফায় সংঘর্ষে জরিয়ে হালা পাল্টা চালায় উভয় দুই গ্রুপ। এসময় দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়। সংর্ঘর্ষ চলাকালে বাংলাদেশ সেনাবাহীনীর সিলেট গামী কয়েকটি গাড়ি আটকা পরে। আটকা পড়া সেনাবাহীনীর সদস্যরা গাড়ি থেকে নেমে সংঘর্ষকারীদের ছত্রভঙ্গ করেন। ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয় পক্ষের প্রায় ২০জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছেও।

আহতরা হচ্ছেন, পুলিশের এসআই শাহ আলম, কাদিপুর গ্রামের বাসিন্দা রাজু (২৩), তাজপুর বাজারের বাসিন্দা সাম্য (২৩), খুরশেদ (৩১), বেলাল (৩১), আল আমিন (২১)

তাৎক্ষনিক অন্যান্য আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়যনি। সংঘর্ষ চলাকালে সিলেট-ঢাকা মহাসড়েকের দুই পাশে শতাধিক যানবাহনসহ কয়েকেটি রোগীবহনকারী এম্বুলেন্সও আটকা পরে। সেনাবাহীনীর সহযোগীতায় ঝুকি নিয়ে রোগীবহকারী এ্যাম্বুলেন্স তাজপুর বাজার পাড়ি দেয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এলাকায় চরম উত্তেজনা ও থমথমে পরিবেশ বিরাজ করে। সংঘর্ষ এড়াতে বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। তাজপুর বাজার মসজিদের মাইকে ঘোষণা করা হয় এ ঘটনার পর থেকে শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত তাজপুর বাজারের সকল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলিমা রায়হানা।

ওসমানীনগর থানার ওর্সি এস এস মইন উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পাশাপাশি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বাজার এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। এলাকা শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারে থানা পুলিশ তৎপর রয়েছে।