Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নানামুখী সীমাবদ্ধতায় চিকিৎসা ব্যাহত

বরিশাল শের এ বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল

বরিশাল ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০২২, ১২:১২ এএম

দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান শের এ বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালটিতে ভর্তিকৃত রোগীদের রোগ নির্ণয়ে নানামুখী সীমাবদ্ধতায় চিকিৎসা কার্যক্রম যথেষ্ঠ ব্যাহত হলেও তা থেকে উত্তরণে তেমন কোনো উদোগ নেই। ইলেক্ট্রো মেডিক্যাল ইকুপমেন্ট ও জনবল সংকটও এ হাসপাতালের সুষ্ঠু কার্যক্রম পরিচালন-এ সব চেয়ে বড় অন্তরায় হয়ে আছে। এখনো ১ হাজার শয্যার হাসপাতলটি চলছে ৫০০ শয্যার জনবল দিয়ে। কিন্তু দৈনিক গড়ে ১৮০০ রোগী চিকিৎসাধীন থাকলেও ৫০০ শয্যার জন্য অনুমোদিত জনবলেরও প্রায় ৩৫ ভাগ এখনো শূন্য।

চিকিৎসক থেকে শুরু করে রেডিওলজিস্ট, রেডিওথেরাপিস্ট ও ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট-এর অনেক পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকায় হাসপাতালটিতে ভর্তিকৃত রোগীদের রোগ নির্ণয়ে চিকিৎসকদেরও দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বিশেষকরে গরিব ও অসহায় রোগীরা বাইরে থেকে ক্লিনিক্যাল পরিক্ষাসহ এক্সরে করাতে না পাড়লে দিনের দিন হাসপাতালের বেড বা মেঝেতে অবস্থান করতে গিয়ে আরো কাতর হয়ে পড়ছেন।

বরিশাল শের এ বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালটির প্যাথলজি বিভাগে ৪ জন ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন দু’জন। ১০ জন টেকনিশিয়ানের ৪ জনই রাজশাহী, ঢাকা ও বরিশালের অন্য হাসপাতালে পেশনে নিযুক্ত থাকায় বিশাল এ হাসপাতালটিতে রোগ নির্ণয় কার্যক্রমে যথেষ্ঠ বিপত্তি সৃষ্টি হচ্ছে। এ হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০০ রোগীর রক্তসহ বিভিন্ন নমুনা পরিক্ষার জন্য গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু ১ জন সিনিয়র ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট ও দুজন ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট-এর পক্ষে সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত কাজ করেও এ বিপুল সংখ্যক নমুনা পরিক্ষা অসম্ভব হয়ে পড়ছে।

হাসপাতালটির রেডিও অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগে ১৫টি এক্সরে মেশিনের ১৩টি বিকল। সচল দুটি এক্সরে মেশিনের সাহায্যে হাসপাতালের ইনডোর ও আউট ডোরের চাহিদার ১০ভাগ রোগীরও এক্সরে করা সম্ভব হচ্ছেনা। ফলে সিংহভাগ রোগীকেই হাসপাতালের বাইরে এক্সরে করাতে হচ্ছে। ৪টি পর্টেবল এক্সরে মেশিনের দুটি শিশু বিভাগ ও হৃদরোগ বিভাগে পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। এখানেও রেডিওলজিস্ট থেকে শুরু করে অন্যসব পদেও জনবল সংকট ব্যাপক। হাসপাতালটির রেডিওলজি, জেনারেল রেডিওলজি ও নিউরো রেডিওলজি বিভাগে অধ্যাপকের পদও শূন্য। দুজন সহযোগী অধ্যাপকের মধ্যে একজন দায়িত্বে থাকলেও ৩ জন সহকারী অধ্যাপকের বিপরীতে কর্মরত একজন।

এ হাসপাতালে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র ‘কোবাল্ট-৬০’ মেশিনটিও গত প্রায় ৫ বছর ধরে বিকল। ফলে ক্যান্সারের মতো জটিল রোগীদের রেডিয়েশন দেয়ার জন্য অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে ঢাকা বা অন্যত্র ছুটতে হচ্ছে। এ হাসপাতালে স্থাপিত এমআরআই এবং সিটি স্ক্যান মেশিন দুটিও বিকল দীর্ঘদিন ধরে।

এমনকি দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ এ হাসপাতালে মাত্র ৮টি আল্ট্রাসোনো মেশিন থাকলেও তার ৭টিই বিকল। অথচ মেডিসিন, গ্যাস্ট্রোলিভার, গ্যাস্ট্রো এ্যান্টোরলজি, ইউরোলজিসহ পরিপাকতন্ত্রেরও বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ে আল্ট্রাসোনোর কোন বিকল্প নেই। অর্থোপেডিক বিভাগের ‘সিআর মেশিন’টিও বিকল হয়ে আছে। দীর্ঘদিনের পুরনো মেশিনটি কয়েক দফায় মেরামত করা হলেও এখন তা আর কার্যকর নেই।

এসব ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল আলম জানান, এসব মেশিন মেরামতে কয়েকবার ঢাকা থেকে টিম আসলেও তেমন কোন কাজ হয়নি। এখনো প্রকৌশলীরা কাজ করছেন। চেষ্টা চলছে বিকল ইলেক্ট্রো মেডিক্যাল ইকুইপন্টেগুলো সচল করার। আমরা বারবারই বিষয়টি নিয়ে ঢাকায় লিখছি। এখনো ইতিবাচক ফল না হলেও নতুন মেশিন সংগ্রহ হলেই বরিশালে আসবে বলেও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ